কোরবানির পশুর চড়া দাম, হাটে ক্রেতা সংকট
এ বছর চাহিদার তুলনায় কোরবানির পশু উদ্বৃত্ত বলে জানিয়েছে সরকার। তবে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এখন পর্যন্ত কোরবানির পশুর দাম চড়া।
গবাদি পশুর খাদ্য, পরিবহন এবং শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির কারণেই কোরবানির পশুর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান গাবতলী পশুর হাটের ব্যবসায়ীরা।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান সম্প্রতি বলেছেন, এ বছর কোরবানিযোগ্য পশুর সংখ্যা ১ কোটি ২৯ লাখ। যা চাহিদার চেয়ে অন্তত ২২ লাখ ৮০ হাজার এবং গত বছরের তুলনায় ৪ লাখ ৪৪ হাজার ৩৪টি বেশি।
এর মধ্যে প্রায় ৫২ লাখ গরু, এক লাখ ৬০ হাজার মহিষ, ৬৮ লাখ ছাগল, ৭ লাখ ৬৭ হাজার ৭৪৩টি ভেড়া এবং ১ হাজার ৮৫০টি অন্যান্য কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে।
গরু ব্যবসায়ী মো. ধোনি মণ্ডল বলেন, গত বছরের চেয়ে একটি মাঝারি আকারের ষাঁড় ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। এ বছর ক্রেতার সংখ্যা অনেক কমে গেছে। গত বছর ঈদের কয়েক সপ্তাহ আগে প্রায় একশ গরু বিক্রি করেছিলাম। এ বছর সেই সংখ্যা কমে ১০-এ দাঁড়িয়েছে।
বাড়িতে গবাদি পশুর যত্ন নেন মণ্ডলের স্ত্রী সাবেতন। তিনি বলেন, সরকার ভারত থেকে গরু পাচার বন্ধ না করলে স্থানীয় কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
মানিকগঞ্জের মঞ্জু বেপারী বলেন, গত বছর কোরবানির ঈদের ১৫ দিন আগে প্রায় ২৫০টি গরু বিক্রি করেছি। এ বছর এখন পর্যন্ত বিক্রি করেছি মাত্র ১০০টি।
গাবতলীতে চারটি ষাঁড় নিয়ে আসা সান্টু ব্যাপারি বলেন, স্থানীয় বাজারে কোরবানির পশু পাওয়া গেলেও দাম বেশি। ঢাকার বাইরে মাঝারি আকারের গরুর জন্য বাড়তি ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা দিতে হয়।
গাবতলী হাটে কোরবানির পশু বিক্রি কম হওয়া প্রসঙ্গে গরুর খাদ্য বিক্রেতা মো. জাহাঙ্গীর বলেন, কোরবানির ঈদের অনেক আগে থেকেই অনেকে সরাসরি খামার থেকে গরু কিনে নেন, ফলে স্থায়ী এই হাটে ক্রেতা কম আসে।
ঈদের ১০ দিন আগে গাবতলী পশুর হাটে গরু কিনতে এসেছিলেন ধোলাইপাড়ের ডলি আক্তার। বলেন, এ বছর গরুর দাম অনেক বেশি। 'আমি এখনও কিনতে পারিনি, দেখছি।'
আরও পাঁচ জন ক্রেতাও একথা বলেন।
২৮টি মহিষ কিনেছেন গাবতলী ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন বলেন, এ বছর ছোট মহিষের দাম দুই লাখ টাকা, যা গত বছরের তুলনায় ২০ হাজার টাকা বেশি। আর বড় মহিষের দাম ৮ লাখ টাকা।
ব্যবসায়ী মো. বাবুল জানান, গত বছরের তুলনায় মাঝারি ও ছোট আকারের ছাগলের দাম এক হাজার থেকে ১২০০ টাকা বেশি। ১৩ কেজির ছাগল ১৩ হাজার টাকায় এবং ৪৫ কেজির ছাগল ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া গাবতলী বাজারে দুটি উটও আনা হয়েছে। তবে এগুলোর দামও অনেক বেশি। পাকিস্তান থেকে এগুলো নিয়ে আসা ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন প্রতিটি উটের জন্য ২৬ লাখ টাকা চাইছেন। তিনি বলেন, ভারত থেকে এগুলো এনে স্থানীয়ভাবে লালন পালনে বিধিনিষেধ না থাকলে দাম এত বেশি হতো না।
এ বছর ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় ১৬টি পশুর হাট বসেছে।
Comments