বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ: ইউরোপীয় পার্লামেন্টে যৌথ প্রস্তাব

বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিতে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে একটি যৌথ প্রস্তাব উত্থাপন করেছে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট।

বুধবার রাতে ফ্রান্সে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ছয় সদস্য ওই প্রস্তাবের ওপর বিতর্কে অংশ নেন।

বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে, বিশেষ করে 'অধিকার'-এর বিষয়ে ফ্রান্সের স্ট্রাসবার্গ শহরে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে 'মোশন ফর অ্যা রেজোলিউশন' শিরোনামের ওই প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি হওয়ার কথা রয়েছে।

প্রস্তাবে বাংলাদেশে বিরোধী দলীয় নেতাদের গ্রেপ্তার এবং বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে বলপ্রয়োগের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। পাশাপাশি সরকারকে ২০২৪ সালের অবাধ, সুষ্ঠু এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য একটি অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিতের আহ্বান জানানো হয়েছে।

প্রস্তাবে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা, মানবাধিকার কর্মী এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য একটি নিরাপদ এবং অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিতের বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

রেজুলেশন অনুসারে, বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে খারাপ হয়েছে। সেগুলোর মধ্যে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব এবং শ্রমিকদের অধিকারের মতো বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। 

প্রস্তাবে সরকারকে অবিলম্বে এবং নিঃশর্তভাবে মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে সব ধরনের অভিযোগ প্রত্যাহার এবং সংস্থাটির নিবন্ধন ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। 

এ ছাড়া সুশীল সমাজের সংগঠনগুলোর অনুমোদিত বিদেশি অনুদানের ব্যবহার প্রক্রিয়া সহজতর করার জন্য সরকারকে আহ্বান জানানো হয়েছে।

প্রস্তাবে সরকার ও বিচার বিভাগীয় কর্তৃপক্ষকে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের প্রতি সম্মান রেখে সেগুলো বাস্তবায়নে জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর সঙ্গে সহযোগিতার আহ্বান জানানো হয়েছে। এ ছাড়া আদালতের শুনানিতে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের উপস্থিত থাকার অনুমতি দেওয়ার বিষয়েও জোর দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশে গুম এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মতো মানবাধিকার লঙ্ঘন পরিস্থিতির সমাপ্তির জন্য সরকারকে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর কাজে সহযোগিতার আহ্বান জানানো হয়েছে। 

এ ছাড়া প্রস্তাবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করার জন্য সরকারের প্রতি পুনরায় আহ্বান জানানো হয়েছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে পুরোপুরি সামঞ্জস্য রেখে সাইবার নিরাপত্তা আইন প্রণয়নে উৎসাহিত করা হয়েছে।

ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্যরা তাদের প্রস্তাবে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ে তুলে ধরতে ইউরোপীয় এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিস, ইইউ প্রতিনিধি ও বাংলাদেশে সদস্যরাষ্ট্রগুলোর দূতাবাসকে অনুরোধ জানিয়েছেন।

 

Comments

The Daily Star  | English

Enforced disappearances: Eight secret detention centres discovered

The commission raised concerns about "attempts to destroy evidence" linked to these secret cells

3h ago