নিউইয়র্ক সিনেটে ১৪ এপ্রিল ‘বাংলা নববর্ষ’ উদযাপনের প্রস্তাব পাস

নিউইয়র্কের টাইমস স্কয়ারে গত বছর বাংলা বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। ছবি: তোফাজ্জল হোসেন

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের সিনেটে ১৪ এপ্রিল 'বাংলা নববর্ষ দিবস' উদযাপনের প্রস্তাব পাস হয়েছে।

সিনেটর লুইস সেপুলভেদার উত্থাপিত এ প্রস্তাবটি গতকাল বুধবার পাস হয়। প্রস্তাবনাটি নিউইয়র্ক সিনেটের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।

প্রস্তাবনায় বলা হয়, সচেতনতা বৃদ্ধি ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য বাড়ানোর জন্য নিউইয়র্ক স্টেটে বসবাসরত বিভিন্ন 'সম্প্রদায়কে' শক্তিশালী করতে আনুষ্ঠানিক দিবসগুলোকে স্বীকৃতি দেওয়া হয় সিনেটে। 

এই দীর্ঘ ঐতিহ্যের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এই আইনসভা ১৪ এপ্রিলকে নিউইয়র্ক রাজ্যে বাংলা নববর্ষ দিবস (পহেলা বৈশাখ) হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে এবং এ বিষয়ে গভর্নর ক্যাথি হোচুলকে স্মরণ করে আমরা গর্বিত।

এতে আরও বলা হয়, বাংলা নববর্ষের সূচনা করেন ভারতীয় উপমহাদেশে মুঘলরা এবং এই ছুটির দিনটি মূলত ধর্মনিরপেক্ষভাবে উদযাপন করা হয়। নাচ-গান, শিল্পকলার প্রদর্শনীর মাধ্যমে সব ধর্ম ও বিশ্বাসের লোকেরা এটা উদযাপন করে থাকেন।

মধ্যযুগে ভারতীয় উপমহাদেশের কৃষি অর্থনীতির সৌর ক্যালেন্ডারের সঙ্গে ইসলামের চান্দ্র ও হিন্দুদের ক্যালেন্ডারের সমন্বয় করে বাংলা নববর্ষ নির্ধারণ করা হয়। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার লাওস, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও ভারতের বড় একটি অংশ একইদিনে নববর্ষ পালন করে।

নববর্ষের ভোরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মঙ্গল শোভাযাত্রাকে ২০১৬ সালে ইউনেসকো 'সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য' হিসেবে ঘোষণা করে।

যুক্তরাষ্ট্রের মোট বাংলাদেশির অর্ধেকই নিউইয়র্ক সিটিতে বসবাস করেন এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব—যেমন, ফজলুর রহমান খান, আলী আকবর খান, রুম্মান আলম, শহীদ কাদরী, ঝুম্পা লাহিড়ী, এনায়েতুর রহিম, দেবব্রত বসু, অমিতাভ ঘোষ, ইকবাল কাদির, জাভেদ করিম, সালমান খান, ওমর ইশরাক—তাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময় নিউইয়র্কে কাটিয়েছেন।

১৯৯০-এর দশকের শেষ দিক থেকে কুইন্সের বিস্তীর্ণ এলাকা ও ম্যানহাটনের টাইমস স্কয়ারে জাঁকজমক ও আনন্দের সঙ্গে বাংলা নববর্ষ পালিত হয়ে আসছে।

নিউইয়র্কভিত্তিক সংগঠন মুক্তধারা ফাউন্ডেশন গত তিন দশক ধরে বাঙালি সংস্কৃতির প্রচারণা চালিয়ে আসছে এবং বাংলা উৎসব ও বইমেলা আয়োজন করে বাংলার ইতিহাস ও সাহিত্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়ে যাচ্ছে।

প্রস্তাবনায় আরও উল্লেখ করা হয়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, স্বামী বিবেকানন্দসহ বাংলার নেতৃস্থানীয়রা ১৯ শতকের শেষভাগ থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ করে আসছেন। ১৯ শতকের শেষ দিকে বাংলাদেশি অভিবাসীরা যুক্তরাষ্ট্রে আসতে শুরু করে এবং ১৯৭১ সালে পাকিস্তান থেকে স্বাধীনতা অর্জনের পর বাংলাদেশের অভিবাসীরা নিউইয়র্ক সিটিতে বসবাস করতে শুরু করে। এখনো প্রতিবছর প্রায় ১০ হাজারের বেশি বাংলাদেশি যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন করেন, যাদের অর্ধেকই নিউইয়র্ক সিটিতে বসবাস করেন।

যেহেতু, নিউইয়র্ক রাজ্য বিশ্বজুড়ে বাঙালি জনগণের সাফল্য এবং স্বাধীনতার সংগ্রামে তাদের অর্জনকে স্বীকৃতি দেয়, তাই এখন এই আইনসভা ১৪ এপ্রিলকে নিউইয়র্ক রাজ্যের জন্য বাংলা নববর্ষ হিসেবে ঘোষণা করল।

Comments

The Daily Star  | English

US retailers lean on suppliers to absorb tariffs

Rather than absorbing the cost or immediately passing it on to consumers, many US apparel retailers and brands have turned to their suppliers in Bangladesh, demanding they share the pain

4h ago