সাজেকে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড়, গাড়ি-রাস্তা-তাঁবুতেও রাত কাটিয়েছেন অনেকে

সাজেকে পর্যটকদের ভিড়। ছবি: লালটান পাংখোয়া/স্টার

টানা তিন দিনের সরকারি ছুটি ঘিরে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেকে পর্যটকের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। ইতোমধ্যে সাজেকের সব রিসোর্ট-কটেজের শতভাগ কক্ষ বুকিং হয়ে যাওয়ায় গতকাল অনেকেই রাত কাটিয়েছেন স্থানীয়দের ঘরে, রিসোর্ট-কটেজের স্টোর রুম, বারান্দা ও গাড়িতে। আবার অনেক পর্যটক রাত কাটিয়েছেন রাস্তায় ও খোলা আকাশের নিচে তাঁবু গেড়ে।

পর্যটকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদে মিলাদুন্নবীসহ শুক্র ও শনিবার মিলিয়ে টানা তিন দিনের এই ছুটি ঘিরে তাদের অনেকেই দুই থেকে তিন মাস আগে সাজেকের রিসোর্ট-কটেজে বুকিং দিয়ে রেখেছেন।

সাজেকের রিসোর্ট-কটেজ ব্যবসায়ীরা জানানা, তিন দিনের এই বন্ধ ঘিরে অনেক আগে থেকেই পর্যটকরা রিসোর্ট ও কটেজের কক্ষ বুকিং দিতে শুরু করেন। ফলে আগেই শতভাগ কক্ষ বুকিং হয়ে গেছে। কিন্তু গতকাল থেকেই সেখানে পর্যটকদের অতিরিক্ত ভিড় দেখা যায়। পর্যটকদের মধ্যে যারা অগ্রিম বুকিং দেননি, তারা কক্ষ ভাড়া নিতে এলেও তাদের তা দেওয়া যায়নি। এতে অনেককে রাত কাটাতে হয়েছে স্থানীয়দের ঘরে, রিসোর্ট-কটেজের স্টোর রুমে, বারান্দায়, গাড়িতে, রাস্তায় কিংবা তাঁবুতে।

চট্টগ্রাম শহর থেকে সাতজন একটি দলের সঙ্গে সাজেকে ঘুরতে এসেছেন তরুণ মো. তানভীর ইসলাম। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গতকাল দুপুর থেকে রিসোর্ট-কটেজগুলোয় কক্ষ ভাড়া নেওয়ার জন্য চেষ্টা করেছি। কিন্তু কোথাও খালি পাইনি। পরে আমরা সবাই রাঙামাটি শহরে ফিরে কাপ্তাই লেকে হাউসবোটে অবস্থান নেই। আমাদের মতো অনেক পর্যটকই এভাবে ফিরেছেন।'

সাজেকে পর্যটকদের ভিড়। ছবি: লালটান পাংখোয়া/স্টার

চার বন্ধুসহ সাজেকে ঘুরতে আসা আদিল ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা মোটরসাইকেলে করে ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি হয়ে সাজেকের উদ্দেশে রওনা দিয়ে পৌঁছাই বৃহস্পতিবার। সেখানে আমাদের কয়েকজন বন্ধু আগেই অবস্থান করছিল। তারাই আমাদের জানিয়েছে যে, সেখানে থাকার কোনো রিসোর্ট বা কটেজে কক্ষ ফাঁকা নেই। তাই আমরা রাঙামাটি শহরে অবস্থান নেই।'

সাজেকের রিসোর্ট-কটেজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জেরি লুসাই ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সরকারি ছুটি সামনে রেখে অনেকেই মাস তিনেক আগে থেকেই বুকিং করেছে। বলতে গেলে আগেই সব রিসোর্ট ও কটেজের কক্ষ বুক হয়ে গেছে।'

থাকার কক্ষ না পেয়ে অনেকে পর্যটক সকালে সাজেকে এসে আবার বিকেলে ফিরে গেছেন বলেও জানান তিনি।

জেরি লুসাই জানান, সাজেকের রুইলুই পর্যটনকেন্দ্রে মোট ১১২টি রিসোর্ট ও কটেজ আছে, যেগুলোর ধারণক্ষমতা চার থেকে সর্বোচ্চ সাড়ে চার হাজার পর্যটকের থাকার মতো। কিন্তু গতকাল সাজেকে যাওয়া পর্যটকের সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় পাঁচ হাজারে। ধারণক্ষমতার বেশি পর্যটক হওয়ায় তাদের রিসোর্ট বা কটেজে জায়গা দেওয়া যায়নি। যার ফলে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে কিছু পর্যটকদের।

সাজেকে পর্যটকদের ভিড়। ছবি: লালটান পাংখোয়া/স্টার

বিষয়টি নিয়ে বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুমানা আক্তার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'টানা তিন দিনের সরকারি ছুটি গতকাল থেকে শুরু হওয়ায় সাজেকে পর্যটকের ভিড় বেড়েছে। আগেই বুকিং হয়ে গেছে রিসোর্ট ও কটেজের কক্ষ। পর্যটকদের যাতে কোনো ধরনের সমস্যা না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।'

Comments

The Daily Star  | English

Netanyahu now a wanted man

ICC issues arrest warrants for the Israeli PM, his former defence chief for war crimes and crimes against humanity; 66 more killed in Gaza

1h ago