৫৮০ টাকা দরে গরুর মাংস বিক্রি করে আলোচনায় ব্যবসায়ী

গরুর মাংস, বগুড়া, গাবতলী,
মাংস ব্যবসায়ী মো. নজরুল ইসলাম কালুর দোকান। ছবি: মোস্তফা সবুজ/স্টার

বগুড়া গাবতলী উপজেলার নশিপুর গ্রামের মাংস ব্যবসায়ী মো. নজরুল ইসলাম কালু। কেজিপ্রতি ৫৮০ টাকা দরে গরুর মাংস বিক্রি করে সাড়া ফেলেছেন তিনি। তার মাংস বিক্রির খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আশপাশের জেলাতেও তাকে নিয়ে আলোচনা তৈরি হয়।

সারা দেশে গরুর মাংস যখন ৭০০ টাকা কেজি তখন আপনি ৫৮০ টাকাতে কীভাবে বিক্রি করছেন জানতে চাইলে নজরুল ইসলাম কালু ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এক বছর আগে বাগবাড়ী বাজারে গরুর মাংসের ব্যবসা করতাম। সেখানে ইজারাদারদের সঙ্গে ঝামেলা হলে চলে আসি। পরে আমার গ্রামের রাস্তার পাশে মাংসের দোকান দেই এবং ৫০০ টাকা কেজিতে মাংস বিক্রি শুরু করি। এরপরে ৫৫০ টাকা, তারপর রমজানের শুরু থেকে ৫৮০ টাকা দরে বিক্রি করছি।'

'আমি দিনে ৪-৮টা গরু জবাই করি। আমার এখানে মাংসের চাহিদা বেশি। তবে, আমার দোকানের কোনো খরচ নেই। বাজারের দোকান হলে প্রতিদিন ৩-৪ হাজার টাকা খরচ হয়। এখানে সেই খরচ নেই। এছাড়া আমি তেমন লাভও করি না। ৪-৫টা গরুর মাংস বিক্রি করলে প্রতিদিন আমার ৫-৬ হাজার টাকা লাভ হয়। এর মধ্যে ৬ জন কর্মচারীকে দিতে হয় ৩ হাজার টাকা। আমার লাভ হয় ২-৩ হাজার টাকা। এ কারণে কম দামে মাংস বিক্রি করতে পারছি', বলেন তিনি।

তবে, আজ বৃহস্পতিবার নজরুল ইসলাম কালুর মাংসের দোকানে গিয়ে দেখা যায়- যারা ৫ কেজি, ১০ কেজি বা ২০ কেজি মাংস কিনতে এসেছেন তারাই মাংস কিনতে পারছেন। কিন্তু, ১ কেজি বা ২ কেজি মাংস কিনতে এসে অনেকেই পাননি। পরে তারা হতাশ হয়ে ফিরে যান।

বগুড়া শাজাহানপুর উপজেলার সুজাবাদ গ্রাম থেকে আসা আবু বক্কর (৫৫) সকাল ৮ থেকে ২ কেজি মাংসের জন্য অপেক্ষায় ছিলেন। কিন্তু, তার কাছে মাংস বিক্রি করা হয়নি বলে এই সংবাদদাতাকে জানান তিনি।

আবু বক্কর বলেন, 'এখানে বাজারের তুলনায় কম দামে মাংস বিক্রি হয় শুনে ৭-৮ কিলোমিটার দূর থেকে এসেছিলাম। সকাল থেকে অপেক্ষা করছি, কিন্তু আমার কাছে মাংস বিক্রি করা হয়নি। যারা ৫ কেজির বেশি মাংস কিনতে এসেছেন, শুধু তাদের কাছেই মাংস বিক্রি করা হচ্ছে।'

আবু বক্করের এই দাবির বিষয়ে নিয়ে জানতে চাইলে প্রথমে বিষয়টি অস্বীকার করেন মাংস ব্যবসায়ী কালু। পরে তিনি এই সংবাদদাতাকে বলেন, 'এখানে মাংসের চাহিদা বেশি। তাই যারা বেশি নিতে আসেন তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। তবে, যারা ১ বা ২ কেজি নিতে আসেন তাদেরও দেওয়া হয়। প্রয়োজনে যারা ১ কেজি, হাফ কেজি বা ২ কেজি মাংস কিনতে আসবেন তাদের জন্য আলাদা দোকান দেব।'

স্থানীয়রা জানান, দাম কম হওয়ায় দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ এসে মাংস কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। চাহিদা বেশি হওয়ায় যারা ১ কেজি মাংস কিনতে আসছেন তারা এখন পাচ্ছেন না।

ঢাকায় চাকরি করেন সাহিদুর রহমান, অফিসের প্রয়োজনে বগুড়ায় এসে জানতে পারেন ৫৮০ টাকা কেজিতে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে। পরে তিনি ২০ কেজি মাংস কিনেছেন বলে জানান। আরেক বেসরকারি চাকরিজীবী আনোয়ার চৌধুরী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খবর শুনে মাংস কিনতে আসেন। কিন্তু, সকাল ১০টায় এসে তিনি দেখেন সব মাংস শেষ।

Comments

The Daily Star  | English

Why are onion prices rising abruptly?

Onion prices have been increasing over the past weeks, as farmers and traders release fewer stocks to local markets in the hope of better returns amid the government’s suspension of imports

2h ago