৯ দিন পর সেন্টমার্টিনে পণ্যবাহী জাহাজ, আতঙ্ক কাটেনি

‘এতদিন আমরা কেবল মিয়ানমার থেকে গোলাগুলির শব্দ শুনতাম। এখন সেন্টমার্টিনের সৈকতে দাঁড়ালেই কিছু দূরে মিয়ানমারের যুদ্ধজাহাজ দেখা যাচ্ছে। কেউ বলছেন ৬-৭টি, কেউ বলছেন ১৪টি। এতে আমাদের আতঙ্ক আরও বেড়েছে।’
সেন্টমার্টিন জেটি ঘাটে এমভি বারো আউলিয়া। শুক্রবার রাত সোয়া ১১টার দিকে তোলা। ছবি: তকিসমান খোকা

প্রায় ৯ দিন পর সেন্টমার্টিনে ভিড়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীবাহী জাহাজ। আজ শুক্রবার রাত সোয়া ১১টার দিকে এমভি বারো আউলিয়া সেন্টমার্টিন জেটি ঘাটে পৌঁছায়।

সেন্টমার্টিনের বাসিন্দা ও স্থানীয় ফার্মেসি মালিক তকিসমান খোকা বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, 'চাল, ডাল, তেল ও নুনসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী নিয়ে এমভি বারো আউলিয়া একটু আগে সেন্টমার্টিন জেটি ঘাটে পৌঁছেছে। এ খবর পেয়ে আমার মতো অনেকেই জেটি ঘাটে এসে ভিড় করেছেন। তবে পুলিশ, কোস্টগার্ড ও স্থানীয় প্রশাসনের লোকেরা কাউকে কাছাকাছি যেতে দিচ্ছেন না। তবে পণ্যসামগ্রী নিয়ে জাহাজ এসেছে, স্থানীয় মানুষ এতেই খুশি।'

বর্তমানে সেন্টমার্টিনের খাদ্য সংকট পরিস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে তকিসমান খোকা বলেন, 'সেন্টমার্টিনে কারও ঘরেই তেমন খাবার নেই। দোকানগুলোতেও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস শেষ হয়ে গেছে। গত কয়েকদিন বাজার ঘুরে একটি লেবু পর্যন্ত পাইনি।'

'তবে যাদের টাকা আছে, তারা বিপদ আঁচ করতে পেরে আগেভাগেই খাদ্যসামগ্রী কিনে রেখেছেন। সমস্যায় পড়েছে মূলত দরিদ্র মানুষ। একদিকে আতঙ্ক, অন্যদিকে খাবারের কষ্ট। তাদের ভোগান্তিটাই সবচেয়ে বেশি', বলেন তিনি।

জাহাজ আসার খবরে সেন্টমার্টিন জেটি ঘাটে ভিড় করেছে মানুষ। শুক্রবার রাত সোয়া ১১টার দিকে তোলা। ছবি: তকিসমান খোকা

আতঙ্কের বিষয়ে জানতে চাইলে তকিসমান খোকা বলেন, 'এতদিন আমরা কেবল মিয়ানমার থেকে গোলাগুলির শব্দ শুনতাম। এখন সেন্টমার্টিনের সৈকতে দাঁড়ালেই কিছু দূরে মিয়ানমারের যুদ্ধজাহাজ দেখা যাচ্ছে। কেউ বলছেন ৬-৭টি, কেউ বলছেন ১৪টি। এতে আমাদের আতঙ্ক আরও বেড়েছে।'

এর আগে, দুপুর সোয়া ২টার দিকে কক্সবাজারের নুনিয়ারছড়া বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে এমভি বারো আউলিয়া সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। 

আমাদের কক্সবাজার সংবাদদাতা জানান, সেসময় জাহাজটিতে কক্সবাজারে অবস্থানকৃত সেন্টমার্টিনের স্থানীয় দেড় শতাধিক মানুষ, সরকারি সহায়তার খাদ্যপণ্য ও পাঁচটি কোরবানির গরু পাঠানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার এই রুটে চলাচলকারী একাধিক ট্রলার লক্ষ্য করে মিয়ানমার থেকে গুলি চালানো হয়। নাফ নদীর মোহনায় এই ঘটনাগুলো ঘটে। এরপর থেকে সেন্টমার্টিনের পথে কোনো নৌযান ছেড়ে যায়নি।

সর্বশেষ মঙ্গলবার সকালে বাংলাদেশি স্পিডবোট লক্ষ্য করে মিয়ানমার থেকে গুলি চালানো হয়েছে। মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) নাকি বিদ্রোহী আরাকান আর্মি গুলি চালিয়েছে তা কেউ নিশ্চিত করতে পারেনি।

এতে দ্বীপের বাসিন্দারা তীব্র খাদ্য সংকটে পড়েন বলে ডেইলি স্টারকে জানান ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান। 

Comments

The Daily Star  | English

Mob justice is just murder

Sadly, when one lynching can be said to be more barbaric than another, it can only indicate the level of depravity of some our university students

1h ago