মা জানেন না কোলের শিশুটি হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা গেছে

সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলায় খাদ্য বিষক্রিয়া থেকে আড়াই বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ওই শিশুর মা ও বোনসহ আরও চার জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের নারী ওয়ার্ডে ভর্তি শিশুটির মা জানেন না যে তার এক মেয়ে ইতোমধ্যেই মারা গেছে। পরিবারের সদস্য এবং পাশের বেডের কোনো রোগী তাকে বিষয়টি জানতে দেননি।

পরিবারের দাবি, মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইন খাওয়ার পরই এই বিষক্রিয়া হয়েছে। অসুস্থদের মধ্যে মা ও এক শিশু বিপদমুক্ত নয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।

এ ঘটনায় পুলিশ স্যালাইন বিক্রেতাসহ চার জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে।

মৃত শিশুর বাবা বেলকুচি উপজেলার বইলগাছির কাইয়ুম আলী শেখ (২৮) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শবে বরাতে আমার স্ত্রী পারভীন আক্তার (২৬) রোজা রেখেছিলেন। সন্ধ্যায় দুই ধরনের স্যালাইন ও সফট ড্রিংকস দিয়ে শরবত বানিয়ে নিজে খেয়েছে এবং দুই মেয়ে ও এক ভাগ্নিকে দিয়েছে।'

তিনি বলেন, 'শরবত খাওয়ার পর তারা ভাত খায়। এর কিছুক্ষণ পর সবাই বমি করতে থাকে, সেইসঙ্গে পাতলা পায়খানা। অবস্থা খারাপ হলে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেওয়ার সময় আড়াই বছরের ছোট মেয়ে জিমহা পথেই মারা যায়।'

সেখানকার চিকিৎসক বাকিদের শজিমেক হাসপাতালে পাঠান।

বর্তমানে জিমহার মা পারভীন আক্তার, তার ৮ বছরের মেয়ে রিয়ামনি, ৮ বছরের ভাগ্নি মিথিলা এবং ৬ বছরের মেয়ে নুসরাত জাহান নুড়ি হাসপাতালে ভর্তি আছে।

রোগীদের অবস্থা জানতে চাইলে মেডিকেল কলেজের উপপরিচালক আব্দুল ওয়াদূদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'খাদ্যে বিষক্রিয়ায় গতকাল রাতে এখানে পারভীনসহ তার পরিবারের আরও তিন শিশু ভর্তি হন। এর মধ্যে দুই শিশু চিকিৎসা নেওয়ার পরে বিপদমুক্ত হলেও পারভীন ও আর এক শিশু এখনো আশঙ্কামুক্ত নন।'

বেলকুচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিসুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঘটনাস্থলে আলামত হিসেবে আমরা এসএমসির ওরস্যালাইনের প্যাকেট, প্রমি সফট ড্রিংকসের প্যাকেট ও স্থানীয়ভাবে তৈরি নাফিস স্যালাইনের প্যাকেট পেয়েছি।'

প্যাকেটের গায়ে মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ অস্পষ্ট ছিল বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

ঘটনার খবর পেয়ে স্যালাইন বিক্রেতা, সেলসম্যানসহ চার জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে এবং এ ঘটনায় আইনি প্রক্রিয়া চলমান বলে জানান ওসি আনিসুর রহমান।

Comments