‘বন্যায় দেখেছি দেশের মানুষের ঐক্যের শক্তি’

‘ফেনীর বন্যার্ত মানুষের পাশে দেশের মানুষ যেভাবে পাশে দাঁড়িয়েছিল তাতে দেখেছি দেশের মানুষের ঐক্যের শক্তি কতখানি!’
বন্যা কবলিত এলাকায় পলাশ ও তার দলের সদস্যরা | ছবি: সংগৃহীত

পকেটে মাত্র এক হাজার ২০০ টাকা সম্বল। মাথায় ঘুরছে সাহায্য প্রত্যাশী বন্যার্ত অসহায় মানুষের হাহাকার। যেভাবেই হোক তাকে বন্যাদুর্গতদের পাশে দাঁড়াতেই হবে। চলে গেলেন ফেনীর বন্যাদুর্গত অঞ্চলে।

শুধু ফেনীর বন্যাপীড়িত জনপদেই সীমাবদ্ধ ছিলেন না, মানুষের পাশে দাঁড়াতে ছুটে গিয়েছিলেন খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটির বন্যাদুর্গত এলাকাতেও।  একইসঙ্গে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বান্দরবানের মানুষের জন্য অর্থ ও ত্রাণ সংগ্রহের কাজও করেছেন।

বলছি বন্যায় নিজের সামর্থ্যের সবটুকু দিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানো পলাশ দে'র কথা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে স্নাতকে পড়ছেন পলাশ দে। বন্যাদুর্গত জনপদে যিনি হয়ে উঠেছিলেন অসহায় মানুষের আশার আলো।

ত্রাণ নিয়ে দুর্গত এলাকায় ছুটছেন পলাশ | ছবি: সংগৃহীত

অসামান্য সেই প্রচেষ্টার গল্প শুনি পলাশ দে'র মুখ থেকেই। '২১ আগস্ট বিকেল। খবর পেলাম ফেনীতে বন্যার পানি বাড়ছে। আমাদের কয়েকজন ফেনীর বন্ধুর ছিল, তাদের মাধ্যমে খবর নেওয়া শুরু করি। সেদিন সন্ধ্যায় আজাদী পত্রিকার অফিসে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকটি ক্লাবের মিটিং চলছিল। কিন্তু আমি কিছুতেই মিটিংয়ে মনোযোগ দিতে পারছিলাম না।'

'যেহেতু আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের লিও ক্লাবের সদস্য ছিলাম তাই ক্লাবের প্রেসিডেন্টকে বললাম, এই পরিস্থিতিতে আমাদের কিছু করা উচিৎ। রাতে বাসায় ফিরে আমি চিন্তা করলাম কীভাবে আমি এই মানুষদের পাশে দাঁড়াতে পারি। হঠাৎ মনে হলো, কেন আমি নিজে কিছু না করার চেষ্টা করে বাকিদের ওপর নির্ভর করছি। আমার বিকাশে তখন ১২০০ টাকা ছিল। আমি দেখলাম কোনোভাবে যদি আমি একবার ফেনীতে পৌঁছাতে পারি, তাহলে আমার দলের অভাব হবে না। বলে রাখি, আমি আগে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে বিভিন্ন জায়গায় কাজ করেছি।'

রাতে পলাশ বন্যাদুর্গত মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য ফেনী যাচ্ছেন বলে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। পলাশ আরও লিখেন, 'কেউ যদি বন্যার্তদের সহযোগিতায় আমার মাধ্যমে অর্থ সাহায্য করতে চান তাহলে আমার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও বিকাশে সাহায্য পাঠাতে পারেন।'

