শীতে কাঁপছে ঢাকা, হাসপাতালের বারান্দায় কম্বলের খোঁজে রোগীর স্বজন

মঙ্গলবার রাতে সরেজমিনে ঢামেকের ইমার্জেন্সি ওয়ার্ডে বারান্দায় অনেক রোগী ও রোগীর স্বজনদের জুবুথুবু শুয়ে থাকতে দেখা যায়। ছবি: শাহীন মোল্লা/স্টার

দিনভর ঘন কুয়াশাচ্ছন্ন আকাশ সঙ্গে ঠান্ডা বাতাসের দাপট, রাজধানীতে তীব্র শীতে নাকাল হয়ে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষের জনজীবন।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ঢাকায় মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় তাপমাত্রা ছিল ১৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিন ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

তীব্র শীতে বিপাকে পড়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে রোগীর সঙ্গে থাকা স্বজনরা।

মঙ্গলবার রাতে সরেজমিনে ঢামেকের ইমার্জেন্সি ওয়ার্ডে বারান্দায় অনেক রোগী ও রোগীর স্বজনদের জুবুথুবু শুয়ে থাকতে দেখা যায়। অনেকেই কম্বলের খোঁজে এদিক সেদিক খুঁজছিলেন।

তাদের মধ্যে এক রোগীর স্বজন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'রাতের বেলায় বারান্দায় শীতে কাঁপতে হচ্ছে। থাকতে না পেরে কম্বল খুঁজছিলাম। কিন্তু পাইনি।'

তীব্র শীতে রাত ৮টার পর থেকে রাজধানীর অধিকাংশ রাস্তায়ই লোকজনের চলাচল কমে যায়। তবে সস্তায় গরম কাপড় কিনতে ফুটপাতের দোকানগুলোতে ভিড় করেছেন অনেকেই।

কাওরানবাজারে দিনমজুর মো. সেলিম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার রাতে কাজ করতে হয়। হঠাৎ করে শীত পড়ে যাওয়ায় ১২০ টাকা দিয়ে পুরনো একটা সোয়েটার কিনেছি। আগে এই সোয়েটার ৫০-৬০ টাকায় পাওয়া যেত। এখন দাম বেড়ে গেছে।'

মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে কাওরানবাজারে ফুটপাতে অনেককেই আগুন  পোহাতে দেখা গেছে। তাদের একজন ভ্যানচালক মো. ইকবাল বলেন, 'মাল আসবে রাত ১১টার পরে। ঠান্ডায় টিকতে না পেরে যা পেয়েছি তাই জ্বালিয়ে আগুন পোহাচ্ছি।'

হঠাৎ শীতে বিপাকে পড়েছেন রাজধানীর ফুটপাতে থাকা ছিন্নম‍ূল মানুষ। ফার্মগেট আনন্দ সিনেমার হলের সামনে ফুটপাতে বিছানা পেতে দুই সন্তান নিয়ে শীতে জুবুথুবু হয়ে শুয়ে ছিলেন সেলিনা বেগম (২২)।

তিনি বলেন, 'আমাদের কাছে যা কাঁথা-কম্বল আছে। তা দিয়ে শীত মানছে না। আমি রাস্তার ময়লা পরিষ্কার করে দিনে ২০০ টাকার মতো পাই। এ দিয়ে ২ সন্তানকে নিয়ে খেয়েপড়ে থাকতে হয়। হঠাৎ তীব্র শীতে কষ্টে পড়ে গেছি।'

ফার্মগেট ওভারব্রিজে ভিক্ষা করছিলেন মাইনুদ্দিন (৭৫)। দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, 'আগে আমি কারওয়ানবাজারে কাচামাল বিক্রি করতাম। এখন বয়স হয়েছে, তাই কাজ করতে পারি না। আমি গ্রামেই থাকি। শীতে ঢাকায় ভিক্ষা করতে এসেছি।'

'দিনে ৩০০-৪০০ টাকার মতো পাওয়া যায়। কিছু কম্বল পাবো এই আশায় আসছি,' বলেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

The ceasefire that couldn't heal: Reflections from a survivor

I can’t forget the days in Gaza’s hospitals—the sight of dismembered children and the cries from phosphorus burns.

5h ago