ধর্মঘটে নাটোরে যাত্রীদের ভোগান্তি, বিক্রি হচ্ছে ৩ ডিসেম্বর রাতের টিকিট

অটোরিকশায় করে ভেঙে ভেঙে অনেকে গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন। নাটোর-ঢাকা মহাসড়কের হরিশপুর এলাকা থেকে তোলা ছবি। ছবি: স্টার

পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের ডাকা ধর্মঘটে বিপাকে পড়েছেন নাটোরের যাত্রীরা। বিশেষ করে চাকরিজীবী, রোগী ও পরীক্ষার্থীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। বাসের আশায় কাউন্টারে এসে তাদের কেউ হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন, আবার কেউ কয়েক গুণ বেশি টাকা খরচ করে ভেঙে ভেঙে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন গন্তব্যে।  

নওগাঁর আত্রাই উপজেলার সোহেলে রানা চাকরির পরীক্ষা দিতে ঢাকায় যাওয়ার জন্য সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে আজ বৃহস্পতিবার এসেছেন নাটোরে। কিন্তু নাটোরের হরিশপুর বাসস্ট্যান্ডে এসে দেখেন, কোনো বাস চলাচল করছে না। ঢাকা যেতে না পারলে পরীক্ষা দেওয়া হবে না তার। কিন্তু কীভাবে যাবেন তা বুঝতে পারছেন না। নিরুপায় হয়ে ট্রেনে যাওয়ার আশায় তিনি ছুটেছেন রেলস্টেশনে। কিন্তু জানেন না সেখানে গিয়ে এখন কোনো ট্রেন পাবেন কি না।

কুষ্টিয়া শশুড়বাড়ি যাওয়ার জন্য স্ত্রীকে নিয়ে বাসস্ট্যান্ডে এসেছেন নাটোর সদর উপজেলার গুনারিগ্রামের গোলাম মুকিত। কিন্তু এসে জানতে পারলেন বাস চলাচল বন্ধ। পরে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় বনপাড়া রওনা দিলেন তিনি। সেখানে থেকে পাবনার ঈশ্বরদী যাবেন। এরপর সেখান থেকে ছোট কোনো যানবাহনে কুষ্টিয়া রওনা হবেন। সব মিলিয়ে প্রায় ৪ গুণ বাড়তি ভাড়া গুণতে হবে তার। ভোগান্তি আর বাড়তি সময়ের বিষয়টি তো আছেই।

নাটোর সদর হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক মো. সাজিদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কুষ্টিয়ায় বাড়িতে জরুরি কাজে যেতে হবে আমাকে। কিন্তু কীভাবে যাব বুঝতে পারছি না। সিএনজিচালিত কোনো যানবাহন খোঁজার চেষ্টা করছি।'

নাটোরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশের চেকপোস্ট। ছবি: স্টার

আমিনুল ইসলাম নামের একজন বলেন, 'ডাক্তার দেখাতে আমার রাজশাহী যাওয়ার কথা। কোনোভাবেই যেতে পারছি না।'

এদিকে নাটোরের বাস কাউন্টারগুলোতে আজ ৩ ডিসেম্বর রাতের টিকিট বিক্রি করতে দেখা গেছে।

বাস কোম্পানি দেশ ট্রাভেলসের ম্যানেজার হাসিবুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, '৩ তারিখের টিকিট বিক্রি করছি। তার আগের কোনো টিকিট সার্ভারে নেই। হেড অফিস থেকে টিকিট বিক্রি বন্ধ রেখেছে।'

ধর্মঘট অনির্দিষ্টকালের হলে ৩ ডিসেম্বরের টিকিট কীভাবে বিক্রি হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'এসব বিষয়ের উত্তর দিতে পারবে বাস মালিক সমিতি।'

৩ ডিসেম্বর রাতের টিকিট বিক্রি করতে দেখা যায় অন্যান্য বাস কাউন্টারেও।

নাটোরের বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মজিবর রহমান বলেন, '৩ ডিসেম্বরের টিকিট বিক্রির বিষয়ে আমি কিছু জানি না। এমনটা হওয়ায় কথা নয়।'

জণগণের দুর্ভোগ দূর করতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে নাটোর জেলা প্রশাসক শামীম আহম্মেদ বলেন, 'জণগণের দুর্ভোগ কমাতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছি। কীভাবে দুর্ভোগ কমানো যায় সেসব বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করছি। শিগগির এ বিষয়টি সমাধান করা হবে।'

 পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল বন্ধ রাখার কথা থাকলেও মহাসড়কে আজ কিছু পণ্যবাহী যান চলাচল করতে দেখা গেছে। 

আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ। বিএনপি নেতাদের দাবি, অন্যান্য বিভাগীয় গণসমাবেশের মতো রাজশাহীর গণসমাবেশে মানুষকে আসতে বাধা দিতে এই পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হয়েছে।

 

Comments

The Daily Star  | English

Beximco workers' protest turns violent in Gazipur

Demonstrators set fire to Grameen Fabrics factory, vehicles, vandalise property

1h ago