পলাশ দে বলেন, 'কিছুক্ষণের মধ্যেই আমার পরিচিতজনেরা টাকা পাঠানো শুরু করেন। এক লাখ টাকার বেশি অর্থ আমাকে পাঠিয়েছিলেন তারা। ওই পোস্ট দেখে আমার এক বান্ধবী ফোন দিয়ে বলল, "আমাকে কেউ নিচ্ছে না। তোকে আমাকে নিতে হবে।" সে সাঁতার জানত এবং রেসকিউ করার পূর্ব অভিজ্ঞতা ছিল। তাকে সঙ্গে নিলাম। পরদিন সকালে আরও দুজন বন্ধু আমাদের সঙ্গী হয়। কয়েক ঘণ্টা আগেও যেখানে আমি একা ছিলাম, সেখান থেকে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানেই আমরা চারজন হয়ে গেলাম।'

পথে কেবলই পানি

পলাশ তার সঙ্গীদের নিয়ে যখন চট্টগ্রাম থেকে রওনা দিয়ে ফেনীর লেমুয়া পর্যন্ত পৌঁছান, তখনই দেখতে পান গাড়ি আর এগোচ্ছে না। যানজটে নাকাল অবস্থা। তারা দেখলেন এ অবস্থায় বাসে বসে থাকলে তাদের পক্ষে সারাদিনেও ফেনী পৌঁছানো সম্ভব নয়।

তখন তারা হাঁটতে শুরু করেন। সেই অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিতে গিয়ে পলাশ বলেন, 'সিলোনিয়ায় এসে দেখি মহাসড়কের পাশে গলা সমান পানি। আমরা চারটা লাইফ জ্যাকেট সঙ্গে করে এনেছিলাম। সিদ্ধান্ত নিলাম দুজন চারটি লাইফ জ্যাকেট নিয়ে উদ্ধার করতে যাব। আর বাকি দুজন রাস্তায় ডিভাইডার কেটে অপরপ্রান্তে পানি যাওয়ার সুযোগ করে দেবো।'

উদ্ধার অভিযানের কথা বলতে গিয়ে পলাশ বলেন,  'আমরা ঠিক করেছিলাম দুজন করে উদ্ধারের জন্য যাব। কোনো একটা বাড়িতে যদি তিনজন সদস্য থাকে তাহলে একজন তিন সদস্যকে লাইফ জ্যাকেট পরিয়ে নিয়ে আসবে। অন্যজন আবার আমাদের মধ্যে আরেকজনের জন্য ওই বাড়িতে অপেক্ষা করবে। ভাগ্যক্রমে তখন আমরা একটা ভেলাও পেয়ে যাই। এদিকে রাস্তায় পানি থাকায় আমরা ডিভাইডার কেটে দেই, যেন পানি অন্যপাশে চলে যেতে পারে।'

'তখন চট্টগ্রাম থেকে কয়েকটা নৌকা চলে আসায় আমরা সন্ধ্যা পর্যন্ত শতাধিক মানুষকে নৌকা দিয়ে রেসকিউ করে সিলোনিয়া মাদ্রাসায় উঠিয়ে দেই। এদিকে পানি বাড়ছিল। বিকেলে যেখানে হাঁটু পানি ছিল, সন্ধ্যার পর সেখানে ১২-১৪ ফুট পানি উঠে গিয়েছিল।'

এক পর্যায়ে টিমের দুজনকে হারিয়ে ফেলেন পলাশ। সিদ্ধান্ত নেন মহিপাল ফিরে যাওয়ার।

ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মাদ্রাসাতেই সবার অবস্থান

'মহিপাল যাওয়ার জন্য মাদ্রাসা থেকে বের হতেই দেখি পানির প্রচণ্ড স্রোত। ঝুঁকির কথা চিন্তা করে সে রাতে আমরা মাদ্রাসাতেই থাকি। মাদ্রাসায় সব ধর্মের মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল। কে মুসলিম, আর কে হিন্দু তা দেখা হয়নি। আরেকটি জিনিস ভালো লেগেছিল। মাদ্রাসায় হাফপ্যান্ট পরে কেউ ঢুকতে পারে না। বন্যা পরিস্থিতির কারণে হাফপ্যান্ট পরেই আমাকে সারা রাত থাকতে হয়। মাদ্রাসার কেউই কোনো কটু মন্তব্য করেননি। যদিও ভেজা কাপড়ে থাকায় আমি সারারাত ঘুমাতে পারিনি।'

