জিয়ার মরণোত্তর বিচার ও সংসদ ভবন এলাকা থেকে কবর অপসারণের দাবি

বিদ্রোহ দমনের নামে ১৯৭৭ সালে জিয়াউর রহমান ১১৫৬ জনকে ষড়যন্ত্রের নামে হত্যা করে জানিয়ে জিয়ার মরণোত্তর বিচার ও সংসদ ভবন এলাকা থেকে তার কবর অপসারণের দাবি জানিয়েছেন হত্যাকাণ্ডের শিকার বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ও সেনাবাহিনীর পরিবারের সদস্যরা।
জিয়াউর রহমান
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আজ শনিবার কুমিল্লা টাউন হল মাঠে মায়ের কান্না সংগঠন আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ১৯৭৭ সালে সামরিক শাসনে নিহত বিমান বাহিনী ও সেনাবাহিনীর পরিবারের সদস্যরা। ছবি: খালিদ বিন নজরুল

বিদ্রোহ দমনের নামে ১৯৭৭ সালে জিয়াউর রহমান ১১৫৬ জনকে ষড়যন্ত্রের নামে হত্যা করে জানিয়ে জিয়ার মরণোত্তর বিচার ও সংসদ ভবন এলাকা থেকে তার কবর অপসারণের দাবি জানিয়েছেন হত্যাকাণ্ডের শিকার বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ও সেনাবাহিনীর পরিবারের সদস্যরা।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আজ শনিবার কুমিল্লা টাউন হল মাঠে মায়ের কান্না সংগঠন আয়োজিত সমাবেশে তারা এ দাবি জানান।

সমাবেশে হত্যাকাণ্ডের শিকার বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ও সেনাবাহিনীর ১০০ পরিবারের সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বক্তব্য রাখেন করপোরাল মোবারক আলীর মেয়ে মমতাজ বেগম, সার্জেন্ট সাইদুর রহমান মিয়ার ছেলে কামরুজ্জামান মিয়া লেলিন, সার্জেন্ট দেলোয়ার হোসেনের ছেলে নূরে আলম, সার্জেন্ট আফাজউদ্দিন ভূইয়ার ছেলে মাসুদুল আলম, সার্জেন্ট দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী নুরুন্নাহার বেগম, সার্জেন্ট মোফরাকুল আলমের মেয়ে রিমনা বেগমসহ নিহতের পরিবারের সদস্যরা।

সামরিক শাসনে নিহত বিগ্রেডিয়ার নাজমুল হুদার মেয়ে সংসদ সদস্য নাহিদ এজহার খান বলেন, 'জিয়া আমার বাবাসহ মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করেছে। জিয়া শিক্ষিত যুব সমাজ চায়নি। ছাত্রদের হাতে জিয়া তুলে দিয়েছিল অস্ত্র। জিয়াউর রহমান আমার বাবাকে হত্যা করে দেশদ্রোহী উপাধি দিয়েছিল। দেশদ্রোহীর সন্তান বলে আমরা কোথাও ভর্তি হতে পারিনি।'

জিয়ার মরণোত্তর বিচার এবং সংসদ ভবন এলাকা থেকে জিয়ার কবরের অপসারণ চান তিনি।

প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য ও কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং ১৯৭৭ সালে অন্যায়ভাবে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সার্জেন্ট আ ক ম মাইনুদ্দিনের ভাই সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রথম মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে। বাহার বলেন, ১৯৭৭ সালে আমার ভাই সার্জেন্ট মাইনুদ্দিন ভাইয়ের লাশ আমরা পাইনি। জিয়াউর রহমান মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে দিতে চেয়েছিল কিন্তু পারেনি।

প্রধান অতিথি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, 'জিয়াউর রহমান বলেছিলেন পাকিস্তানের সাথে কনফেডারেশন করবেন। কিন্তু পারে নাই। স্বাধীনতাকে নস্যাৎ করে মিনি পাকিস্তান করার নীল নকশাই ছিল ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। শুধু বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেই সে থামে নাই খুঁজে খুঁজে হত্যা করেছিল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের। জিয়া বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে আর তার সন্তান তারেক জিয়া ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করেছিল শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল।

'তারা বলে শেখ হাসিনা সরকারের পতন করবে, তারা চায় তৃতীয় শক্তির কাছে দেশের ক্ষমতা দিতে। এটা আজ সম্ভব নয়। বঙ্গবন্ধুর খুনি, চার নেতার খুনি ও মুক্তিযোদ্ধাদের খুনি জিয়ার মরনোত্তর বিচার দাবি করে বলেন জাতীয় সংসদ ভবন এলাকা থেকে জিয়াউর কবর অপসারণের দাবি জানাচ্ছি প্রধানমন্ত্রীর কাছে।' 

জিয়াউর রহমানের হাতে নিহত মুক্তিযোদ্ধার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন বলে জানান মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে মায়ের কান্নার উপদেষ্টা ও এশিয়াটিক সোসাইটির সভাপতি ড. খনদকার বজলুল হক বলেন, '১২০০ মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করে জিয়া মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিলীন করতে চেয়েছিল।'

Comments

The Daily Star  | English

Post-August 5 politics: BNP, Jamaat drifting apart

The taunts and barbs leave little room for doubt that the 33-year-old ties have soured. Since the fall of Sheikh Hasina’s government on August 5, BNP and Jamaat-e-Islami leaders have differed in private and in public on various issues, including reforms and election timeframe.

7h ago