টেকনাফে ৭০ রোহিঙ্গার সাক্ষাৎকার নিল মিয়ানমার প্রতিনিধি দল

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের জন্য তালিকা যাচাই-বাছাই করছে মিয়ানমারের একটি টেকনিক্যাল দল।

আজ বুধবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে ২২ সদস্য বিশিষ্ট দলটি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সমাজ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী অং মিয়োর নেতৃত্বে কক্সবাজারের টেকনাফে পৌঁছে।

দলটি প্রথমে বন্দরের রেস্ট হাউজে উঠে। সকাল ১১ টার দিকে তারা যাছাই-বাছাইয়ের  কার্যক্রম শুরু করে। পরে তাদের মধ্যে ৫ জন পরে মিয়ানমারে ফিরে যান। প্রতিমন্ত্রী ছাড়া দলের অন্যান্য সদস্যরা মিয়ানমার অভিবাসন ও জনসংখ্যা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা।

অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার সামছুদ্দৌজা নয়ন এসব তথ্য জানিয়েছেন।

এদিকে সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ থেকে পাঠানো তালিকা যাচাই-বাছাই করতে মিয়ানমার প্রতিনিধি দল টেকনাফ এসেছে। প্রথম দিন সকাল থেকে ২০ রোহিঙ্গা পরিবারের ৭০ জন রোহিঙ্গার সাক্ষাৎকার নিয়েছে প্রতিনিধি দলটি। কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্হায় বাসে করে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের লেদা-নয়াপাড়া ক্যাম্পে বসবাসকারী ওই ৭০ রোহিঙ্গাকে টেকনাফ স্থল বন্দরের ভেতরে রেস্টহাউজের সামনে তৈরি করা প্যান্ডেলে নিয়ে যাওয়া হয়।

সেখানে প্রতিটি পরিবারের লোকজনকে ডেকে যাচাই-বাছাই করা হয়। মিয়ানমার দলের সদস্যরা রোহিঙ্গাদের নাম, পরিচয়, ঠিকানা, পেশা ইত্যাদি বিষয়ে তথ্য নেন। এ সময় রোহিঙ্গারা বলেন, তারা তাদের নিজ জন্মভূমিতে ফিরে যেতে চান।  

এ সময় শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের (আরআরআরসি) প্রতিনিধিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সাক্ষাৎকার দিয়ে ফেরা অনেক রোহিঙ্গা জানিয়েছেন, তারা মিয়ানমারের কোন জেলায়, কোন মহকুমা, কোন থানা ও গ্রামে বসবাস করতেন, তাদের প্রতিবেশী কারা কারা ছিলেন ইত্যাদি বিষয় জানার চেষ্টা করেছে প্রতিনিধি দলটি।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মিয়ানমারকে ৮ লাখ ৮২ হাজার রোহিঙ্গাদের একটি তালিকা দেওয়া হয়। এরপর মিয়ানমারের পক্ষ থেকে ৬৮ হাজার রোহিঙ্গার একটি ফিরতি তালিকা পাঠানো হয় বাংলাদেশকে। মিয়ানমার ওই তালিকা থেকে একই পরিবারের কোনো কোনো সদস্যকে বাদ দেয়। তালিকা ধরে বাদ পড়া ওইসব রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলতে দলটি বিশেষ আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তারা তালিকা থেকে কেন বাদ পড়েছেন তা এবং তাদের দলিলপত্র দেখবে দলটি।

অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার  সামছুদ্দৌজা নয়ন বলেন, '২ দেশের পাঠানো তালিকা যাচাই-বাছাই করতে মিয়ানমারের টেকনিক্যাল দলের ১৭ সদস্য বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। তারা ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছেন। বেশ কয়েকদিন এখানে অবস্হান করে তারা যাচাই-বাছাইয়ের কাজ করবেন।'

এদিকে বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিয়ানমার অনুবিভাগ শাখার সহকারী সচিব বিশ্বজিত দেবনাথের সই করা ১৪ মার্চের একটি পত্রে বলা হয়, 'বাংলাদেশে আশ্রিত জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের মিয়ানমারে অতীত আবাসন নিশ্চিত করার জন্য মিয়ানমারের ২২ সদস্যের একটি টেকনিক্যাল টিম আনুমানিক ২০০টি রোহিঙ্গা পরিবারের সরাসরি সাক্ষাৎকার গ্রহণ  করবে। প্রতিদিন মংডু থেকে টেকনাফ আসার পরিবর্তে ওই টেকনিক্যাল টিম  ১৫ মার্চ  থেকে আনুমানিক ২২ মার্চ পর্যন্ত টেকনাফে অবস্থান করবে এবং প্রতিদিন আনুমানিক ৭০ জন রোহিঙ্গাদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করবে। সাক্ষাৎকারে অংশগ্রহণের জন্য রোহিঙ্গারা প্রতিদিন ক্যাম্প থেকে বাসযোগে স্থল বন্দরে যাতায়াত করবে।'

Comments

The Daily Star  | English

Push for influence-free police force stalls

The formation of an independent police commission now appears highly unlikely under the current government, as the home ministry has excluded the proposal from its action plan for the coming year.

4h ago