স্কুলের মাঠ প্রধান শিক্ষকের ভাইয়ের গরুর জন্য

শারিকখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় খেলার মাঠ
বিদ্যালয়ের মাঠে জালের বেড়া। ছবি: সোহরাব হোসেন/স্টার

বরগুনার আমতলী উপজেলার শারিকখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঝারি আকারের মাঠটি এই স্কুলের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি এলাকার আরও অনেক কিশোর-কিশোরীদের খেলার জায়গা। সেই জায়গাটিই গোচারণভূমি বানিয়ে ফেলেছেন এখানকার প্রধান শিক্ষক।

ওই মাঠে একজনের গরুই চরে। সেটা প্রধান শিক্ষক শাহিদা বেগমের ভাইয়ের। স্কুলের দেড়শ শিক্ষার্থী ও এলাকার শিশু-কিশোর-তরুণরা যাতে মাঠের ঘাস নষ্ট করতে না পারে, সে কারণে মাঠের চারপাশে জালের বেড়া দেওয়ার ব্যবস্থাও করেছেন তিনি।

এমন পরিস্থিতিতে খেলার জায়গা ফিরে পাওয়ার দাবিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে স্থানীয় শিশু-কিশোররা। তারপরেও মাঠের জায়গা ছাড়েননি শাহিদা বেগম। কানে তোলেনটি বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্যদের কথাও।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, মাঠটি ছিল শিশু-কিশোরদের সকাল-বিকালের খেলার জায়গা। কিন্তু চলতি বছরের শুরু থেকে শাহিদা বেগম তার ভাই বাচ্চু শরীফের গরুকে খাওয়ানোর জন্য মাঠের ঘাস সংরক্ষণের ব্যবস্থা করেছেন। তখন থেকেই মাঠে বাচ্চাদের খেলাধুলা নিষেধ।

এলাকার তরুণ-যুবাদের ভাষ্য, খেলাধুলার পাশাপাশি মাঠটি স্থানীয়রা বিভিন্ন সামাজিক কাজেও ব্যবহার করেন। এখন সে সুযোগও নেই। এ নিয়ে সবাই কম-বেশি ক্ষুব্ধ। তাই মাঠটি উন্মুক্ত করে দেওয়ার ব্যবস্থা নিতে শিশু-কিশোরদের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করা হয়েছে বলে জানান তারা।

গণমাধ্যমে কথা বলার জন্য প্রধান শিক্ষকের রোষানলে পড়ার আশঙ্কায় নিজেদের নাম প্রকাশ করতে চাননি এই তরুণরা। তবে বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি শাহজাহান কবির বলেন, 'বিষয়টি জানার পর আমিও শিক্ষার্থী ও স্থানীয় যুবকদের জন্য মাঠটি উম্মুক্ত করে দিতে বলেছি। কিন্তু প্রধান শিক্ষক তা শুনছেন না।'

জানতে চাইলে শাহিদা বেগম বলেন, 'স্কুলের মাঠে লাগানো কিছু গাছ রক্ষার জন্য জালের বেড়া দেওয়া হয়েছে।' তাহলে শিক্ষার্থীদের কেন মাঠে নামতে দেওয়া হচ্ছে না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'এখন বাচ্চাদের পরীক্ষা চলছে? তারা খেলবে কীভাবে?'

এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল আলমের ভাষ্য, তিনি বিষয়টা অবগত আছেন। এ সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগের অনুলিপি তিনি পেয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে শাহিদা বেগমের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আমতলী উপজেলার ইউএনও মুহাম্মদ আশরাফুল আলমও বলছেন, 'অভিযোগ তদন্ত করে সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

Comments

The Daily Star  | English
explanations sought from banks for unusual USD rates

Explanations sought from 13 banks for higher dollar rate

BB issued letters on Dec 19 and the deadline for explanation ends today

2h ago