নৌ-শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২০ হাজার টাকা করার দাবি

রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটি মিলনায়তনে সাধারণ নৌ-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন। ছবি: সাজ্জাদ হোসাইন/স্টার

নৌযান শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২০ হাজার টাকা ও মৃত্যুকালীন ক্ষতিপূরণ ১২ লাখ টাকা নির্ধারণের দাবি করেছেন শ্রমিক ও নেতারা। ১৫ দিনের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে ওই দিন রাত ১২টা এক মিনিট থেকে কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে সাধারণ নৌ-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নেতা-কর্মীরা এ দাবি করেন।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, 'গেজেট প্রকাশ করে ২০১৬ সালে শ্রমিকদের বেতন ৭ হাজার ৭০০ টাকা ও মৃত্যুকালীন ক্ষতিপূরণ ২ লাখ টাকা নির্ধারণ করেছিল সরকার। প্রতি ৫ বছর পর পর সরকার শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি করলেও এবার নির্ধারিত সময়ের পর ১৭ মাস অতিবাহিত হয়েছে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিসহ বর্তমান পরিস্থিতিতে এ বেতনে নৌযান শ্রমিকরা পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।'

এছাড়া নৌপথে চুরি-ডাকাতি বন্ধ, চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ রাখার পোতাশ্রয় নির্মাণ, নৌ প্রশাসন দ্বারা শ্রমিকদের নির্যাতন বন্ধসহ ৭ দফা দাবির  কথা তুলে ধরেন তারা।

সংগঠনের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বলেন, 'সরকার আমাদের বেতন নির্ধারণ করলে মালিকপক্ষ মানতে বাধ্য। কিন্তু, মালিকপক্ষ ও সরকারি কর্মকর্তারা নিজেদের স্বার্থে শ্রমিকদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর ব্যাপারে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করছেন না।'

তিনি বলেন, '২০১০ সালে সরকার শ্রমিকদের বেতন ৫ হাজার ৭০০ টাকা ও মৃত্যুকালীন ক্ষতিপূরণ ১ লাখ টাকা নির্ধারণ করেছিল। তারপর ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে সর্বশেষ বেতন ও ক্ষতিপূরণ বৃদ্ধি করে।'

বাংলাদেশ জাহাজি শ্রমিক ফেডারেশন সাধারণ সম্পাদক সবুজ শিকদার বলেন, 'দেশের ৭০ শতাংশ পণ্য আনা নেওয়া হয় নৌপথে। শ্রমিকরা দেশের উন্নয়নেও কাজ করে যাচ্ছে। করোনাকালীন সময়ে নৌযান চলাচল স্বাভাবিক ছিল। তেলের দাম বৃদ্ধি পেলেও মালিকপক্ষের কোনো অসুবিধা হয়নি। সরকারের সাহায্য সহযোগিতাও ছিল তাদের জন্য।'

'মালিকপক্ষ লাভবান হলেও তারা শ্রমিকদের কোনো সুবিধা বাড়াচ্ছেন না,' বলেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সদস্য সচিব মনিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, 'সরকার প্রতি ৫ বছর পর পর আমাদের এসব সুবিধা বৃদ্ধির আশ্বাস দেয়। কিন্তু প্রত্যেকবার আমাদের আন্দোলন করে দাবি আদায় করতে হচ্ছে। সরকার যদি আমাদের সুযোগ-সুবিধা নির্ধারণ করে মালিকপক্ষকে বাধ্য না করে তবে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে নৌপথ অচল করে দেওয়া হবে।' 

তিনি বলেন, '১৯৯২ সালে শ্রমিক আইনের ৫০-ধারা অনুযায়ী শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জাহাজে কর্মরত শ্রমিকদের বেতন নির্ধারণ করে গেজেট ঘোষণা করেন। গেজেটের ঘোষণা কার্যকর থাকে ৫ বছর। কিন্তু এবার আমাদের দাবি বাস্তবায়নে কোনো কার্যকর ভূমিকা পালন করছেন না কেউ।'

এ সংগঠনের দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করে সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ জাহাজি শ্রমিক ফেডারেশন, নৌ-পরিবহণ শ্রমিক ফেডারেশন, বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক লীগ, বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন, বাংলাদেশ বাল্কহেড শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা-কর্মীরা।

Comments

The Daily Star  | English
consensus commission bicameral parliament proposal

Consensus commission: Talks stall over women’s seats, upper house

The National Consensus Commission proposed establishing an upper house comprising elected representatives from each district and city corporation, and suggested abolishing the current system of reserved seats for women in parliament.

3h ago