ডিএনসিসির সব মার্কেট-বস্তিতে ফায়ার হাইড্রেন্ট বসানো হবে: মেয়র আতিকুল

মেয়র আতিকুল ইসলাম, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, ডিএনসিসি,
রাজধানীর মহাখালী সাততলা বস্তিতে সমন্বিত কমিউনিটি অগ্নিনির্বাপক ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থার আওতায় ফায়ার হাইড্রেন্টের উদ্বোধন করেন মেয়র আতিকুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকার প্রতিটি বস্তি ও মার্কেটে আগুন নেভাতে ফায়ার হাইড্রেন্ট বসানো হবে বলে জানিয়েছেন মেয়র আতিকুল ইসলাম।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর মহাখালী সাততলা বস্তিতে সমন্বিত কমিউনিটি অগ্নিনির্বাপক ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থার আওতায় ফায়ার হাইড্রেন্টের উদ্বোধনে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, '২০২১ সালে যখন সাততলা বস্তিতে আগুন লাগে তখন আমি বলেছিলাম, এখানে ফায়ার হাইড্রেন্ট বসাতে হবে। যেকোনো ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ফায়ার হাইড্রেন্ট বসাতে হবে। আগে আমাদের কোনো বস্তিতে ফায়ার হাইড্রেন্ট বসাতে পারিনি। সাততলা বস্তি দিয়ে শুরু করলাম। পর্যায়ক্রমে অন্য বস্তিতেও বসানো হবে। ফায়ার হাইড্রেন্টে ৬০ হাজার লিটার পানি থাকবে। এই পানি অন্তত ৪০ মিনিটের জন্য ফায়ার সেফটি করতে পারবে। ৪০ মিনিট যদি আমরা টিকে থাকতে পারি, আর রাস্তা যদি খালি থাকে তাহলে কোনো ক্ষতি হবে না। সাততলা বস্তি ফায়ার সেফটির জন্য একটি মডেল। পর্যায়ক্রমে অন্য বস্তিতেও ফায়ার হাইড্রেন্ট বসানো হবে।'

ডিএনসিসি মেয়র বলেন, 'জনবসতি জায়গায় ফায়ার হাইড্রেন্ট লাগবে, ফায়ারড্রিল লাগবে। আগুন লাগলে কারা ফায়ার হাইড্রেন্ট ব্যবহার করবে সেই ভলান্টিয়ার লাগবে। আমরা সাততলা বস্তিতে ১৭ জনকে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। এই ১৭ জন স্বেচ্ছাসেবক এটি ব্যবহার করবে। তারা অন্যদের শিখিয়ে দেবে।'

ফায়ার হাইড্রেন্টে ব্যবহারের জন্য কী কী থাকবে উল্লেখ করে মেয়র বলেন, 'এখানে একটি চৌবাচ্চা, হোসপাইপ ও ১৭ জন ফায়ার ফায়ারড্রিল কর্মী থাকবেন। এখানে আগুন লাগলে সঙ্গে সঙ্গে ঘণ্টা বেজে উঠবে। ফায়ার এলার্ম বাজবে। এই বস্তির মধ্যে ফায়ার এক্সিট দেখানো হয়েছে। আগুন লাগলে কী করবে ও প্রতিটি ঘরে ঘরে যদি ট্রেনিং দিয়ে দেওয়া হয় ইমারজেন্সি সময় কে কোন দিক থেকে বের হবেন তা দেখিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটি একটি মডেল। এটি যদি বাস্তবায়ন করতে পারি পর্যায়ক্রমে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রতিটি বস্তিতে ফায়ার হাইড্রেন্ট বসানো হবে। এখানে ৬০ হাজার লিটার পানি ব্যবস্থা করা হয়েছে। ৪০ হাজার লিটার পানি থাকবে রিজার্ভ ও ২০ লিটার পানি থাকবে গৃহস্থালির কাজের জন্য।'

তিনি বলেন, 'ডিএনসিসির আওতাধীন মার্কেটগুলোতেও ফায়ার হাইড্রেন্টসহ সব নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে। মহাখালী কাঁচাবাজারকে মডেল হিসেবে নির্মাণ করা হবে। এর আলোকে অন্য সব মার্কেটে ফায়ার হাইড্রেন্ট বসানো হবে।'

আগুন লাগলে মোবাইলে সেলফি না তুলে রাস্তা খালি করার আহ্বান জানিয়ে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, 'আমি মেহেরবানি করে বলব, আগুন যখন লাগবে, তখন সেলফি তোলার দরকার নেই। আপনাদের কাজ হচ্ছে রাস্তা খালি করে ফায়ার সার্ভিস ও উদ্ধার কর্মীদের কাজ করতে দেওয়া।'

'সম্প্রতি গুলশানে যখন আগুন লাগল সবাই দেখি সেলফি তুলছেন, রাস্তা তখন বন্ধ। রোড ব্লক করে দিয়ে বলছেন দেখি না কী হয়। দেখি না কী হয় ভাববার সময় তখন না। আগুনে যারা আটকা পড়েছেন তাদের উদ্ধারে আশপাশের ছোট রোড খালি করে দিতে হবে। রাস্তা খালি না থাকলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা কীভাবে আসবেন। আগুন নেভানোর যন্ত্রাংশ কীভাবে আসবে। ওখানে ২১ জন মানুষ ছিলেন তাদের জীবন বিপন্ন হয়ে যাচ্ছিল। আমি নিজে গিয়ে চিল্লাচিল্লি করে রাস্তা খালি করেছি।'

শহরে খাল-জলাশয় দখল হয়ে গেছে জানিয়ে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, 'যখন আগুন লাগে তখন পানি থাকে না। পানি নাই, পানি নাই হাহাকার কারবালার প্রান্তর হয়ে গিয়েছে। আমাদের খাল, জলাশয় দখল করে বিল্ডিং করা হয়েছে। তাই পানি নেই। জলাধার, মাঠ বাড়াতে হবে। গাছ লাগাতে হবে। খালে পানি থাকলে, বেশি গাছ থাকলে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। মাঠ থাকলে বাচ্চাদের খেলার সুযোগ হবে।'

Comments

The Daily Star  | English
The Indian media and Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

14h ago