পদত্যাগের জন্য মনস্থির করেছি: প্রধান নির্বাচন কমিশনার

নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। ছবি: প্রবীর দাশ/স্টার

প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন 'পদত্যাগের জন্য মনস্থির করেছে'।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ ঘোষণা দেন।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, 'আমিসহ নির্বাচন কমিশনের সকলেই পদত্যাগের জন্য মনস্থির করেছি। পদত্যাগের কাগজপত্র সচিবের কাছে জমা দিয়েছি। এখন তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে সেগুলো জমা দেবেন।'

সংবাদ সম্মেলনে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল এবং নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান ও মো. আলমগীর উপস্থিত থাকলেও বেগম রাশিদা সুলতানা ও মো. আনিসুর রহমান উপস্থিত ছিলেন না।

কাজী হাবিবুল আওয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পাঁচ বছরের জন্য কার্যভার গ্রহণ করে এবং ২ বছর ৬ মাসের মাথায় পদত্যাগের ঘোষণা দিলো।

এর আগে গতকাল নির্বাচন কমিশনের অন্তত দুই শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সিইসি ও চার ইসি পদত্যাগের পর নির্বাচন কমিশন সচিবালয় তাদের পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে পাঠাবেন।

৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের ঠিক এক মাস পর নির্বাচন কমিশনাররা পদত্যাগ করলেন। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান। গত ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতি দ্বাদশ সংসদ ভেঙে দেন।

নির্বাচন কমিশন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভেঙে দেওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা থাকায় নির্বাচন কমিশনাররা পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

গতকাল একজন নির্বাচন কমিশনার নাম প্রকাশ না করার শর্তে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেছিলেন, 'আমরা মনে করি না যে বর্তমান পরিস্থিতি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য উপযুক্ত। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দ্বাদশ সংসদ ভেঙে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। কিন্তু সংবিধান স্থগিত করা হয়নি। এই নির্বাচন কমিশন যদি থাকে, তাহলে ভবিষ্যতে সংবিধান লঙ্ঘনের দায়ে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হতে পারে।'

নির্বাচন কমিশনের শীর্ষ কর্মকর্তারা বলেছেন, হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই নির্বাচন কমিশনাররা পদত্যাগের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলেন। তারা বোঝার চেষ্টা করছিলেন, নিজেরাই পদত্যাগ করবেন, নাকি এ ব্যাপারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্য কোনো পরিকল্পনা আছে। কমিশন পরামর্শের জন্য সরকারের উচ্চপদস্থদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তা সফল হয়নি।

আওয়ামী লীগ শাসনামলে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল নির্বাচন কমিশন। বর্তমান নির্বাচন কমিশন গত জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সমালোচিত হয়েছে। সেই নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক দেখাতে ডামি স্বতন্ত্র প্রার্থী দিতে হয়েছিল আওয়ামী লীগকে।

পূর্ববর্তী নির্বাচন কমিশনও ব্যাপকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ সংসদীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সমালোচিত হয়েছিল। তার আগে একটি জাতীয় নির্বাচনে ১৫৩ জন সংসদ সদস্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।

 

Comments

The Daily Star  | English

What's causing the unrest among factory workers?

Kalpona Akter, labour rights activist and president of Bangladesh Garment and Industrial Workers Federation, talks to Monorom Polok of The Daily Star about the recent ready-made garments (RMG) workers’ unrest.

8h ago