পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত পোশাকশ্রমিকের শরীর থেকে ছররা গুলি উদ্ধার

আঞ্জুয়ারা খাতুন

পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি সাড়ে ২৩ হাজার টাকা করার দাবিতে গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত পোশাক শ্রমিক আঞ্জুয়ারা খাতুনের (২৮) মরদেহে ছররা গুলি পাওয়া গেছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গের সূত্রগুলো দ্য ডেইলি স্টারকে জানায়, মরদেহের মাথা ও হাত থেকে আটটি ছররা গুলি পাওয়া গেছে। তার দেহে আরও ছররা গুলির চিহ্ন রয়েছে।

নিহত আঞ্জুয়ারা খাতুনের স্বামী জামাল বাদশাও কোনাবাড়ী এলাকার একটি গার্মেন্টসে কাজ করেন। তার স্ত্রী কাজ করতেন ইসলাম গার্মেন্টসে সেলাই মেশিন অপারেটর হিসেবে।

জামাল বাদশা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, আজ সকাল সাড়ে ৭টায় তার স্ত্রী কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হন। এর কিছুক্ষণ পর ইসলাম গার্মেন্টস থেকে মাইকে জানানো হয় আজ কাজ হবে না। শ্রমিকদেরকে বাড়িতে চলে যেতে বলে কারখানা কর্তৃপক্ষ। সকাল ৮টার কিছুক্ষণ পর তিনি তার স্ত্রীকে আনতে গার্মেন্টসে যান। তার স্ত্রী তাকে বাসায় ফিরে যেতে বলেন। এরপর থেকে তার আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। স্ত্রীর খোঁজ না পেয়ে তিনি আবার তাকে খুঁজতে বের হন। তিনি দেখেন, কিছু মানুষ একটি ভ্যানে তার স্ত্রীকে নিয়ে আসছেন। কাছে গিয়ে দেখেন তার স্ত্রী অচেতন অবস্থায় পড়ে আছেন। তার কপাল ও কানের পাশ থেকে রক্ত ঝরছিল। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

জামাল বাদশার দাবি, পুলিশের গুলিতেই তার স্ত্রী নিহত হয়েছেন। তবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডেথ রেজিস্টারের প্রথমে গুলির কথা উল্লেখ করা হলেও মর্গের ডেথ রেজিস্টারে মৃত্যুর কারণ উল্লেখ করা হয়নি।

আজ বিকেলে ময়নাতদন্ত শেষে মর্গ সূত্র জানায়, আঞ্জুয়ারা খাতুনের কপাল, পিঠ ও হাত থেকে আটটি ছররা গুলি উদ্ধার করা হয়েছে যদিও তার শরীরে আরও গুলির ক্ষত ছিল। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের সদস্যরা তার মরদেহ সিরাজগঞ্জের কালীগঞ্জে নিয়ে গেছেন।

এর আগে সকালে আঞ্জুয়ারার ভাই মোস্তফা দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, সকাল ৮টার দিকে আমার বোন বেতন বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন।

এই ঘটনার ব্যাপারে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মাহবুব আলম দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, আন্দোলনের একপর্যায়ে শ্রমিকরা অন্যান্য গার্মেন্টস ভাঙচুর করা এবং অন্যান্য শ্রমিকদের নামানোর চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। পরে পুলিশ বাধ্য হয়ে টিয়ার শেল এবং রাবার বুলেট ছোড়ে। অনেক শ্রমিক দৌড়ে পালানোর সময় পড়ে গিয়েও আহত হয়েছে।

 

Comments

The Daily Star  | English
August 5 declared as July Mass Uprising Day

Govt declares August 5 as ‘July Mass Uprising Day’

It also declared August 8 as "New Bangladesh Day" and July 16 as "Shaheed Abu Sayed Day"

1h ago