‘ভারতের কাছে খাদ্যপণ্য আমদানিতে কোটা সুবিধার অনুরোধ করা হয়েছে’

Tipu Munshi
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। ছবি: সংগৃহীত

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানিয়েছেন, পেঁয়াজ, রসুন, আদা ও ডালের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের প্রধান সরবরাহকারী দেশ ভারতের কাছে এসব পণ্য আমদানিতে বার্ষিক কোটা সুবিধা প্রদানে অনুরোধ করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্যমন্ত্রী পর্যায়ের সভা ২২-২৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এবং ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী শ্রী পিয়ুশ গয়ালের নেতৃত্বে দুই দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে অনুষ্ঠিত সভায় দ্বি-পক্ষীয় বাণিজ্য ও পারস্পরিক সহযোগিতার বিভিন্ন বিষয় আলোচনা হয়।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, 'করোনা এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট অবস্থায় ভারতের কাছে চাল, গম, চিনি, পেঁয়াজ, রসুন, আদা ও ডালের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য আমদানিতে বার্ষিক কোটা সুবিধার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় সভায় আমাদের পক্ষ থেকে এসব পণ্যের আমদানির জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণের কোটার কথা তুলে ধরা হয়। তবে ভারত বলেছে, যে পরিমাণ পণ্যের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশ সেই পরিমাণ পণ্য ভারত থেকে আমদানি করে না। তাছাড়া, বাংলাদেশের অন্যতম রপ্তানি পণ্য পাটজাত সামগ্রীর ওপর ২০১৭ সাল থেকে আরোপিত অ্যান্টি-ডাম্পিং ডিউটি আর বহাল না রাখার জন্য ভারতকে অনুরোধ করা হয়েছে।'

তিনি বলেন, 'ব্যবসায়ীদের একটি দাবি ছিল দীর্ঘমেয়াদী ভিসা, সেটি নিয়ে কথা হয়েছে। এ ছাড়া, প্রধানমন্ত্রী একটি বিষয়ে উৎসাহ দিয়েছিলেন, ভারত থেকে উচ্চ ফলনশীল রাবার ক্লোন আমদানি করার বিষয়ে। এর কারণ, আমাদের দেশের রাবার খুব বেশি ভালো হয় না। এ ছাড়া, কারেন্সির বিষয়ে কথা হয়েছে, দুই দেশের বাণিজ্যে বিনিময় মাধ্যম হিসাবে ডলারের পরিবর্তে ভারতীয় রুপি ব্যবহারের। এ বিষয়ে আমরা নিশ্চিত কিছু বলতে পারিনি, কারণ এ ক্ষেত্রে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ লাগবে। আমরা বলেছি আলোচনা হতে পারে। তারা রাশিয়া এবং ইরানের সঙ্গে এটি শুরু করেছে। এটা পারব কি না, সেই হিসাবের ব্যাপারও আছে। এ ছাড়াও, বর্ডার হাট নিয়েও আলোচনা হয়েছে। সবগুলো আলোচনা নিয়েই আমরা সন্তুষ্ট।'

টিপু মুনশি বলেন, 'পণ্য ইমপোর্টে যে কোটার কথা বলেছি, সেখানে পরিমাণ উল্লেখ করেছিলাম। তারা বলেছে, পরিমাণ তো আমরা (বাংলাদেশ) আন্দাজ করে বলেছি, সে ক্ষেত্রে সঠিক কতো পরিমাণ পণ্য প্রয়োজন হবে সেটি নির্ধারণ করতে বলেছে। আমরা একটু বেশি করেই চেয়েছিলাম। তারা বলেছে, অতীতের ৭-৮ বছরের রেকর্ড বলে না তোমাদের (বাংলাদেশ) এতো দরকার। বাংলাদেশের জন্য রাখার পর যদি না নেয় তাহলে সেগুলো নষ্ট হবে। সেজন্য দুপক্ষ আলোচনা করে ঠিক করতে বলেছে।'

ব্যবসায়ীদের জন্য দীর্ঘমেয়াদী ভিসা প্রদানে ভারতের আপত্তি নেই জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, 'তারা বলেছে, এক থেকে দেড় মাস একটু অপেক্ষা করতে হবে। করোনার পর মেডিকেল ভিসার জন্য প্রচুর চাপ পড়েছে। সেটা দিতেই তাদের সমস্যা হচ্ছে।

তারা বলছে, জানুয়ারির শেষ দিকে তাদের প্রেসার কমে আসবে। তখন তারা রেগুলার ভিসা, টুরিস্ট ভিসা, মাল্টিপল ভিসা, ব্যবসায়ীদের ভিসার ব্যবস্থা করবে।'

তিনি আরও বলেন, 'আমরা বলেছিলাম, একটা সিইও ফোরাম করার বিষয়ে। আমাদের দেশের ১০টি বড় প্রতিষ্ঠানের সিইও এবং তাদের দেশের ১০টি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সিইও নিয়ে এটি করা যেতে পারে। যেমন আমাদের দেশে প্রাণ, এফবিসিসিআইয়ের মতো প্রতিষ্ঠান আছে, সেই প্রস্তাব আমরা দিয়েছি। তারা (ভারত) বলছে, তাদের নামগুলো সিলেক্ট করতে একটু দেরি হচ্ছে, তারপরও তারা আশাবাদী এই ১০টি নাম দিলে দুই দেশের ১০টি করে প্রতিষ্ঠানের সিইওদের নিয়ে ফোরাম গঠিত হবে। বিভিন্ন বাণিজ্যিক ইস্যুতে তারা আলোচনা করবেন। সরকারকে তারা আলোচনা করে কোনো পরামর্শ থাকলে দেবেন।'

সভায় প্রস্তাবিত বাংলাদেশ-ভারত কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট (সিইপিএ) সম্পাদনের লক্ষ্যে নেগোসিয়েশন শুরুর বিষয়ে আলোচনা করা হয়।

বিভিন্ন দ্বি-পক্ষীয় ও আঞ্চলিক ফোরাম পারস্পরিক সহযোগিতা প্রদান, বিভিন্ন প্রকার শুল্ক-অশুল্ক বাধা অপসারণের মাধ্যমে বাণিজ্য সহজীকরণ, ভারতের পক্ষ থেকে করোনার কারণে বন্ধ থাকা বর্ডার হাটগুলো পুনরায় চালু করার বিষয়টি উপস্থাপন করা হলে শিগগিরই সেগুলো চালুর কার্যক্রম ইতোমধ্যেই গ্রহণ করা হয়েছে বলে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অবহিত করা হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Dhaka, Delhi eager to take ties forward

Dhaka and New Delhi committed to advancing bilateral relationship for mutual benefit in the first high-level official talks since Bangladesh’s political changeover.

8h ago