টাঙ্গাইলে অ্যানেসথেসিয়া দেওয়ার পর রোগীর মৃত্যু

ঘাটাইলের আলোক হেলথকেয়ার। ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইলে অপারেশনের আগে অ্যানেসথেসিয়া দেওয়ার পর রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। গত সোমবার রাতে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার বেসরকারি হাসপাতাল আলোক হেলথকেয়ারে এ ঘটনা ঘটে।

মৃত হোসনে আরা (২৪) উপজেলার জামুরিয়া ইউনিয়নের মমরেজ গলগন্ডা গ্রামের সৌদি আরব প্রবাসী কবীর হোসেনের স্ত্রী। 

রোগীর স্বজন ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, পাইলসের অপারেশনের হোসনে আরা সোমবার ওই হাসপাতালে ভর্তি হন। 

বিকেলে অপারেশনের আগে চিকিৎসক মো. তাসলিম উদ্দিন রোগীকে আ্যানেসথেসিয়া দেন। কিন্তু অপারেশন শুরুর আগেই রোগীর খিচুনি শুরু হয়। পরে তাকে ঢাকার আলোক হাসপাতালে পাঠানো হলে রাতে তিনি মারা যান।

যোগাযোগ করা হলে ঘাটাইল আলোক হেলথকেয়ারের ম্যানেজার সিদ্দিক হোসেন বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও হাসপাতালের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।  

জানা গেছে অ্যানেসথেসিস্ট ডা. মো. তাসলিম ঘাটাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একজন কনসালট্যান্ট। যোগাযোগ করা হলে তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অপারেশনের আগে সামান্য টেনশন ছাড়া রোগীর ব্লাড প্রেসারসহ সবকিছু স্বাভাবিক ছিল। জরায়ু অপারেশনের ক্ষেত্রে রোগীকে অ্যাসেনথেসিয়া দিতে যত মিলিমিটার ইনজেকশন দেওয়া হয়, পাইলসের ক্ষেত্রে দেওয়া হয় তার প্রায় চার ভাগের এক ভাগ।' 

তিনি বলেন, 'কিন্তু ইনজেকশন দেওয়ার পরপর প্রথমে রোগী শরীর জ্বালাপোড়ার কথা বললেও পরে তার খিচুনি শুরু হয়। এ অবস্থায় প্রথমে ঘাটাইল ক্যান্টনমেন্ট হাসপাতাল এবং পরে মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে দুজন অ্যানেসথেসিস্ট কল দিয়ে এনে রোগীর জন্য পরামর্শ চাওয়া হয়। পরে তাদের পরামর্শে রোগীকে ম্যানুয়ালি ভেন্টিলেশন দেওয়া হয়। এতে অবস্থার উন্নতি না হলে এবং আইসিইউ সুবিধা দিতে বলা হলে তাকে ঢাকার আলোক হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে আইসিইউতে কয়েক ঘণ্টা রাখার পর রোগীর মৃত্যু হয়।'     

ডা. তাসলিম আরও বলেন, 'ঘটনাটি দুর্ভাগ্যজনক। এটিকে অ্যাডভার্স ড্রাগ রিয়্যাকশন বলে। রোগীর স্বজনরা নিশ্চিত হয়েছেন যে চিকিৎসায় কোনো ভুল হয়নি এবং রোগীর জীবন রক্ষায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ  চেষ্টার কোনো ত্রুটি করেনি।'

মৃত হোসনে আরার মামা আব্দুস সাত্তার বলেন, 'আমরা কোনো অভিযোগ করিনি। ক্লিনিকের পক্ষ থেকে তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করা হয়েছে বলে মনে হয়েছে। আমাদের আর কিছু বলার নেই।' 

জানতে চাইলে টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. মো. মিনহাজ উদ্দিন মিয়া দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অবহেলাজনিত বা ভুল চিকিৎসাজনিত মৃত্যুর অভিযোগ পেলে আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখব। তবে এই মৃত্যুর বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।'  

Comments

The Daily Star  | English

Pathways to the downfall of a regime

The erosion in the credibility of the Sheikh Hasina regime did not begin in July 2024.

8h ago