পলাশ বলেন, 'ভোর পাঁচটার দিকে যখন নামাজের জন্য ডাকা হচ্ছিল তখন আমরা বের হওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। মাদ্রাসার এক হুজুর আমাদের বড় মোটা দড়ি দিলেন। সেই দড়ি আমাদের পরে কাজে লেগেছিল।'

দলের খোঁজে

'মাদ্রাসা থেকে মহিপালে এসে নাস্তা করছিলাম। হঠাৎ একটি দলের দেখা পেলাম, যাদের সঙ্গে গত শীতেই আমি লালমনিরহাটে কম্বল বিতরণ করেছিলাম। আমি তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যাই। মহিপালের চৌধুরী বাড়িতে আমাদের থাকার ব্যবস্থা হয়।'

পরদিন থেকে উদ্ধার অভিযান শুরু করেন তারা। পলাশ বলেন, 'প্রথম দুদিন আমরা শুধু উদ্ধার অভিযান চালাই। তৃতীয় দিন সকালে আমরা ফেনী সদর ও ছাগলনাইয়ার বেশ কয়েকটি গ্রামে ত্রাণ বিতরণ করি। এদিন বিকেলে দাগনভূঞার বেশ কয়েকটি গ্রামে আমরা ত্রাণ বিতরণ করি। ভোর থেকে কাজ শুরু করেছিলাম আমরা। কাজ শেষ করে যখন আমরা মহিপালে ফিরে আসি তখন রাত ১২টা বেজে গেছে।'

'পরদিন সকালেও আমরা দাগনভূঞার বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ বিতরণ করি। ফেনীতে যে জিনিসটি আমাকে সবচেয়ে বেশি মুগ্ধ করেছিল, তা হলো মানুষের সততা। কারণ যারা ত্রাণ পেয়েছিলেন তাদের আমরা ত্রাণ দিতে গেলেও, তারা স্পষ্টই বললেন, "আমরা ত্রাণ পেয়েছি। আমাকে শুধু এক বোতল পানি দেন"।'

কয়েকজন আমাকে বললেন, 'খাবারগুলো যারা পায়নি, তাদের দেবেন।' একটি মুসলিম পরিবারে ত্রাণ দিতে গিয়েছিলাম। তারা বললেন, 'আমরা সবাই নিজেদের মতো চালিয়ে নিতে পারব। কিন্তু ভেতরের দিকে কিছু হিন্দু পরিবার রয়েছে। ভেতরের দিকে হওয়ায় এখনো ত্রাণ পায়নি। যদি তাদের দেন তাহলে খুব উপকার হবে।'

ত্রাণ বিতরণে নানা বিপত্তিতেও পড়তে হয়েছিল পলাশদের। পলাশ বলেন,  'দাগনভূঞাতে ত্রাণ বিতরণ করতে গিয়ে আমরা বোট নিয়ে সমস্যায় পড়েছিলাম। কারণ কোথাও হাঁটু পানি, আবার কোথাও কোমর বা বুকসমান পানি। যেখানে হাঁটু পানি ছিল সেখানে বোট চলত না, তাই টেনে নিতে হতো। দাগনভূঞার সাপুয়ায় নদী দিয়ে স্পিডবোটে করে আমরা যাচ্ছিলাম। নদীর একটু উপরে বিদ্যুতের তার টানা ছিল। নদীতে স্পিডবোটও দ্রুত যাচ্ছিল। এদিকে আমাদের সময় কম। কারণ ত্রাণ দেওয়া শেষে আমাদের একটা বাচ্চাকে উদ্ধার করতে হবে। হঠাৎ আমাদের এক স্বেচ্ছাসেবীর হাতে তার লেগে হাত কেটে গেল। ভাগ্যিস আমরা শুয়ে ছিলাম। নয়তো আমাদের গলা বরাবর যেত তারটি।'

