আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস

৭৫ শতাংশ বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বাইরে

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাচ্ছে না ৬০ শতাংশ

বাংলাদেশের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের প্রায় ৭৫ শতাংশ সাধারণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ও ৬০ শতাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যেতে পারে না।

সম্প্রতি একটি সরকারি সমীক্ষায় উঠে এসেছে, এই শিশুদের মধ্যে মাত্র ৮ শতাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাক প্রাথমিক শিক্ষা পায়, যেখানে মেয়েদের অংশগ্রহণ ৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ এবং ছেলেদের ৯ দশমিক ৩৯ শতাংশের কম।

অভিভাবকদের অভিযোগ, অনেক মূলধারার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের ভর্তি করতে চায় না। অথচ, ২০০৯ সালে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি করার বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছে সরকার।

রাজধানীর মিরপুর এলাকার এমনই এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক মাহবুবুর রহমান বলেন, 'মূলধারার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আমার সন্তানকে ভর্তি করেছি। কিন্তু এখানে ওর জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামোও নেই, পাশাপাশি শিক্ষকরাও নিরুৎসাহিত করে।'

তিনি আরও বলেন, 'এমন আচরণের কারণে আমার সন্তানের মতো শিশুরা নিজেদেরকে সমাজ ও পরিবারে বোঝা মনে করে।'

এমনই পরিস্থিতির মধ্যেই দেশে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস।

শিক্ষা অধিকার কর্মীদের মতে, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের মূলধারার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষা নেওয়ার সুযোগ না দিলে শেষ পর্যন্ত তারা সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।

দুঃখজনক চিত্র

গত জুনে প্রকাশিত বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ন্যাশনাল সার্ভে অন পার্সনস উইথ ডিজঅ্যাবিলিটিজ (এনএসপিডি) ২০২১-এর প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই শিশুদের মধ্যে ৪০ দশমিক ৫৫ শতাংশ প্রাথমিক শিক্ষায় এবং ২৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ মাধ্যমিক শিক্ষায় অংশগ্রহণ করছে।

প্রাথমিক প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে দেশের ৩৬ হাজার পরিবারের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম বিভাগে ৭০ দশমিক ৭৩ শতাংশ, সিলেট বিভাগের ৩৪ দশমিক ৬১ শতাংশ, বরিশাল বিভাগের সর্বোচ্চ ৮৮ দশমিক ৭০ শতাংশ ও রংপুর বিভাগের ৬৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাচ্ছে না।

সরকারি জরিপে এই চিত্র এমন সময়ে উঠে আসলো, যখন সরকার টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে ২০৩০ সালের মধ্যে শিক্ষায় লিঙ্গ বৈষম্য দূর করা এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীসহ সবার শিক্ষা ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের নিশ্চয়তার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ স্বীকার করেছেন যে তাদের অধিকাংশ পুরনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য র‌্যাম্প, বিশেষ টয়লেট ও শ্রেণীকক্ষের মতো সুবিধার অভাব রয়েছে।

উভয়েই জানান, নতুন ভবন নির্মাণের সময় তারা এসব সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করছেন।

তারা আরও জানান, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের ভর্তি না করার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Comments

The Daily Star  | English

Some parties trying to use Mitford incident as political tool: Rizvi

'BNP is a big family. Sometimes one or two miscreants can enter through a loophole.'

40m ago