আমি অপরাধ করিনি, শঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই: ড. ইউনূস

ড. মুহাম্মদ ইউনূস
দুদক কার্যালয়ে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস | ছবি: মো. আব্বাস/স্টার

নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আমি অপরাধ করিনি, শঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কার্যালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

অর্থ আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিং মামলায় বক্তব্য জানাতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কার্যালয়ে গিয়েছিলেন ড. ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমের আরও দুই কর্মকর্তা।

ওই দুই কর্মকর্তা হলেন—গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম।

গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, 'কেন শঙ্কিত হবো? আমি অপরাধ করিনি, শঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। আমাকে ডেকেছে, সে জন্য আমি এসেছি।'

তিনি আরও বলেন, 'যেহেতু এটা লিগ্যাল ম্যাটার। আমার আইনজীবী বুঝিয়ে বলবেন।'

গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. ইউনূসের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন সাংবাদিকদের বলেন, 'দুদকের উনার বিরুদ্ধে অভিযোগটি হচ্ছে, গ্রামীণ টেলিকমের ১০৬ জন কর্মচারী শ্রম আদালতে মামলা করেছিলেন কেন তাদের নিট মুনাফার পাঁচ শতাংশ দেওয়া হবে না? ট্রেড ইউনিয়নও মামলা করেছিল। ট্রেড ইউনিয়ন শ্রম আদালতের মামলাটি গোপন করে উচ্চ আদালতে এসে একটি মামলা করে।

'আমাদের বক্তব্য ছিল, গ্রামীণ টেলিকম সামাজিক ব্যবসার একটি প্রতিষ্ঠান। এর মাধ্যমে শিল্প কলকারখানা গড়ে তুলে বেকারত্ব দূর করা এবং নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করাই মূল লক্ষ্য। তাতে বলা আছে, কেউ কোনো মুনাফা নেবে না। এই মুনাফায় সমাজের উন্নয়নের জন্য একটার পর একটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হবে এবং বেকারত্ব দূর হবে,' বলেন তিনি।

আবদুল্লাহ আল মামুন আরও বলেন, 'কোম্পানি আইনের ২৮ ধারায় আছে, সমাজের জন্য যারা কাজ করবে যে সংগঠন, তার মুনাফা দেওয়া নিষিদ্ধ। গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানি আইনের ২৮ ধারায় সৃষ্ট একটি প্রতিষ্ঠান; মুনাফা দেওয়া নিষিদ্ধ। শ্রম আইনে কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত না। শ্রম আদালতের দায়িত্ব এই কোম্পানিতে যে শ্রমিকরা কাজ করবে তাদের অধিকার ও সুযোগ-সুবিধা দেখভাল করা।'

'ড. ইউনূসকে আসামি করা হয়েছে, যেখানে কোনো মামলাই হয় না। চুক্তির ব্যাপার, দুই পক্ষের স্বাক্ষরিত। সেখানে এটা উদ্দেশ্যমূলকভাবে করা হয়েছে। উনাকে হেয় প্রতিপন্ন করা হয়েছে। দেশীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এই মামলা করা হয়েছে বলে স্যার মনে করেন,' বলেন আবদুল্লাহ আল মামুন।

গত ২৭ সেপ্টেম্বর মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান চিঠি দিয়ে ড. ইউনূসসহ তিন জনকে ৫ অক্টোবর হাজির হতে বলেন।

এর আগে গত ৩০ মে গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুদক।

Comments