স্কুলে নেই শহীদ মিনার, ব্যানার ঝুলিয়ে ভাষা শহীদদের স্মরণ
ব্যানারে থাকা শহীদ মিনারের ছবি বিদ্যালয়ের বারান্দার দরজার গ্রিলের সঙ্গে ঝুলিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার দিবস পালন করেছেন বান্দরবানের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
স্কুলে কোনো শহীদ মিনার না থাকায় বান্দরবানের রুমা উপজেলার পলিকা পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার দিবসে গতকাল মঙ্গলবার এভাবেই ভাষা শহীদদের স্মরণ করেন।
পালিকা পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক জলিমং মারমা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিদ্যালয়ে কোনো শহীদ মিনার বা স্মৃতিসৌধ নেই। পাহাড়ের কোমলমতি শিশুরা পাঠ্যবইয়ে ইতিহাস পড়তে পারলেও বাস্তবে শহীদ মিনার বা স্মৃতিসৌধ দেখেনি।'
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বান্দরবানের অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসায় শহীদ মিনার নেই। তাই পালনও করা হয় না আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। তবে পাহাড়ে কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোনোটিতে কলাগাছ, বাঁশ বা গাছের গুড়ি দিয়ে, আবার কোনটিতে পোস্টারে থাকা ছবি ঝুলিয়ে অস্থায়ীভাবে শহীদ মিনার বানিয়ে ভাষা শহীদদের স্মরণ করা হয়। কোনো কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আবার দিবসটি পালনই করা হয় না। কিছু মাদ্রাসায় শুধু মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের মধ্য দিয়ে ভাষা শহীদদের স্মরণ করা হয়।
বান্দরবান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তথ্য মতে, জেলায় ৪৩৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে প্রায় ৩৮ হাজার শিক্ষার্থী। সেগুলোর মধ্যে ১৩টি ছাড়া বাকি ৪২২টিতে নেই শহীদ মিনার ও শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভ।
বান্দরবানের জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সফিউল আলম জানান, জেলার অধিকাংশ স্কুলে শহীদ মিনার না থাকলেও বিশেষ জাতীয় দিবসে স্কুলগুলো খোলা রাখা হয় এবং সব স্কুলে জাতীয় দিবসের তাৎপর্য নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা হয়।
তিনি বলেন, 'ভাষা আন্দোলন ও দেশের মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস আগামী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে প্রতিটি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার বা স্মৃতিসৌধ থাকাটা জরুরি। যেসব বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই, সেসব বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় নির্দেশনা ও অর্থ বরাদ্ধ পেলে শিগগির বান্দরবানের প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হবে।'
Comments