অবকাঠামোগত উন্নয়নে ২০ বিলিয়ন ডলার দিতে প্রস্তুত এডিবি

সময়মতো প্রকল্প শেষ করায় গুরুত্বারোপ

এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বাংলাদেশের সড়ক ও রেলপথ প্রকল্পের অর্থায়নে ২০ বিলিয়ন ডলার দিতে প্রস্তুত, কিন্তু সংস্থাটি এসব প্রকল্পের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা অনুযায়ী বাস্তবায়ন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

ম্যানিলাভিত্তিক ব্যাংকটি বাংলাদেশ সরকারের কাছে গত মাসে একটি প্রজেক্ট পোর্টফোলিও রিভিউ প্রতিবেদন জমা দিয়েছে, যেখানে প্রকল্প বাস্তবায়নের কিছু সমস্যার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে কত সময় ধরে এই অর্থবণ্টন করা হবে, তা বলা হয়নি।

প্রতিবেদন অনুসারে, 'মানসম্পন্ন সমীক্ষা ও অনুসন্ধানের অভাব এবং বিস্তারিত ও পূর্ণাঙ্গ নকশা না থাকার কারণে প্রকল্পে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ পরিবর্তন আসে, যার ফলে সময় ও খরচ প্রাক্কলন ছাড়িয়ে যায়।'

পরিবহণ খাতের কিছু প্রকল্পে নিলামের অনুমোদনের পর ঠিকাদার নিয়োগে ২০ মাসেরও বেশি সময় লেগেছে। এ ক্ষেত্রে নিলামের কাগজপত্র সঠিকভাবে তৈরি না করার কারণে এই দেরি হয়েছে বলে এডিবির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

'জমি অধিগ্রহণ ও রিসেটেলমেন্ট হচ্ছে পরিবহণ খাতের প্রকল্পে সময়সীমা বাড়ানোর অন্যতম প্রধান কারণ', প্রতিবেদনে বলা হয়।

প্রকল্প প্রস্তাবনা তথ্য (ডিপিপি) তৈরি ও সংশোধন, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে জমা হওয়া ও জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) অনুমোদন পেতেও অনেক বেশি সময় লাগছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

প্রতিবেদনে এডিবি আগামী ৩ বছরে যেসব প্রকল্পে প্রায় ৪ দশমিক ১৬ বিলিয়ন ডলার অর্থায়ন করবে, তার একটি রূপরেখা দেয়।

১ দশক আগে দেশের পরিবহণ খাতে এডিবির অর্থায়নের পরিমাণ ছিল ৭৪১ মিলিয়ন ডলার। এ বছরের আগস্ট পর্যন্ত এই খাতে ব্যাংকটির অর্থায়নের পরিমাণ প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।

কিছু নির্দিষ্ট প্রকল্পের ক্ষেত্রে এডিবি জানিয়েছে, সংশোধিত ডিপিপির অনুমোদন প্রক্রিয়ায় ১ বছরেরও বেশি সময় লেগেছে, যার ফলে প্রকল্প বাস্তবায়নে দেরি হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ভূমি অধিগ্রহণ ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ক্ষেত্রে জটিলতার কারণেও প্রকল্প বাস্তবায়নে দেরি হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য যেসব ব্যক্তিদের বাস্তুচ্যুত করা হয়, তাদের পুনর্বাসনের জন্য এনজিও ও পরামর্শক নির্বাচন ও নিয়োগের ক্ষেত্রেও বিলম্ব দেখা দেয়।

ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব কনসালটেন্টস অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্সের (এফআইডিআইসি) আইনের আওতায় সাক্ষরিত চুক্তির বিষয়ে প্রকল্প ব্যবস্থাপনা ইউনিট (পিএমইউ) অথবা প্রকল্প বাস্তবায়ন ইউনিট (পিআইইউর) কর্মীদের জ্ঞানের অভাব, ঘনঘন প্রকল্প পরিচালক পরিবর্তন, পিআইইউতে জনবলের অভাব এবং তদারকির কাজে নিয়োজিত উপদেষ্টা ও ঠিকাদারের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবের কারণেও প্রকল্প বাস্তবায়নে দেরি হয়।

উল্লেখ্য, এফআইডিআইসি হচ্ছে আন্তর্জাতিক নির্মাণ প্রকল্পের ক্ষেত্রে ২ পক্ষের মধ্যে চুক্তি সম্পাদনের জন্য প্রতিষ্ঠিত মানদণ্ড।

অসংখ্য প্রকল্পে দুর্বল চুক্তি ব্যবস্থাপনার পেছনে কারণ হিসেবে উপদেষ্টাদের দুর্বল তদারকি ও ঘনঘন বিশেষজ্ঞ পরিবর্তনকে চিহ্নিত করা যায়।

সুপারিশ

বাস্তবায়নকারী সংস্থা ও এজেন্সির নিরীক্ষা করার সক্ষমতা, প্রকল্পের নকশা প্রণয়ন, খরচের প্রাক্কলন ও ক্রয় প্যাকেজিং এর বিষয়গুলোকে আরও আরও বলিষ্ঠ করার সুপারিশ করেছে এডিবি।

এডিবি আরও সুপারিশ করেছে, পিএমইউ ও পিআইইউতে এমন কিছু ব্যবস্থাপনা দলের নিয়োগ দিতে হবে, যাদের সদস্যদের ক্রয়, আর্থিক ব্যবস্থাপনা ও এফআইডিআইসি চুক্তির বিষয় উপযুক্ত জ্ঞান আছে এবং এসব বিষয়ে এডিবির সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে।

এছাড়াও, উপদেষ্টা নিয়োগ ও ক্রয় প্রক্রিয়াকে আরও সমন্বিত ও সুসংহত করতে হবে।

এডিবির মতে, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও পরিকল্পনা কমিশনের ডিপিপি, সংশোধিত ডিপিপি অথবা কারিগরি প্রকল্পগুলো দ্রুত অনুমোদন দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া উচিত।

এডিবি আগামী ৩ বছরে অর্থায়ন করার জন্য সড়ক ও রেলপথ খাতের ১৬টি প্রকল্প চিহ্নিত করেছে।

অনুবাদ করেছেন মোহাম্মদ ইশতিয়াক খান

(সংক্ষেপিত, পুরো প্রতিবেদনটি পড়তে Infrastructure development: ADB ready to give $20b but has concerns লিংকে ক্লিক করুন)

Comments

The Daily Star  | English

Indian Media Reporting on Bangladesh: Fake or Fact?"

Why is the Indian media's coverage of Bangladesh markedly different from that of Bangladeshi news outlets?

7h ago