বেলাবো উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছাত্রলীগের হামলা-ভাঙচুর

হামলাকারীদের বিচারের দাবিতে বেলাবো উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মানববন্ধন করেন। ছবি: সংগৃহীত

নরসিংদীর বেলাবো উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সারোয়ার হোসেন অপু ও সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার তৌফিক এবং তাদের সহযোগীরা। বুধবার বেলা ১১টার দিকে তারা হাসপাতালে ভাঙচুর চালান।

এ ঘটনায় উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা হাসপাতালে ঢুকে সিসিটিভির লাইন কেটে ফেলেন। পরে প্রায় অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী হাসপাতালে ঢুকে আসবাবপত্র ভাঙচুর করেন। হামলাকারীরা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার অফিস কক্ষে ঢুকতে চাইলে হাসপাতালের কর্মচারীরা গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন। এ সময় তারা ঢিল ছুড়ে জানালার কাঁচ ভাঙচুর করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সম্প্রতি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের খাদ্য সরবরাহসহ তিন ক্যাটাগরিতে দরপত্র আহ্বান করা হয়। অন্য ঠিকাদারদের লাইসেন্স ব্যবহার করে একাধিক দরপত্র জমা দেয় অপুসহ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। দরপত্র ছাত্রলীগের পক্ষের ঠিকাদারদের অনুকূলে না যাওয়ার কথা শুনে ছাত্রলীগের সভাপতি সারোয়ার হোসেন অপু ও সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার তৌফিকের নেতৃত্বে হামলা হয়। তারা হাসপাতালের সিসিটিভি, দরজা, জানালা ভাঙচুর ও হাসপাতালের ভেতরে সরকারি সম্পদ নষ্ট করেন।

ঘটনাস্থলে পুলিশ যাওয়ার পর উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সারোয়ার হোসেন অপু ও সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার তৌফিক এবং তাদের সহযোগীরা হাসপাতাল ত্যাগ করেন।

হামলার প্রতিবাদে তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালের সব ডাক্তার, নার্স ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সেবাদান বন্ধ করে দেন। হামলাকারীদের শাস্তির দাবিতে তারা হাসপাতালের সামনে মানববন্ধন করেন।

যোগাযোগ করা হলে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সারোয়ার হোসেন অপু বলেন, কোনো হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেনি। ছাত্রলীগের কয়েকজনের সঙ্গে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বাগবিতণ্ডার খবর পেয়ে তাদেরকে সরিয়ে নিয়ে আসি। তিনি আরও বলেন, একজন ঠিকাদার বছরের পর বছর ধরে হাসপাতালের খাদ্য সরবরাহ করছে। এ নিয়ে বাগবিতণ্ডা হয়।

হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নূর আসাদুজ্জামান।

নরসিংদীর সিভিল সার্জন ডা. মো. নূরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, হাসপাতালে হামলার ঘটনায় উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নূর আসাদুজ্জামান থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। এতে ৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৪০ জন দুষ্কৃতিকারীকে আসামি করা হয়েছে।

ছাত্রলীগের জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শাহজালাল আহমেদ শাওন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, আমি ঘটনা শুনেছি। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে জানতে বেলাবো থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীর আহমেদকে ফোন করা হলেও তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

Comments