বগি লাইনচ্যুত-রেল লাইন বেঁকে যাওয়ায় পূর্বাঞ্চলে ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়
মালবাহী ট্রেনের বগি লাইনচ্যুত ও অত্যধিক গরমে রেল লাইন বেঁকে গিয়ে টানা ৩ দিন এক লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের শিডিউল বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
ওই রেলপথে চলাচলকারী ঢাকা অভিমুখী অধিকাংশ ট্রেন বিলম্বে যাতায়াত করায় দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার রফিকুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, গত বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে একটার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার দাড়িয়াপুর এলাকায় মালবাহী একটি ট্রেনের ৭টি বগি লাইনচ্যুত হওয়ায় প্রায় ৫০০ মিটার রেললাইন ক্ষতিগ্রস্ত এবং স্লিপার ভেঙে যায়। দুর্ঘটনার পর থেকে আপ লাইনে চট্টগ্রাম-সিলেটের সঙ্গে ঢাকার ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে। ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর ওই রেললাইনে ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে ট্রেন চলাচল না করতে রেলওয়ের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
রেলওয়ের ওই কর্মকর্তা আজ শনিবার বিকেলে জানান, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ঢাকা অভিমুখী মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেন চট্টগ্রাম থেকে ৪ ঘণ্টা বিলম্বে ছেড়েছে। এ ছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে ট্রেনের বগি লাইনচ্যুত ও রেল লাইন বেঁকে যাওয়ার ঘটনায় চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকা অভিমুখী চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেন দুপুর ১টা ২৮ মিনিটের পরিবর্তে বেলা ৩টায় স্টেশন ছেড়ে গেছে। একই পথে চলাচলকারী সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনটি সকাল সাড়ে ১০টার পরিবর্তে বেলা পৌনে বারোটায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশন অতিক্রম করে। সিলেট থেকে ছেড়ে আসা ঢাকা অভিমুখী জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ট্রেন বিকেল ৪টা ২০ মিনিটের পরিবর্তে সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় ছেড়ে গেছে। একই পথে চলাচলকারী কালনি এক্সপ্রেস ট্রেনটি ১০টা ৩৮ মিনিটের পরিবর্তে ১২টা ৫ মিনিটে ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশন অতিক্রম করে।
তিনি জানান, বগি লাইনচ্যুত হওয়ার প্রায় ২৮ ঘণ্টা পর শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে উদ্ধার কাজ সমাপ্ত করা হলেও লাইন মেরামতের কাজ বাকি থাকায় আপ লাইনে ট্রেন চলাচল শুরু করা যায়নি। তবে দুর্ঘটনার পরও ডাউন লাইনে (ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ও সিলেটমুখী) ট্রেন চলাচল অব্যাহত ছিল।
আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, পূর্বাঞ্চল রেলওয়েতে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট রুটে প্রতিদিন মালবাহী ও যাত্রীবাহী আপ-ডাউন মিলিয়ে মোট ৫৮ থেকে ৬০টি ট্রেন চলাচল করে।
বর্তমানে এই রেলরুটের ঢাকা অভিমুখী ট্রেনগুলো নির্ধারিত সময়ে চলাচল না করায় যাত্রীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তবে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে অগ্রিম টিকেটধারী যাত্রীদের।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে নিয়মিত ঢাকায় যাতায়াতকারী যাত্রী রফিকুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, গত বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে ঢাকাগামী প্রতিটি ট্রেনই দেড় থেকে ৩ ঘণ্টা বিলম্বে আসছে। ফলে আমরা কাঙিক্ষত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছি না।
Comments