ভাড়া নিয়ে বচসা, ছুরি হাতে যাত্রীকে তাড়া করলেন হেলপার

মারধরে ছিঁড়ে যাওয়া জামা এক পুলিশ সদস্যকে দেখাচ্ছেন আক্রান্ত নুরুন্নবী। ছবি: স্টার

ভাড়া নিয়ে বচসার জের ধরে এক যাত্রীকে মারধর ও ছুরি নিয়ে তাড়া করার অভিযোগ উঠেছে ট্রাস্ট ট্রান্সপোর্ট সার্ভিসের একটি বাসের হেলপারের বিরুদ্ধে।

আজ সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে রাজধানীর ইসিবি চত্বর থেকে কারওয়ানবাজারের দিকে আসার পথে এ ঘটনা ঘটে।

আক্রান্ত বাসযাত্রী নুরুন্নবী একজন সংবাদকর্মী। তিনি একটি দৈনিক পত্রিকায় সহসম্পাদক হিসেবে কাজ করেন।

নুরুন্নবী দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, ইসিবি চত্বর থেকে তিনি কারওয়ান বাজারে আসার জন্য ট্রাস্ট ট্রান্সপোর্ট সার্ভিসের একটি বাসে ওঠেন। হেলপার ভাড়া চাইলে তিনি তাকে এই পথের জন্য ২৫ টাকা দেন। কিন্তু সহকারী তার কাছে আরও ৫ টাকা বেশি চান। এই নিয়ে বচসার এক পর্যায়ে বাসের সহকারী তাকে মারধর শুরু করলে অন্য সহযাত্রীরা তাকে থামান।

নুরুন্নবী বলেন, 'বাসের হেল্পার আমার জামা ছিঁড়ে ফেলে। চড়থাপ্পড়ের পাশাপাশি শক্ত কিছু দিয়ে আমাকে আঘাত করে।'

নুরুন্নবীর ভাষ্য, পরে তিনি ফার্মগেট পার হয়ে তেজতুরি বাজার ফুটওভার ব্রিজের কাছে নেমে যান। সেখানে ছেঁড়া জামা খুলে ফুটপাত থেকে একটি গেঞ্জি কিনে পরে নেন। এ সময় ওই বাসটিই কারওয়ান বাজার ঘুরে আবার ফার্মগেটের দিকে আসতে থাকে। তখন তিনি আবার সেই হেলপারকে তার দিকে আসতে দেখে ভয়ে একটি মিষ্টির দোকানে ঢুকে পড়েন। এ সময় হেলপার ওই দোকান থেকে একটি ছুরি নিয়ে তাড়া করলে আশপাশের লোকজন তাকে থামান। এ সময় জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে সাহায্য চান নুরুন্নবী।

ফার্মগেট কাউন্টারে ট্রাস্ট ট্রাস্টপোর্ট সার্ভিসের একটি বাস। ছবি: স্টার

নুরুন্নবীর অভিযোগ, ট্রাস্ট ট্রান্সপোর্ট সার্ভিসের বাসগুলোতে সব সময় সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হয়। এই কোম্পানির বাসগুলোতে ভাড়ার কোনো তালিকাও টানানো থাকে না। এ নিয়ে প্রায়ই যাত্রীদের সঙ্গে ঝামেলা হয়।

দুপুর ২টার পর একজন পুলিশ সদস্য ফার্মগেটে এসে নুরুন্নবীকে সঙ্গে নিয়ে ফার্মগেটে ট্রাস্ট ট্রান্সপোর্টের কাউন্টারে যান। সেখানে দায়িত্বরত ব্যক্তিকে বিষয়টি খুলে বললে অভিযুক্তকে খুঁজে বের করা তোড়জোড় চলে। দেখা যায়, নুরুন্নবীর হাত ও পায়ের চামড়া ছিলে রক্ত বেরিয়ে গেছে। জামার বোতাম ছেঁড়া। দুয়েক জায়গায় রক্তের দাগ।

এ সময় ফার্মগেট ছেড়ে যেতে থাকা ট্রাস্ট ট্রান্সপোর্টের আরেকটি বাসের এক যাত্রী নুরুন্নবীর সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার বর্ণনা দেন। এর আগে নুরুন্নবী যে বাসে এসেছিলেন, সেই বাসে তার সহযাত্রী ছিলেন মো. মনির হোসেন নামের ওই ব্যক্তি।

মনির হোসেন বলেন, 'ওনার (নুরুন্নবী) গায়ে হাত তোলার মতো কোনো পরিস্থিতি ছিল না। আমরা বাসের অন্য যাত্রীরা না থামালে ওনাকে আরও মারত।'

বিষয়টি নিয়ে কথা হয় সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মো. বিল্লালের সঙ্গে। তিনি ট্রাস্ট ট্রান্সপোর্ট সার্ভিসের বাসগুলোর চলাচল দেখভাল করেন। ডেইলি স্টারকে বিল্লাল বলেন, 'আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটলে আমরা তদন্তসাপেক্ষে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেই।'

এ সময় অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও ভাড়ার তালিকা না থাকার অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের কোনো প্রশ্নই ওঠে না। ভাড়ার তালিকাও টানানো থাকার কথা। তবে একটি দুটি বাসে এটা নাও থাকতে পারে।'

তিনি আরও বলেন, 'সব মানুষ তো এক রকম না। কেউ হয়তো কোনোভাবে এটা করে ফেলেছে। আপনারা বিষয়টি একটু দেখেন।'

Comments

The Daily Star  | English

‘July Warriors' tax-free income limit to be Tk 525,000 from FY27 

The tax-free income limit for war-wounded freedom fighters has been increased to Tk 525,000 from FY27 from Tk 500,000 at present.

1h ago