ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তি পরিপন্থী

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় (ওএইচসিএইচআর) ১১ মাসেরও বেশি সময় আগে সুপারিশ করেছিল, সরকার যেন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২টি ধারা বাতিল এবং ৮টি ধারা সংশোধন করে। সরকার জানায়, তারা সেগুলো বাতিল করবে না, তবে ধারাগুলো পর্যালোচনা করছে।

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সরকার এবং ক্ষমতাসীন দলের কর্মীদের সমালোচনাকারীদের মুখ বন্ধ করার পছন্দের হাতিয়ার হয়ে উঠেছে জিজিটাল নিরাপত্তা আইন। 

ওএইচসিএইচআরের এই আহ্বানের কারণ, সংশ্লিষ্ট ধারাগুলো নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারের আন্তর্জাতিক চুক্তির (আইসিসিপিআর) অনুচ্ছেদ ১৯(৩) বজায় রাখার শর্ত পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। যেখানে মত প্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক স্পষ্ট করে বলেছেন, ধারাগুলো বাতিল করার কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই।

তিনি বলেন, 'বিশ্বব্যাপী প্রায় সব দেশেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো আইন রয়েছে। বাংলাদেশে হ্যাকিংসহ সাইবার অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করা হয়েছে এবং তাই আইনটি বাদ দিয়ে ধারাগুলো বাতিল করার প্রশ্নই আসে না।'

২০১৮ সালের ১ অক্টোবর কার্যকর হওয়া এই আইনের অধীনে ২ হাজারেরও বেশি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

আইনের অপব্যবহারের বিষয়টি আবারও সামনে আসে চলতি বছরের ২৯ মার্চের দিকে। যখন বাংলা দৈনিক প্রথম আলোর সাংবাদিক সামসুজ্জামান শামসের বিরুদ্ধে এই আইনে মামলা দায়েরের কয়েক ঘণ্টা পর তাকে বাড়ি থেকে তুলে নেওয়া হয়।

ওই রাতেই প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান ও শামসের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করা হয়। পরদিন শামসকে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর ৩ এপ্রিল তিনি জামিনে বের হন।

গত ২ এপ্রিল মতিউর রহমানকে ৬ সপ্তাহের আগাম জামিন দেয় হাইকোর্ট।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান ভলকার তুর্ক ৩১ মার্চ বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োগ বন্ধ করার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, 'আমার অফিস ইতোমধ্যেই এই ধরনের আইন সংশোধনের ক্ষেত্রে সহায়তার জন্য বিস্তারিত মতামত জানিয়েছে।'

গত বছরের জুন মাসে 'ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পর্যালোচনায় বাংলাদেশ সরকারের কাছে ওএইচসিএইচআর টেকনিক্যাল নোট' শীর্ষক সুপারিশ জমা দেয় ওএইচসিএইচআর।

বাংলাদেশ ২০০০ সাল থেকে আইসিসিপিআরের একটি অংশীজন এবং সেখানে চুক্তির ১৯ অনুচ্ছেদ বজায় রাখার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

অনুচ্ছেদ ১৯(২) অনুযায়ী, 'প্রত্যেকের মত প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকার থাকবে; এই অধিকারের মধ্যে থাকবে মৌখিকভাবে, লিখিতভাবে বা মুদ্রণে সীমান্ত নির্বিশেষে তার পছন্দের কোনো মাধ্যমে সব ধরনের তথ্য এবং ধারণা অনুসন্ধান, গ্রহণ এবং প্রদানের স্বাধীনতা।'

অনুচ্ছেদ ১৯(৩) বলা হয়েছে, এই নিবন্ধের অনুচ্ছেদ ২ [আর্টিকেল ১৯ (২)] এর জন্য প্রদত্ত অধিকার প্রয়োগের সঙ্গে বিশেষ দায়িত্ব ও কর্তব্য বহন করে। অতএব এটি কিছু বিধিনিষেধের অধীন হতে পারে, তবে এগুলো কেবল আইন দ্বারা প্রদত্ত ও প্রয়োজনীয়: (ক) অন্যের অধিকার বা খ্যাতির সম্মানের জন্য; (খ) জাতীয় নিরাপত্তা বা জনশৃঙ্খলা, অথবা জনস্বাস্থ্য বা নৈতিকতার রক্ষার জন্য।

সংক্ষেপিত: পুরো নিউজটি পড়তে ক্লিক করুন DSA goes against int'l rights treaty

Comments

The Daily Star  | English

Dhaka cannot engage with non-state actors: foreign adviser

Md Touhid Hossain also emphasised that peace and stability in the region would remain elusive without a resolution to the Rohingya crisis

34m ago