পুলিশ হেফাজতে নারীর মৃত্যুতে আসকের উদ্বেগ, সুষ্ঠু তদন্ত দাবি
যশোরের অভয়নগর থানায় পুলিশ হেফাজতে নারীর মৃত্যুতে উদ্বেগ জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে তারা।
আজ সোমবার আসকের এক বিবৃতিতে বলা হয়, 'যশোরের অভয়নগর থানায় পুলিশ হেফাজতে আফরোজা বেগম (৪০) নামের এক নারী মারা গেছেন। পরিবারের অভিযোগ, ঘুষের দাবিতে তাকে পুলিশ নির্যাতন করে হত্যা করেছে। যা সংবিধান, বিদ্যমান আইন ও যথাযথ প্রক্রিয়ার ব্যত্যয়। আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার জোর দাবি জানাচ্ছে।'
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, 'বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, আফরোজা বেগম অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রামের জলিল মোল্যার স্ত্রী। গত ১ জুন রাত দেড়টার দিকে উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রাম থেকে তাকে আটক করে থানায় নেওয়া হয়। পুলিশের বক্তব্য অনুযায়ী, ২ জুন সকাল ৮টা ২০ মিনিটের দিকে আফরোজা বেগম থানাহাজতে অসুস্থ হয়ে পড়েন। চিকিৎসার জন্য তাকে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর সুস্থ বোধ করলে তাকে থানায় ফিরিয়ে আনা হয়।'
'সকাল পৌনে ১০টার দিকে তিনি আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে পুনরায় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আফরোজা বেগমের ছেলে অভিযোগ করেন, তার মাকে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে এবং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে নির্যাতনের কারণে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয়েছে। যদিও পুলিশ তা অস্বীকার করেছে। যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক গণমাধ্যমে জানিয়েছেন, হাসপাতালে আনার আগেই আফরোজা বেগম মারা গেছেন', যোগ করা হয় বিবৃতিতে।
এতে আরও বলা হয়, 'এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে আসক। আসক মনে করে, পরিবারের অভিযোগ অত্যন্ত গুরুতর। হেফাজতে থাকা ব্যক্তিকে শারীরিক নির্যাতন বেআইনি এবং একইসঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অপেশাদার আচরণের বহিঃপ্রকাশ। এ ছাড়া একজন নারীকে মধ্যরাতে পুলিশের আটক করতে যাওয়ার বিষয়টি অগ্রহণযোগ্য। আটকের পরে পরিবারের কাছে অর্থ দাবি করার অভিযোগটি পুলিশের বিরুদ্ধে যেন নিয়মিত হয়ে দাঁড়িয়েছে। আফরোজা বেগমের পরিবারের অভিযোগ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তার মৃত্যুর ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানাচ্ছে আসক।'
Comments