শ্রম আইন সংশোধনে তাড়াহুড়ো না করতে বলেছে আইএলও: আইনমন্ত্রী

আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। স্টার ফাইল ছবি

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, শ্রম আইন সংশোধনের বিষয়ে তাড়াহুড়ো না করে আরও আলোচনা করে করলে ভালো হয় বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)।

আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আইএলও'র প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।

এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, 'আজ আমরা শ্রম আইন সংশোধনের বিষয়ে বসেছিলাম। এর আগে যখন বসেছিলাম, তখন যেসব সংশোধনীর কথা বলা হয়েছিল, সেখানে আরও কিছু নতুন সংশোধনী আনার ব্যাপারে শ্রম মন্ত্রণালয় আমাকে জানিয়েছিল। তাছাড়া এ বিষয়ে আইএলও কিছু বক্তব্য দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছিল।' 

আইনমন্ত্রী বলেন, 'জেনেভা থেকে আইএলও'র চারজনের একটি টিমও আজ বৈঠকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়েছিলেন। বৈঠকে শ্রম আইনের প্রায় প্রতিটা ধারা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।'

তিনি বলেন, 'আমরা চেয়েছি শ্রম আইনটা পার্লামেন্টের চলতি অধিবেশনে পাস করার জন্য। কিন্তু আইএলও প্রতিনিধিদল বলেছেন, তাড়াহুড়ো না করে আলোচনা করে আরও কিছু করতে পারলে ভালো হবে।'

আনিসুল হক বলেন, 'আমি তাদের পরিষ্কারভাবে বলেছি যে, আইএলওতে আমাদের বিরুদ্ধে গত তিন বছর ধরে একটা অভিযোগ ঝুলে আছে। প্রত্যেক মার্চ মাসেই বলা হয়, এটার বিষয়ে মার্চ মাসে সিদ্ধান্ত হবে না, নভেম্বরে হবে। আবার নভেম্বরে বলা হয় এবার হবে না, মার্চে হবে। আমি সেজন্য পরিষ্কারভাবে বলেছি যে, আগামী মার্চ মাসের গভর্নিং বডির মিটিংয়ে যদি বলেন, এটা আবার নভেম্বরে যাবে। সেটা আমরা মেনে নিতে রাজি না। তখন তারা বলেছেন, কমপ্রিহেনসিভ লেবার অ্যাক্ট তাদের পরামর্শ মিলিয়ে যদি করতে পারি, তাহলে সেটা এই মার্চ মাসে আমাদের অভিযোগ নিয়ে আলোচনার ব্যাপারে প্রতিবন্ধকতা হবে না, বরং আমরা যে আলোচনাগুলো করছি, সেটার একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।'

আইনমন্ত্রী বলেন, 'এটার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন নীতিনির্ধারকরা। এই আইনের কিছু কিছু বিষয় আছে, তা নিয়ে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গেও আলাপ করতে হবে। তাই আমরা দুটি সিদ্ধান্তে এসেছি। একটা হচ্ছে এই মিটিং আবারও অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে আইএলও'র উদ্যোগে একটা স্টেকহোল্ডার ফ্যাসিলিটি মিটিং হবে। সেখানে যেসব ইস্যু নিয়ে আমাদের সঙ্গে তাদের মতপার্থক্য আছে, সেগুলো আলোচনা হবে।'

আজ তারা কী পরামর্শ দিয়েছে, জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী উদাহরণ দিয়ে বলেন, 'তারা বলছেন "সি ম্যান" এর নাম বদলে "সি ফেয়ারার" নাম করা। ম্যানেজার ও সুপারভাইজারদের ওয়ার্কার বলা।'

তিনি বলেন, 'একটা কথা আসছিল ইউনিভার্সিটি টিচারদের ওয়ার্কার বলতে হবে, আমি সেটা নাকচ করে দিয়েছি। আমি বলেছি, ইউনিভার্সিটি টিচারদের আমরা ওয়ার্কার বলতে পারব না। তার কারণ হচ্ছে, ইউনিভার্সিটি টিচাররাও চান না যে, তাদের ওয়ার্কার বলতে এবং ওয়ার্কারের সংজ্ঞায় আনতে, আমরাও চাই না।'

ট্রেড ইউনিয়ন করার ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, '১০ শতাংশ নিয়ে কোনো আলোচনাই হয়নি।'

তিনি বলেন, 'আগে ছিল ১৫ শতাংশ হবে শুধু তিন হাজার বা তার ঊর্ধ্বে যেসব কারখানা শ্রমিক আছে তাদের। এখন আমরা সেটাও তুলে দিচ্ছি। সব শ্রমিকদের ব্যাপারে ১৫ শতাংশ কাজ করবে।'

বৈঠকে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. এহছানে এলাহী, আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব হাফিজ আহমেদ চৌধুরী, বাংলাদেশে আইএলও'র কান্ট্রি ডিরেক্টর তুওমো পাউটিয়াইনেন, প্রোগ্রাম ম্যানেজার নীরন রামজুথান, টেকনিক্যাল অফিসার চয়নিচ থামপারিপাত্র, সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার মো. সাইদুল ইসলাম, প্রোগ্রাম অফিসার চৌধুরী আলবাব কাদির প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh bank reform plan 2025

Inside the 3-year plan to fix banks

Bangladesh has committed to a sweeping overhaul of its troubled financial sector, outlining a detailed three-year roadmap as part of its latest agreement with the International Monetary Fund.

10h ago