হ্যাকাররা কোনো মুক্তিপণ চায়নি: বিমান প্রতিমন্ত্রী

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ইমেইল সার্ভার হ্যাক করা চক্র কোনো মুক্তিপণ চায়নি বলে দাবি করেছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী।

তিনি আরও বলেন, 'এ ঘটনায় বিমানের তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি।'

রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আজ রোববার দুপুরে 'মুজিবের বাংলাদেশ' শীর্ষক স্মারকগ্রন্থের অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

এ সময় মাহবুব আলীর পাশে থাকা বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শফিউল আজিমও বলেন, মুক্তিপণ দাবি করা সংক্রান্ত কোনো তথ্য তাদের কাছে নেই।

গত ১৮ মার্চ রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন উড়োজাহাজ সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ইমেইল সার্ভার হ্যাক হয়।

বিমান সূত্রমতে, ২১ মার্চ হ্যাকাররা জানায়, তাদের কাছে বিমানের ১০০ গিগাবাইটের বেশি ব্যক্তিগত ও গোপনীয় তথ্য রয়েছে। এ ছাড়া বিমানের অভ্যন্তরীণ নেটওয়ার্ক থেকে অনেক ডেটাবেজ তারা ডাউনলোড করে রেখেছে। বিমান যদি তাদের দাবি মেনে না নেয়, তাহলে তারা নিজেদের ব্লগে এগুলো প্রকাশ করে দেবে। এরপর ২২ মার্চ হ্যাকাররা বিমানকে আরেকটি বার্তা পাঠায়। ওই বার্তায় বলা হয়, 'গণমাধ্যমে আপনারা বলছেন, কোনো তথ্য ফাঁস হয়নি। কিন্তু আপনারা ভুল।'

ফ্লাইট সংক্রান্ত তথ্য, বিমানের যাত্রী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাসপোর্টের তথ্যসহ আর বেশ কিছু তথ্য হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে বলেও হ্যাকাররা বিমানকে জানায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ১০ দিনের সময় বেঁধে দিয়ে হ্যাকাররা বিমানের কাছে ৫ মিলিয়ন ডলার দাবি করে। অন্যথায় সব তথ্য ফাঁস করে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেয় তারা।

এ ঘটনার ৬ দিন পর গত ২৩ মার্চ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিমান জানায়, তাদের ইমেইলের সার্ভার র‍্যানসমওয়্যার আক্রান্ত হয়েছে।

হ্যাকাররা বিমানের কাছে ৫ মিলিয়ন ডলার দাবি করেছে— এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী আজ সাংবাদিকদের বলেন, 'হ্যাকাররা টাকা দাবি করেছে বলে যে কথাটা উঠেছে সেটি সঠিক নয়। এ ধরনের কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই। এ বিষয়ে বিমান আনুষ্ঠানিক প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। টাকা দাবি করার ঘটনা ভিত্তিহীন। এ ধরনের কোনো প্রমাণ আমাদের কাছে নেই।'

হ্যাকাররা বেশি ক্ষতি করতে পারেনি জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'হ্যাকাররা ফায়ারওয়ালের ভেতরে প্রবেশ করতে পারেনি। এ কারণে তারা ক্ষতিও বেশি করতে পারেনি। তারা তেমন কোনো তথ্য নিতে পারেনি। সাইবার অ্যাটাক হলে যা কিছু করতে হয়, তা বিমানের পক্ষ থেকে করা হয়েছে। জিডি করা হয়েছে, সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।'

এ সময় পাশে থাকা বিমানের এমডি শফিউল আজিমও বলেন, 'টাকা চাওয়ার বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই।'

কেন ৯ দিনেও বিমানের ইমেইল সার্ভার হ্যাকারদের কাছ থেকে উদ্ধার করা যায়নি, জানতে চাইলে এমডি শফিউল আজিম বলেন, 'বিমানের পরিচালনায় বা অপারেশনাল কোনো কাজে কোনো ব্যাঘাত ঘটেনি, যথারীতি কাজ করছে। কোনো বিষয়ে অসুবিধা হয়নি। আজকেও কাজ চলছে। আমরা আশা করি, আগামীকাল সোমবার তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে এ ঘটনার একটি পরিপূর্ণ চিত্র দিতে পারব।'

বিমান সাইবার হামলার শিকার হতে পারে—এমন আগাম সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছিল কি না জানতে চাইলে শফিউল আজিম বলেন, 'এ ধরনের কোনো সতর্কবার্তা দেওয়া হয়নি। যৌথভাবে বিশেষজ্ঞ দল কাজ করছে। এই দলের কাজ শেষ হলে জানা যাবে। তবে বিমানের বড় ধরনের কোনো ক্ষতি হয়নি।'

বিমানের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় গাফিলতির কারণে হ্যাকাররা এ ঘটনা ঘটাল কি না, জানতে চাইলে এমডি বলেন, 'আমাদের কোনো ঘাটতি থেকে থাকলে সেগুলো আমরা সামনে তুলে নিয়ে আসব। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা কীভাবে ঠেকানো যায় সেটি নিয়েও বিমান কাজ করবে।'

 

Comments

The Daily Star  | English
Khaleda Zia calls for unity

Khaleda urges unity, quick action to institutionalise democracy

She also demanded a comprehensive list of victims of abduction, murder, and extrajudicial killings

2h ago