যুক্তরাষ্ট্রে গ্রামীণ আমেরিকার বিনিয়োগ ৩০০ কোটি ডলার ছাড়াল
যুক্তরাষ্ট্রের দরিদ্র কৃষ্ণবর্ণ নারী উদ্যোক্তাদের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ে গ্রামীণ আমেরিকার বিনিয়োগ ৩০০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ৫০১ (সি) (৩) ধারায় গ্রামীণ ক্ষুদ্রঋণ মডেলে স্থাপিত নিউইয়র্ক-ভিত্তিক গ্রামীণ আমেরিকা ২০০৮ সালে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত হয়। বিশ্বখ্যাত 'অ্যাভন'র সাবেক চেয়ারম্যান অ্যান্ড্রিয়া জাং গ্রামীণ আমেরিকার প্রধান নির্বাহী হিসেবে কাজ করছেন। প্রতিষ্ঠানটি যুক্তরাষ্ট্রের দরিদ্র নারীদের জন্য ঋণ, সঞ্চয় সুবিধা, আর্থিক শিক্ষা এবং ক্রেডিট অর্জন সংক্রান্ত সেবা দিয়ে থাকে। গ্রামীণ আমেরিকার সব ঋণই বিভিন্ন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ে বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে দেওয়া।
যুক্তরাষ্ট্রের ৪ কোটিরও বেশি মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে বাস করে। ফেডারেল সরকারের সংজ্ঞা অনুযায়ী, ৪ সদস্যের একটি পরিবারের বাৎসরিক আয় ২৫ হাজার ১০০ ডলারের কম হলে পরিবারটি দরিদ্র হিসেবে বিবেচিত। এসব পরিবারের অনেকেই তাদের ন্যূনতম দৈনন্দিন ব্যয়, চিকিৎসা খরচ ও শিশু যত্নের ব্যয় মোটাতে অক্ষম এবং জীবিকার তাগিদে ন্যূনতম মজুরিতে কাজ করতে বা কোনো ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করতে বাধ্য হয়। দেশটির জনসংখ্যার প্রতি ৮ জনের ১ জন দারিদ্রসীমার নিচে বাস করে এবং সংখ্যালঘুদের মধ্যে দারিদ্রের হার আরও বেশি। মোট জনসংখ্যার প্রায় ২৭ শতাংশ ব্যাংকিং সুবিধা থেকে বঞ্চিত অর্থাৎ তাদের কোনো ব্যাংক হিসাব নেই এবং তারা মূলধারার কোনো আর্থিক বা ব্যাংকিং সেবা, যেমন- ক্রেডিট কার্ড ও ঋণের সুবিধা থেকে বঞ্চিত। মূলধারার আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের দেওয়া ঋণের মাত্র ৪ শতাংশ নারীরা পেয়ে থাকেন। গ্রামীণ আমেরিকা এ ধরনের পরিবারের নারীদের ক্ষুদ্র ব্যবসা গড়ে তুলতে ঋণ দিয়ে থাকে।
ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তাদের ব্যবসায়ে গ্রামীণ আমেরিকার বিনিয়োগ ২০১৮ সালে ১০০ কোটি ডলার ও ২০২১ সালে ২০০ কোটি ডলারের মাইলসীমা অতিক্রম করে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে সংস্থাটির সাফল্যের পরিচয় বহন করে। দেশটির ২৫টি শহরের ১ লাখ ৬৪ হাজার দরিদ্র নারী উদ্যোক্তা ও তাদের পরিবারকে এই ৩০০ কোটি ডলার ঋণ প্রদান করা হয়েছে।
বিশ্বখ্যাত অভিনেত্রী জেনিফার লোপেজ ২০২২ সালে গ্রামীণ আমেরিকার ন্যাশনাল অ্যাম্বাসেডর হিসেবে যোগদান করেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ১ লাখ ৬৪ হাজার দরিদ্র ক্ষুদ্রঋণ-গ্রহীতা নারীর সেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে এই প্রচারণা চালাতে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ৬ লাখ ল্যাটিন উদ্যোক্তাকে এই কর্মসূচির অধীনে নিয়ে আসার উদ্দেশ্যে এর নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করতে ও সুবিধাভোগীদের জন্য প্রতিষ্ঠানটির অর্থায়নের পরিমাণ ১ হাজার ৪০০ কোটি মার্কিন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করে যাচ্ছেন।
Comments