‘১০ অক্টোবর উদ্বোধনের কিছুদিন পর বাণিজ্যিকভাবে চলবে ঢাকা-ভাঙ্গা ট্রেন’
আগামী ১০ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু হয়ে ভাঙ্গা-ঢাকা পথে রেল উদ্বোধন করবেন এবং এর কিছুদিনের মধ্যেই এ পথে বাণিজ্যিকভাবে রেল চলাচল শুরু হবে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ভাঙ্গা রেলওয়ে জংশনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ তথ্য জানান।
এর আগে দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে রেলমন্ত্রী ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু পার হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গার বামনকান্দায় ভাঙ্গা রেলওয়ে জংশনে এসে পৌঁছান।
নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, 'এই রেলের সঙ্গে এ এলাকার মানুষের ভাগ্য জড়িয়ে আছে। এ এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন আজ প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়েছে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় আসার পর রেলকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে যোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে আলাদা করে রেল মন্ত্রণালয় গঠন করেছেন।'
'আমরা রেল ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছি। এর মধ্যে রয়েছে প্রত্যেক জেলাকে রেল পথের সঙ্গে যুক্ত করা, মিটার গেজ ও ব্রড গেজের জায়গায় এক পদ্ধতির রেলপথ চালু করা, সিঙ্গেল লাইনকে ডাবল লাইন করা, রেলকে নদী ও সমুদ্র বন্দরের সঙ্গে সংযুক্ত করা। আগামীতে বিদ্যুৎ-বাহিত রেল চালু করে রেলের উন্নয়ন ঘটানো।'
রেলমন্ত্রী আরও বলেন, 'ভাঙ্গা থেকে মাওয়া পর্যন্ত রেলপথের কাজ ৯৬ দশমিক ৫০ ভাগ, ঢাকা থেকে মাওয়া পর্যন্ত ৮০ ভাগ, ভাঙ্গা থেকে যশোর পর্যন্ত ৭৮ ভাগ শেষ হয়েছে। এ প্রকল্প ২০২৪ সালের জুনে শেষ হবে। তার আগে আমরা সব কাজ করে ফেলতে পারব।'
তিনি বলেন, 'রেল এ দেশর সম্পদ, জনগণের সম্পদ। এ সম্পদ রক্ষা করতে সবার দায়িত্ব পালন করতে হবে। কোনো দুষ্ট লোক প্রতিবন্ধকতা যাতে সৃষ্টি করতে না পারে, সেদিকে সজাগ দৃষ্টি দিতে হবে।'
রেলমন্ত্রী বলেন, 'রেলপথে চলাচলে যাত্রী ও পণ্যের পরিবহনে সময় ও টাকা বাঁচবে। এতে আমাদের জনগণ আর্থিকভাবে লাভবান হবেন।'
'আগামীতে ভাঙ্গা থেকে শুরু করে পটুয়াখালী, বরিশাল, পায়রা হয়ে পর্যটন শহর কুয়াকাটা পর্যন্ত রেল চলবে। ভাঙ্গা ঢাকা পথে রেল চলাচল বাড়বে। অনেক ট্রেনের পথ পরিবর্তন করে পদ্মা সেতু দিয়ে নেওয়া হবে।'
নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, 'বিরোধীদলের ভূমিকা সব সময় বিপরীতমুখী। আমরা রেল বানাই, তারা রেলে আগুন দেয়। একটি ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে রেলের কোনো বিকল্প নেই। এই রেলপথ আগামীতে ট্রান্স এশিয়ান রেলপথের সঙ্গে যুক্ত হবে।'
পরীক্ষামূলক যাত্রার প্রথম এই ট্রেনটির লোকোমাস্টার হিসেবে এনামুল হক এবং সহকারী লোকোমাস্টার হিসেবে এম এ হোসেন ট্রেন চালিয়ে এসেছেন। আর গার্ড হিসেবে ট্রেন পরিচালনা করেছেন আনোয়ার হোসেন। মন্ত্রী আসার পর সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বেলুন উড়ানো হয়।
পরীক্ষামূলক ট্রেনের যাত্রী হিসেবে রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনের সাথে ভাঙ্গায় সফরসঙ্গী হয়েছেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান, জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী, রেলপথ সচিব ড. হুমায়ুন কবীর, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. কামরুল আহসান, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের পরিচালক আফজাল হোসেন, রেলপথ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং রেলওয়ের অন্যান্য কর্মকর্তারা ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন) ও স্থানীয় সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরী, ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার, পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাদাৎ হোসেন।
Comments