দুর্যোগকালীন ত্রাণ বিতরণ না করে নষ্টের অভিযোগ ইউএনওর বিরুদ্ধে
প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া দুর্যোগকালীন ২২১ প্যাকেট ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ না করে গোডাউনে রেখে নষ্টের অভিযোগ উঠেছে বগুড়ার ধুনট উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার মোহন্তের বিরুদ্ধে।
বিষয়টি খতিয়ে দেখতে আজ শুক্রবার এক সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, ধুনটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার মোহন্ত গত ৭ মার্চ বদলি হন রাজশাহী গোদাগাড়ী উপজেলায়। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে তিনি বাংলোর গোডাউন থেকে ২২১ প্যাকেট দুর্যোগকালীন ত্রাণ সামগ্রী উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হাই খোকনের কাছে হস্তান্তর করেন। এ সময় ত্রাণ সামগ্রী নষ্টের বিষয়টি জনসমক্ষে আসে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্ৰধানমন্ত্ৰী ত্রাণ সামগ্রীগুলো দিয়েছিলেন গরিব-দুঃখীদের জন্য। কিন্তু ইউএনও তা না দিয়ে ফেলে রেখে নষ্ট করেছেন। তিনি তার ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন।'
ধুনট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হাই খোকন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ত্রাণগুলো গত বছরের আগস্ট মাসে বরাদ্দ পেয়েছেন ইউএনও। এর মধ্যে ডাল, তেল, লবণ, চাল, চিড়া, চিনিসহ ১৪-১৫ কেজি মালামাল ছিল। প্যাকেটগুলো গতকাল তিনি আমার কাছে হস্তান্তর করেন। এর মধ্যে কিছু প্যাকেট ইঁদুর কেটে নষ্ট করেছে। আর কিছু প্যাকেট মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে।'
বেশিরভাগ প্যাকেট বিতরণ করলেও এই ২২১ প্যাকেট তিনি ঘূর্ণিঝড় বা অন্য কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য রেখেছিলেন বলে জানিয়েছিলেন।
চেয়ারম্যান বলেন, 'আমাদের উপজেলায় কোনো খাদ্য গোডাউন নেই। খাবারগুলো যেখানে রাখা হয়েছিল সেখানকার পরিবেশ ভালো ছিল না।'
সরকারি ত্রাণ বিতরণ না করে নষ্টের বিষয়ে জানতে একাধিকবার ফোন করলেও ইউএনও সঞ্জয় কুমার মোহন্ত রিসিভ করেননি।
জানতে চাইলে বগুড়ার জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'খবরটি বিভিন্নভাবে গণমাধ্যমে এসেছে। পরে আমি ইউএনও এবং উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে জানতে চাই। তারা বলেছেন যে প্যাকেটগুলো দুর্যোগকালীন ত্রাণ, গত আগস্ট মাসে উপজেলায় এসেছিল। এর মধ্যে বেশিরভাগ ত্রাণ ইউএনও গত বন্যার সময় বিতরণ করেছেন। কিছু ত্রাণ তিনি রেখে দিয়েছিলেন পরবর্তী দুর্যোগের সময় বিতরণের জন্য।'
'বদলিজনিত কারণে গতকাল প্যাকেটগুলো পুরোনো বাংলো থেকে উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে হস্তান্তর করেন। এর মধ্যে কিছু প্যাকেট ইঁদুর নষ্ট করেছে, কিছু প্যাকেট মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে,' বলেন তিনি।
বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক মাসুম আলী বেগকে তদন্তের আদেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক।
তিনি বলেন, 'কী কারণে ত্রাণ বিতরণ করা হয়নি, কতটুকু নষ্ট হয়েছে তদন্তের পরে জানা যাবে। এ ঘটনায় ইউএনওর অবহেলা পাওয়া গেলে, ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
Comments