‘আদালতের সঙ্গে আমাদের আন্দোলন সম্পর্কিত না’

শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীরা। ছবি: প্রবীর দাশ/স্টার

'আদালতের সঙ্গে আমাদের আন্দোলন সম্পর্কিত না' বলে মন্তব্য করেছেন 'বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন'র অন্যতম সমন্বয়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাহিদ ইসলাম।

আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, 'আমরা আমাদের দাবি জানিয়েছি নির্বাহী বিভাগের কাছে, সরকারের কাছে। আপিল বিভাগের এই আদেশের খবর আমরা পেয়েছি। আমাদের কর্মসূচিতে কোনো পরিবর্তন আসবে কি না, কিংবা নতুন কিছু আসবে কি না তা আমরা এক ঘণ্টা পর জানাবো।'

দেশের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, মহাসড়ক, রেলপথ অবরুদ্ধ করে কোটাবিরোধী স্লোগান দিয়ে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা।

আজ সকাল সাড়ে ১১টায় দুই শিক্ষার্থীর আপিলের শুনানি করে সরকারি চাকরিতে কোটা বহালে হাইকোর্টের রায়ের ওপর চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা দিয়েছেন আপিল বিভাগ।

শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পূর্ণ আপিল বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

সরকারি দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত বা আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন করপোরেশনে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে নবম থেকে ১৩তম গ্রেডে (প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি) কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে জারি করা পরিপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে একটি রিট করা হয়েছিল। যার চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে গত ৫ জুন হাইকোর্ট রায় ঘোষণা করেন।

স্বাধীনতার পর থেকেই কোটা ছিল। বিভিন্ন সময় তা কম-বেশি হয়। ২০১৮ সালে কোটা ৫৬ শতাংশে এসে দাঁড়ায়। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা, ১০ শতাংশ নারী, ১০ শতাংশ জেলা, পাঁচ শতাংশ ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী এবং এক শতাংশ প্রতিবন্ধী কোটা। পরবর্তীতে কোটায় মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এবং তারপর নাতি-নাতনি যুক্ত করা হয়।

কোটাপদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে ২০১৮ সালে আন্দোলনে নামে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। আন্দোলনের একপর্যায়ে সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে নবম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত কোটাপদ্ধতি তুলে দেয় সরকার।

ওই বছরের ৪ অক্টোবর পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। তাতে উল্লেখ করা হয়, নবম গ্রেড এবং দশম থেকে ১৩তম গ্রেডের ক্ষেত্রে মেধাভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হবে। তবে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে (১৪তম থেকে ২০তম গ্রেড) কোটাব্যবস্থা বহাল রাখা হয়।

ওই পরিপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালে রিট করেন চাকরিপ্রত্যাশী ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান অহিদুল ইসলামসহ সাতজন।

ওই পরিপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০২১ সালের ৬ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রুল দেয়। রুলে পরিপত্রের পাশাপাশি এর আগে দেওয়া হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগের আদেশ প্রতিপালন না করা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাপ্য অধিকারের প্রতি অবজ্ঞার বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। চূড়ান্ত শুনানি শেষে রুল অ্যাবসলিউট (যথাযথ) ঘোষণা করা হয়।

গত ৫ জুন রায় ঘোষণায় মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নবম থেকে ১৩তম গ্রেডে নিয়োগ দেওয়ার বাধা দূর হয়। ওই রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করে।

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিচারাধীন মামলাটিতে পক্ষভুক্ত হতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি আল সাদী ভূঁইয়া এবং উর্দু বিভাগের শিক্ষার্থী আহনাফ সাঈদ খান আবেদন করেন।

Comments

The Daily Star  | English

Election in first half of April 2026

In his address to the nation, CA says EC will later provide detailed roadmap

10h ago