দেশকে এগিয়ে নিতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: পিআইডি ফাইল ফটো

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে একটি মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার জন্য জনসাধারণ ও ব্যবসায়ীসহ সবার কৃতিত্বের উল্লেখ করে মর্যাদা অক্ষুণ্ন রেখে দেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কম্বল ও শীতবস্ত্র গ্রহণকালে তিনি বলেন, 'আমরা বাংলাদেশকে একটি মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে নিয়ে এসেছি। মর্যাদা বজায় রেখে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।'

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার দল আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকায় গত ১৪ বছরে বাংলাদেশে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে, তিনি একটি আন্তর্জাতিক প্রোগ্রামে মালয়েশিয়ার নেতা মাহাথির মোহাম্মদের সঙ্গে আলোচনার কথা উল্লেখ করেন, যেখানে মাহাথির বলেছিলেন যে- দেশের উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য দীর্ঘমেয়াদী সরকারের প্রয়োজন।

'আমরা দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকায় বাংলাদেশের উন্নয়নে কাজ করতে পেরেছি,' উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আমি বললাম, দেখেন জনগণ কতক্ষণ ভোট দেবে, না দেবে সেটা তো বলতে পারি না। যদি ভোট পাই হয়তো থাকব। কারণ আমাদের দেশে তো পরিবেশটা অন্য রকম। দীর্ঘদিন মিলিটারি ডিক্টেটর ছিল, কখনো ডাইরেক্টলি কখনো ইনডাইরেক্টলি তারা ক্ষমতা দখল করে, আবার উর্দি খুলে রাজনীতিবিদ হয়। আর হত্যা, ক্যু, ষড়যন্ত্র এটা তো আমাদের দেশে লেগেই আছে। আমাদের তো ধারাবাহিক গণতান্ত্রিক ধারা থাকে না এই দেশে। যার জন্য একটা স্থিতিশীল পরিবেশও কখনো আসেনি। যেজন্য সার্বিক উন্নতিটা ঠিক হয়নি।'

'বাংলাদেশ যা কিছু অর্জন করেছে তাতে আপনাদের (ব্যবসায়ী) এবং জনগণের অবদান রয়েছে,' যোগ করেন তিনি।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস।

ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (বিএবি) চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, ব্যাংকসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের যে সম্মানটা আজকে আন্তর্জাতিকভাবে আছে এটা যেন অব্যাহত থাকে। আমরা যে বাংলাদেশকে একটা সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে এসেছি এটা ধরেই যেন এগিয়ে যেতে পারি।

করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবেলায় আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া নানা উদ্যোগের কথাও প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন।

শেখ হাসিনা বলেন, 'যাই হোক, যতটুকু অর্জন আমি মনে করি এটা আপনাদের সকলেরই অবদান। বাংলাদেশের জনগণের অবদান। আমি তাদেরকেই ধন্যবাদ জানাই, কৃতজ্ঞতা জানাই।'

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'তবে, অনেক দিন তো হয়ে গেল। মানুষকে তো এক সময় বিদায় নিতেই হবে এটা তো আল্লাহই বলে দিয়েছেন। সেটাও আল্লাহর ইচ্ছা যেদিন যেতে হয় চলে যাব। এখান থেকেও, এই চেয়ার থেকেও চলে যাব, আবার জীবন থেকেও চলে যাব। যেতেই হবে। এটা হলো বাস্তবতা। যেদিন যাবার সময় হবে। আর সময় না হলে ততদিন তো কাজ করতেই হবে। আল্লাহ যতক্ষণ সুযোগ দিয়েছেন।'

১৯৭৫ সালের ১৫ আগাস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পরিবারের অধিকাংশ সদস্যদের সঙ্গে নির্মমভাবে হত্যা করার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, 'জাতির পিতার হত্যাকাণ্ডটাতো শুধু হত্যাকাণ্ড নয়।'

'আপনারা একবার চিন্তা করেন তো, ১০ বছরের একটা শিশুর কী অপরাধ ছিল? তাকেও শেষ করেছে। কেন? ওই রক্তের কেউ যেন এই দেশে আর ক্ষমতায় আসতে না পারে। এটাই তো ছিল, খুনীদের আকাঙ্খা বলেও' তিনি উল্লেখ করেন।

জাতির পিতাকে হত্যার সময় দেশের বাইরে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান তার ২ মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। ৬ বছর নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে দলের সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে দেশে ফেরেন শেখ হাসিনা।

অনুষ্ঠানে নির্মম সেই হত্যাকান্ডের সময়ের স্মৃতিচারণ করে সরকার প্রধান জানান, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার আগে তার বিদেশ সফরে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল এবং সফর শেষে তার মেয়েদের দেশে ফিরিয়ে আনার কথাও ছিল।

খেলাধুলায় বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে অনুষ্ঠানে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পদস্থ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্য করে শেখ হাসিনা বলেন, 'এই খেলাধুলার ক্ষেত্রে আমার মনে হয় আমাদের সকলের বিশেষ করে আপনাদের একটু সহযোগিতা বেশি করা উচিত।'

খেলাধুলা ও সংস্কৃতি চর্চার ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'এটা যদি সকলে উৎসাহিত না করি তাহলে এই ছেলে-মেয়েগুলোর ভবিষ্যৎ কী? তারা যত বেশি খেলাধুলা, সংস্কৃতি চর্চার মধ্যে থাকবে তত বেশি এই সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদকের থেকে দূরে থাকতে পারবে এবং দেশের উন্নতি হবে। এটা হলো বাস্তবতা।'

শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যাদের রয়েছে তাদের প্রতিষ্ঠানে খেলোয়াড়দের চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়ার কথাও বলেন শেখ হাসিনা।

Comments

The Daily Star  | English

Nowfel gained from illegal tobacco trade

Former education minister Mohibul Hassan Chowdhoury Nowfel received at least Tk 3 crore from a tobacco company, known for years for illegal cigarette production and marketing including some counterfeit foreign brands.

9h ago