পলাশ আরও বলেন, 'বিদ্যুৎ না থাকায় এবং মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকার কারণে আমরা ফেনীতে টাকা উত্তোলনও করতে পারছিলাম না। মহিপালে তেমন পানি না ওঠায় বিদ্যুৎ ছিল। সেখানে আমরা নেটওয়ার্ক পেয়েছিলাম। যারা ত্রাণ নিয়ে ঢাকা থেকে আসতেন, তাদের বিকাশ করে দিতাম। তারা আমাকে নগদ টাকা দিয়ে দিতেন।'

পাতাকে উদ্ধারের পর | ছবি: সংগৃহীত

পাঁচ দিন পর মায়ের সান্নিধ্য পেল পাতা

নানাবাড়ি বেড়াতে গিয়ে পাঁচ দিন বন্যার পানিতে আটকে ছিল ছয় বছর বয়সী শিশু পাতা। পাঁচদিন পর শিশুটিকে মায়ের বুকে তুলে দিয়েছিলেন পলাশ ও তার দল। 

পলাশ বলেন, 'বন্যা শুরু হওয়ার আগে পাতা দাগনভূঞার আমুভুঁইয়ার হাটের পাশে নানার বাড়ি বেড়াতে গিয়ে আটকা পড়ে। টানা পাঁচদিন মেয়েটি তার পরিবার থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন থাকায় তার মা দুশ্চিন্তায় নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে দিয়ে সারাদিন শুধু কান্নাকাটিই করছিলেন। পাতাকে উদ্ধার করতে গিয়ে আমরা পথও হারিয়ে ফেলেছিলাম।'

'পথ হারিয়ে সিদ্ধান্ত নিলাম, রাতটা কোনোক্রমে বিলের মধ্যে কাটিয়ে পরদিন সকালে পাতাকে তার মায়ের হাতে তুলে দেবো। শেষ পর্যন্ত আমরা পথ খুঁজে পাই। রাত ১১টার দিকে আমরা যখন পাতাকে তার মায়ের হাতে তুলে দেই, তখন মেয়েকে পেয়ে বুকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে ফেলেছিলেন পাতার মা, যা ছিল আমাদের বড় প্রাপ্তি।'

খাগড়াছড়িতে ত্রাণ নিতে মানুষের সারি | ছবি: সংগৃহীত

পার্বত্য জনপদের বন্যার্ত মানুষের পাশে

ফেনীর বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হতেই খাগড়াছড়ির বন্যা পরিস্থিতির অবনতির বিষয়ে জানতে পারেন পলাশ দে ও তার দল। সিদ্ধান্ত নেন খাগড়াছড়ির বন্যার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াবেন।

পলাশ বলেন, 'আমরা খাগড়াছড়ির বন্যার খবর পাই। ষষ্ঠদিন ফেনীতে আমাদের কাছে কিছু ত্রাণ এসেছিল। সে সময় চট্টগ্রাম থেকে আমার এক বন্ধু ফেনী এসেছিল। আমরা তখন সেই বন্ধুর মাধ্যমে ত্রাণগুলো ছাগলনাইয়া পাঠিয়ে দিয়ে খাগড়াছড়ির উদ্দেশে রওনা হই।'

'একটি বিষয় বলে রাখি, ফেনীতে যে ত্রাণগুলো আমরা দিয়েছিলাম সেগুলো আবার খাগড়াছড়িতে দেইনি। কারণ ফেনীর বাঙালিদের খাবার আর খাগড়াছড়ির আদিবাসীদের খাদ্যাভ্যাস এক রকম নয়। সমতলে সেদ্ধ চাল খেলেও, পাহাড়িরা আতপ চাল খায়। আবার ওরা নাপ্পি বা সিদল খায়। কেউ ডাল খায়, আবার কেউ খায় না। তাই যথেষ্ট সতর্কতার সঙ্গেই চারজন স্থানীয় আদিবাসীর সহযোগিতায় আমরা তিনদিন ত্রাণ বিতরণ করি।'

