৩ টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর পদত্যাগ কার্যকর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম।

পদত্যাগপত্র জমা দেওয়া তিন টেকনোক্র‍্যাট মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীর তিন উপদেষ্টার পদত্যাগ কার্যকর করা হয়েছে।

তিন টেকনোক্র‍্যাট মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী হলেন—বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। তারা তিনজনই টেকনোক্র্যাট (সংসদ সদস্য নন) কোটায় মন্ত্রিসভায় স্থান পেয়েছেন। সংবিধান অনুযায়ী, মন্ত্রিসভার এক-দশমাংশ টেকনোক্র্যাট হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যায়।

প্রধানমন্ত্রীর তিন উপদেষ্টা হলেন—অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী।

ড. মশিউর রহমান, ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী ও ড. গওহর রিজভী (বাম দিক থেকে)।

গত ১৫ নভেম্বর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তফসিল ঘোষণার চার দিনের মাথায় টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও উপদেষ্টাদের পদত্যাগ করতে বলা হলো। তবে মন্ত্রিসভায় থাকা অন্য মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের মধ্য থেকে কাউকে পদত্যাগ করতে বলা হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

এরপর ১৯ নভেম্বরই পদত্যাগপত্র জমা দেন দুই টেকনোক্র‍্যাট মন্ত্রী ও একজন টেকনোক্র‍্যাট প্রতিমন্ত্রী। একইদিন পদত্যাগপত্র জমা দেন প্রধানমন্ত্রীর তিন উপদেষ্টাও।

পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার পরেও অফিস করেছেন টেকনোক্র‍্যাট মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী। বিষয়টি নিয়ে গত ২০ নভেম্বর মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন বলেছিলেন, 'যখন গেজেট প্রকাশ করে পদত্যাগ কার্যকর করা হবে, তখন থেকে তারা অফিস করবেন না। এখন তাদের অফিস করতে বাধা নেই।'

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান মন্ত্রিসভা শপথ নিয়েছিল। বর্তমান মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রীসহ ৪৭ জন সদস্য রয়েছেন। এর মধ্যে মন্ত্রী ২৫ জন, প্রতিমন্ত্রী ১৯ জন ও উপমন্ত্রী তিনজন। সংবিধান অনুযায়ী মন্ত্রিসভার এক-দশমাংশ অর্থাৎ দশভাগের একভাগ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রী সংসদ সদস্যদের বাইরে থেকে নেওয়ার সুযোগ আছে।

সংবিধানের ৫৬ (১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, 'একজন প্রধানমন্ত্রী থাকিবেন এবং প্রধানমন্ত্রী যেরূপ নির্ধারণ করিবেন, সেইরূপ অন্যান্য মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপ-মন্ত্রী থাকিবেন।' একই অনুচ্ছেদের (২) দফা অনুযায়ী, 'প্রধানমন্ত্রী ও অন্যান্য মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপ-মন্ত্রীদিগকে রাষ্ট্রপতি নিয়োগ দান করিবেন: তবে শর্ত থাকে যে, তাহাদের সংখ্যার অন্যূন নয়-দশমাংশ সংসদ-সদস্যগণের মধ্য হইতে নিযুক্ত হইবেন এবং অনধিক এক-দশমাংশ সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হইবার যোগ্য ব্যক্তিগণের মধ্য হইতে মনোনীত হইতে পারিবেন।'

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০০৯ সাল থেকে থেকে এটি টানা তৃতীয় মন্ত্রিসভা। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে টেকনোক্র্যাটসহ ৩০ জন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও উপদেষ্টা পদত্যাগ করেছিলেন। তবে ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রসঙ্গত, সংবিধানে নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয় বিশেষ কোনো নির্দেশনা নেই। নির্বাচনকালীন সময়ে মন্ত্রিসভার আকার কেমন থাকবে, তা সম্পূর্ণ প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছাধীন।

Comments

The Daily Star  | English

1,500 dead, nearly 20,000 injured in July uprising: Yunus

He announced plans to demand the extradition of deposed dictator Sheikh Hasina from India

1h ago