কুড়িগ্রাম

নির্মাণের ১৫ দিন পর ধসে গেল সেতু

নির্মাণের ১৫ দিন পর ধসে গেল সেতু
নির্মাণের ১৫ দিন পর বন্যায় ধসে গেছে সেতু। ছবি: এস দিলীপ রায়

নির্মাণের ১৫দিন পর বন্যার পানিতে সেতু ধসে যাওয়ায় চলাচলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ওই এলাকার লোকজন। কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের চর গোরক মণ্ডপ এলাকায় সেতুটি নির্মাণ কাজ শেষ হয় ৩০ জুন, এরপর গত ১৫ জুলাই সেটি ধ্বসে যায়। 

ইউনিয়ন পরিষদের উন্নয়ন তহবিলের ৪ লাখ ৩১ হাজার ২০০ টাকা ব্যয়ে ১০ ফুট দৈর্ঘ্যের সেতুটি নির্মাণ করা হয়। নির্মাণ কাজের ঠিকাদার ছিলেন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নিজেই। 

এলাকাবাসীর অভিযোগ, সেতুটি নির্মাণের জন্য যে বরাদ্দ ছিল তার ৪ ভাগের একভাগ অর্থ ব্যয় করা হয়েছে।

স্থানীয় কৃষক নাসের আলী (৬৫) দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, আগে খালের ওপর বাঁশের সাঁকো ছিল। সেটা ব্যবহার করে চলাচল করতেন। সেতু নির্মাণের পর সেটি ধসে যাওয়ায় এখন চলাচলে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে। 

তিনি আরও জানান, খালের দৈর্ঘ্য প্রায় ৩০ ফুট কিন্তু সেতু নির্মাণ করা হয়েছিল ১০ ফুটের। সামান্য বন্যার পানিতেই সেতুটি ধসে গেছে। সেতুটি নির্মাণে নিম্নমানের ইট, কম পরিমাণে সিমেন্ট এবং সামান্য কিছু রড ব্যবহার করা হয়েছিল। 

শাহার আলী নামে স্থানীয় একজন কৃষক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'খালের ওপর কোনো রকমে সেতুটি নির্মাণের সময় প্রতিবাদ করা হয়েছিল। কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কোনো পাত্তাই দেননি। সরকারি বরাদ্দের ৪ ভাগের একভাগ টাকাও ব্যয় করা হয়নি সেখানে। কোনোরকমে কাজ শেষ করে টাকা আত্মসাতের জন্য ঠিকাদারও নিয়োগ করা হয়নি। চেয়ারম্যান নিজেই ঠিকাদার হয়েছিলেন। আমরা এখন ইজিবাইক, অটো রিকশা নিয়ে চলাচল করতে পারছি না। আবারও আমাদেরকে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করতে হবে।'

এ বিষয়ে নাওডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাছেন আলী দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, সেতুটি নির্মাণ করতে তাকে লোকসান গুণতে হয়েছে। জনগণের স্বার্থে তিনি সেতুর কাজটি মজবুতভাবে করেছিলেন। কাজটি অল্প টাকার হওয়ায় তিনি ঠিকাদার নিয়োগ না করেই নিজেই কাজটি করেছেন। 

তিনি বলেন, 'বন্যার পানির প্রবল স্রোতে সেতুটি ধসে গেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে সেতুটি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এতে আমার কোনো দোষ নেই।'

চেয়ারম্যান আরও বলেন, 'এলজিইডির প্রকৌশলী সেতুটি পরিদর্শন করে আমাকে চূড়ান্ত বিল উত্তোলনের অনুমোদন দেন।'

ওই খালের ওপর আরেকটি সেতু নির্মাণের আবেদন করা হয়েছে, বলেও জানান তিনি।

ফুলবাড়ী উপজেলা এলজিইডির উপসহকারী প্রকৌশল বিপুল মিয়া এ বিষয়ে দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, সিডিউল অনুযায়ী সেতুটির নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছিল। বন্যার পানিতে এটি ধসে গেছে। 

এ ছাড়া তিনি সেতুটি পরিদর্শন করে ইউপি চেয়ারম্যানকে চূড়ান্ত বিল উত্তোলনের সুপারিশ করেছেন বলেও জানান। 

ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সুমন দাস দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সেতুটি নির্মাণে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ও অনিয়মের সত্যতা পাওয়া গেলে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
 

Comments

The Daily Star  | English

US urges China to keep Iran from shutting key trade route

JD Vance says US at war with Iran's nuclear programme, not Iran

1d ago