তৃতীয় দিন ত্রাণ বিতরণ শেষে তারা রাঙ্গামাটির লংগদুর উদ্দেশে রওনা হন। সেখানেও তারা ত্রাণ বিতরণ করেন।

খাগড়াছড়িতে বন্যায় ধসে পড়া ঘর | ছবি: সংগৃহীত

পলাশ বলেন, 'শুধু ত্রাণ বিতরণের মধ্যেই আমাদের কাজ সীমাবদ্ধ ছিল না। আমরা একইসঙ্গে তাদের ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘরের অবস্থাও পর্যবেক্ষণ করছিলাম। কারণ অনেক বাড়িঘরই বন্যায় ভেঙে গিয়েছিল। কোনোটি মাটিতে ধসে পড়েছে। নদীর পাশে হওয়ায় অনেকের সবজি ও জুমের খেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। লংগদু থেকে আমাদের বাঘাইছড়ি যাওয়ার কথা থাকলেও, আমরা সেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করি। কারণ জানতে পারি সেখানে ইতোমধ্যে ত্রাণ পৌঁছেছে।'

'তখন আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম আমরা থানচিতে যাব। কারণ আমাদের কাছে খবর এসেছিল যে, সেখানকার মানুষ শুধু বাঁশকোড়ল খেয়েই কোনো রকমে দিন কাটাচ্ছে। এর মধ্যে আমাদের ফান্ডও অনেকটা কমে এসেছিল।'

'আমরা প্রাথমিকভাবে ১০০ পরিবারকে অর্থ সহযোগিতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। বাজার খরচ, নৌকা ভাড়াসহ সবকিছু হিসেব করতে গিয়ে দেখি আমাদের প্রায় ৫ লাখ টাকা লাগবে। এর মধ্যে পাঁচটা নৌকায় শুধু যাওয়া-আসার ভাড়াই লাগবে এক লাখ টাকা।'

পলাশ বলেন, 'আমাদের হাতে যে অর্থ ছিল তা দিয়ে আমরা কয়েকটি পরিবারকেই শুধু দিতে পারতাম। তাই আমরা কয়েকদিন অপেক্ষা করে ফান্ড তুলে তারপর থানচি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে চট্টগ্রামে চলে আসি। এখন আমরা সেই তহবিলই সংগ্রহ করছি।'

বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে টিউশনি-কোচিং বন্ধ

বন্যার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে টানা ১২ দিন টিউশনি ও কোচিংয়ে ক্লাস নিতে পারেননি পলাশ দে। তিনি বলেন, 'আমি আমার ছাত্রদের অভিভাবকদের বলেছিলাম, এই পরিস্থিতিতে আমি যেহেতু বন্যদুর্গত এলাকায় যাচ্ছি, তাই আমি পড়াতে পারব না। ওই সময়ের জন্য অন্য একজন শিক্ষকের ব্যবস্থা করব বলে জানিয়েছিলাম। কিন্তু তারা বললেন যে, তারা আমার অপেক্ষাতেই থাকবেন। এমনকি ছাত্রদের বাবা-মায়েরাও বন্যার্তদের সাহায্যার্থে আমার কাছে টাকা পাঠিয়েছিলেন।'

বন্যা পরিস্থিতিতে এগিয়ে যাওয়ার এই সিদ্ধান্তকে প্রাপ্তি হিসেবেই মনে করেন পলাশ। তিনি বলেন, 'এই বন্যা আমাকে অনেক কিছুই শিখিয়েছে। বন্যা পরিস্থিতিতে সময়ই আমাকে মানুষের পাশে নিয়ে গেছে। ফেনীর বন্যার্ত মানুষের পাশে দেশের মানুষ যেভাবে পাশে দাঁড়িয়েছিল তাতে দেখেছি দেশের মানুষের ঐক্যের শক্তি কতখানি!'

Comments