শামসুজ্জামানের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে সাভারে মানববন্ধন, জাবিতে বিক্ষোভ

আশুলিয়া প্রেসক্লাবের সামনে সাংবাদিকদের মানববন্ধন। ছবি: স্টার

প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামসকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে বাসা থেকে তুলে নেওয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন সাভার, আশুলিয়া ও ধামরাইয়ে কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা।

এসময় তারা অবিলম্বে শামসুজ্জামান শামসের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান।

আজ বুধবার বিকেল ৪টায় আশুলিয়া প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় আশুলিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি মোজাফফর হোসেন জয় বলেন, 'অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, ভোর ৪টায় ঘুম থেকে উঠিয়ে সিআইডি পরিচয়ে শামসুজ্জামানকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর থেকে আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করলে কেউই তার আটকের বিষয় নিশ্চিত করেনি। অবশেষে দুপুরের দিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছ থেকে আমাদের জানতে হয় শামসকে একটি মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা আগে দেখতাম জঙ্গি, বড় বড় অপরাধী ধরলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বক্তব্য আসে, আজ একজন সাংবাদিককে আটক করা হয়েছে কি না সেটিও আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মাধ্যমে জানতে হয়, তাহলে আমরা কোন কাতারে আছি? আমরা এই ঘটনার প্রতিবাদ জানাই এবং অবিলম্বে তার মুক্তি চাই।'

আশুলিয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম লিটন বলেন, 'সাংবাদিককে রাতের আধারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ১৬ জনের একটি টিম সাদা পোশাকে তার বাসা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক একটি নিদর্শন। সংবাদ সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো অভিযোগ থাকলে প্রেস কাউন্সিলের মাধ্যমে সেটি সমাধান করা যেত। কিন্তু সেটি না করে একজন ক্রিমিনাল ও সন্ত্রাসীকে সেভাবে তুলে নেওয়া হয়, একইভাবে একজন সাংবাদিককেও তুলে নেওয়া হলো। এটি স্বাধীন গণমাধ্যম পরিপন্থী এবং একইসঙ্গে অত্যন্ত ন্যক্কারজনক একটি উদাহরণ। আমরা শামসুজ্জামান শামসের নিঃশর্ত মুক্তি চাই।'

সাভার প্রেসক্লাবের সভাপতি নাজমুস সাকিব ও সাধারণ সম্পাদক গোবিন্দ আচার্যও শামসুজ্জামান শামসকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। ছবি: সংগৃহীত

শামসুজ্জামান শামসকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরাও।

বিকেল সোয়া ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বর থেকে মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সমাবেশ করেন তারা। এসময় শিক্ষার্থীরা শামসুজ্জামানের মুক্তির দাবি জানান।

বিক্ষোভ সমাবেশে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী তাপসী দে প্রাপ্তি বলেন, 'সাদা পোশাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার যে সংস্কৃতি রাষ্ট্র তৈরি করেছে, এই সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে। সরকার যখনই দেখে কেউ সত্য তুলে ধরছে তখনই তার মুখ চেপে ধরে। জামিনে নয়, শামসুজ্জামানকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে।'

বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরাও অংশ নেন।

এসময় ছাত্র ইউনিয়নের সহ-সাধারণ সম্পাদক ঋদ্ধ অনিন্দ্য গাঙ্গুলী বলেন, 'ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করতে হবে। সরকার তার প্রয়োজনের সময় অসৎ উদ্দেশ্যে এই আইন ব্যবহার করছে। নিকৃষ্ট উপায়ে সাদা পোশাকে ভোর রাতে এসে রাষ্ট্রীয় গুন্ডাবাহিনী সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে তুলে নিয়ে গেছে।'

প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী সুদীপ্ত দে বলেন, 'কোনো সংবাদে আপত্তি থাকলে তার বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া আছে। কিন্তু এখানে অন্যায়ভাবে সাংবাদিককে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হোক। একইসঙ্গে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হোক।'

এর আগে, বিকেল সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে একই দাবিতে মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীদের অপর একটি অংশ।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি ও ছাত্র ইউনিয়নের জাবি সংসদও শামসুজ্জামানকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Riyad-led gang forcibly took cheques of Tk 5cr from another ex-AL MP

The cheques police recovered from the house of Riyad worth around Tk 2.25 crore belonged to former AL lawmaker Abul Kalam Azad

2h ago