‘আমরা তিমির বিনাশী’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বকুলতলায় চৈত্রসংক্রান্তিতে আয়োজন করা হয়েছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। ছবি: প্রবীর দাশ/স্টার

সূর্যোদয়ের সঙ্গে শুরু হতে যাচ্ছে বাংলা নববর্ষ ১৪৩১। নববর্ষের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখ বাঙালির একটি সার্বজনীন লোকউৎসব। এদিন আনন্দঘন পরিবেশে বরণ করে নেওয়া হয় বাংলা নতুন বছরকে। দিনটিকে বরণ করতে নানা সাজে এবং নানা আয়োজনে প্রস্তুত হচ্ছে পুরো দেশ।

প্রতি বছরের মতো এবারও বর্ষবরণে মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা। গত কয়েকদিন নাওয়া-খাওয়া ভুলে তারা বর্ষবরণের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

চারুকলার ২৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী আরিয়া পৃথার কাছে প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রস্তুতিতে এবার আমাদের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ কিছুটা কম। স্বাভাবিকভাবেই ঈদের দীর্ঘ বন্ধে বেশিরভাগ শিক্ষার্থী নিজ নিজ বাড়ি চলে গেছেন।'

মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত চারুকলার শিক্ষার্থীরা। ছবি: স্টার

তিনি বলেন, 'সঙ্গত কারণেই প্রতিবারের চেয়ে এবারের আয়োজন একটু ছোট হচ্ছে। যেমন: প্রতিবার আমরা সাত-আটটা স্ট্রাকচার রাখার চেষ্টা করি, কিন্তু এবার যাচ্ছে মাত্র চারটা।'

পৃথা জানান, মঙ্গল শোভাযাত্রার এই বিশাল আয়োজনের খরচ উঠাতে কোনো ধরনের স্পন্সর বা ফান্ডিং নেন না তারা। শোভাযাত্রার আগে একটি স্টলে নিজেদের পেইন্টিং ও আর্ট ওয়ার্ক বিক্রি করে যে টাকা আসে সেটা দিয়েই এই পুরো আয়োজন করা হয়।

ঈদের দীর্ঘ ছুটির প্রভাব পরেছে তাদের স্টলেও পরেছে। পৃথা বলেন, 'গত কয়েকদিন স্টলে বিক্রি ভালো ছিল না, আজ একটু হয়েছে।'

'আমরা তিমির বিনাশী'—স্লোগানে এবারের আয়োজন করছেন চারুকলার শিক্ষার্থীরা।

বর্ষবরণে উৎসবের আমেজে সেজেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা। ছবি: স্টার

পৃথার ভাষ্য, 'শুরু থেকেই আমরা ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েই পুরো আয়োজনটা করেছি। আমরা তাই এবারের থিম হিসেবে রেখেছি "আমরা তিমির বিনাশী"। ধর্মান্ধতা আর ধর্ম এক না। ধর্মান্ধতার তিমির বা কালো রাত পাড়ি দিয়ে আমরা এগিয়ে যাব এবং বাঙলার ঐতিহ্যকে ধরে রাখবো।'

স্টলে বিক্রির জন্য তৈরি হচ্ছে পেইন্টিং। ছবি: স্টার

তিনি বলেন, 'এবার প্রথমদিকে আমাদের একটু সমস্যা হচ্ছিল। ধর্মীয় বিভিন্ন কারণে অনেকেই এই আয়োজনে সম্পৃক্ত হতে অনাগ্রহ প্রকাশ করছিল। অনেকে প্রশ্নও করেছেন যে এখন মঙ্গল শোভাযাত্রা হওয়ার প্রয়োজনীয়তা কী? কিন্তু ধর্মের সঙ্গে এর যে কোনো বিরোধ নেই, এটা অনেকেই বুঝতে পারেন না।'

মঙ্গল শোভাযাত্রার উদ্দেশ্য তুলে ধরে পৃথা বলেন, 'এটা মূলত বাঙালির ঐতিহ্যকে ধরে রাখার একটা বিষয়। মঙ্গল শোভাযাত্রা এবং আমাদের স্টলে যা যা করা হয়, তার সবই ফোকমোটিভ ও বাংলার লোকজ শিল্পকে তুলে ধরে করা হয়। এই অস্তিত্ব ধরে রাখতেই আমাদের প্রতি বছরের মঙ্গল শোভাযাত্রা।'

স্টলে বিক্রির জন্য রাখা আর্ট ওয়ার্ক। ছবি: স্টার

এ বছর মঙ্গল শোভাযাত্রায় আর্টওয়ার্কের মোটিফ করা হয়েছে রিকশা-পেইন্টকে। সম্প্রতি ইউনেস্কো রিকশা-পেইন্টকে স্বীকৃতি দিয়েছে। এই স্বীকৃতি উদযাপনেই এবারের মোটিফ রিকশা-পেইন্ট।

পৃথা বলেন, 'রাজা-রাণীর যে মাস্কগুলো শোভাযাত্রায় থাকে, সেগুলোও করা হয়েছে রিকশা-পেইন্টের মোটিফে। শুধু তাই নয়, বাকি সবও এই মোটিফেই করা।'

Comments

The Daily Star  | English

Nowfel gained from illegal tobacco trade

Former education minister Mohibul Hassan Chowdhury Nowfel received at least Tk 3 crore from a tobacco company, known for years for illegal cigarette production and marketing including some counterfeit foreign brands. 

51m ago