বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা জানতে ব্লিঙ্কেনকে ৬ কংগ্রেসম্যানের চিঠি

যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভবন। ছবি: রয়টার্স

বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিত করতে মার্কিন সরকার কী ভূমিকা নিচ্ছে তা জানতে চেয়ে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের কাছে চিঠি লিখেছেন ৬ কংগ্রেস সদস্য।

২০২৪ সালের জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচন এগিয়ে আসায় বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটছে উল্লেখ করে চিঠিতে তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

চিঠিতে বলা হয়েছে, 'আমরা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর ও অন্যান্য সংস্থাকে বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় জবাবদিহি নিশ্চিতে ধারাবাহিকভাবে আহ্বান জানাতে অনুরোধ করছি, যার মধ্যে সম্প্রতি নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ পুলিশের আধাসামরিক ইউনিট র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) রয়েছে।'

এতে আরও বলা হয়, 'মার্কিন কর্মকর্তাদের স্পষ্ট ও পুনঃপুনঃ বিবৃতি এবং উদ্যোগ বাংলাদেশ সরকারকে তার মানবাধিকারের বাধ্যবাধকতা মেনে চলা নিশ্চিত করতে সহায়ক হতে পারে। এটি আসন্ন নির্বাচনের প্রস্তুতির জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ইতোমধ্যে বিরোধী দলগুলোর বিরুদ্ধে গণগ্রেপ্তার এবং সহিংসতা হয়েছে, যা নির্বাচনের ফলকে কলঙ্কিত করতে পারে এবং সামাজিক সংঘাতকে আরও গভীর করে তুলতে পারে।'

৬ কংগ্রেস সদস্য হলেন উইলিয়াম আর কিটিং, জেমস পি ম্যাকগভার্ন, বারবারা লি, জিম কস্টা, ডিনা টাইটাস ও জেমি রাসকিন। গত ৮ জুন তারা চিঠিটি লিখেন এবং কংগ্রেস সদস্য উইলিয়াম আর কিটিং তার অফিশিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্টে বিষয়টি জানিয়েছেন।

গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র‌্যাব ও বাহিনীর তৎকালীন বর্তমান ও সাবেক ৭ কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। ওই নিষেধাজ্ঞাকে স্বাগত জানিয়ে এই কংগ্রেস সদস্যরা চিঠিতে লিখেছেন, 'দুর্ভাগ্যজনকভাবে এরপরও বাংলাদেশে দমন–পীড়ন কমেনি।'

চিঠিতে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশি সমাজের অনেককে বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রত্যক্ষ, নথিভুক্ত বা অভিজ্ঞতা সম্পর্কে কথা বলার ক্ষমতা দিয়েছে। 'এর প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশ সরকার সুশীল সমাজের সংগঠন, মানবাধিকার রক্ষাকারী, মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার এবং তাদের পরিবারের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক আচরণ বাড়িয়ে দিয়েছে।' 

কংগ্রেস সদস্যরা বলেছেন, তারা বোঝেন যে- বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার এবং এক মিলিয়ন রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয়দানের বিষয়টিকে তারা প্রশংসা করে। 'একইসঙ্গে ২০২৩ সালের গণতন্ত্র শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ না জানানোর সিদ্ধান্তটি একটি স্পষ্ট সংকেত ছিল যে, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক এবং মানবাধিকার চ্যালেঞ্জগুলোকে স্বীকৃতি দেবে।'

এর আগে, মার্কিন কংগ্রেসের অপর ৬ সদস্য প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে লেখা চিঠিতে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির সমালোচনা করেন। পাশাপাশি বাংলাদেশের মানুষ যাতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন, সে সুযোগ সৃষ্টির জন্য প্রেসিডেন্টকে ভূমিকা রাখার অনুরোধ জানান। এ জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে এবং দায়ী ব্যক্তিদের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের অনুরোধ করেন তারা। 

২ জুন ভার্জিনিয়ার কংগ্রেস সদস্য বব গুড প্রেসিডেন্ট বাইডেনের কাছে লেখা ওই চিঠি নিজের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেন। ওই চিঠিতে স্বাক্ষরদানকারী অন্য ৫ কংগ্রেস সদস্য হলেন স্কট পেরি, ব্যারি মোর, ওয়ারেন ডেভিডসন, টিম বুরচেট ও কিথ সেলফ।

এ ছাড়া, ১২ জুন বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে ভূমিকা রাখতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেলকে একটি চিঠি লেখেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ৬ সদস্য। 

Comments

The Daily Star  | English
The Indian media and Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

11h ago