র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে যুক্তরাষ্ট্রকে শাহরিয়ার আলমের অনুরোধ
যুক্তরাষ্ট্রের ডেপুটি সেক্রেটারি অব স্টেট ওয়েন্ডি আর শেরম্যানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। বৈঠকে শাহরিয়ার আলম র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে শেরম্যানকে অনুরোধ জানান।
ওয়াশিংটন ডিসি-তে স্টেট ডিপার্টমেন্টে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে দুই দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, র্যাব ও এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা দ্রুত তুলে নেওয়ার আহ্বান জানান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। ডেপুটি সেক্রেটারি শেরম্যান সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস চরমপন্থার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সঙ্গে অব্যাহত সহযোগিতার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
প্রররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী করোনা মহামারি মোকাবিলায় প্রায় ৮৮ মিলিয়ন ডোজ ভ্যাকসিন সহায়তা দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের মানবিক সহায়তা এবং মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন।
তিনি টেকসই এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন অর্জনে ডব্লিউটিও-তে মার্কিন সহায়তা কামনা করেন। তিনি জলবায়ু পরিবর্তন এবং অভিবাসন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের ইচ্ছা ব্যক্ত করেন।
মার্কিন ডেপুটি সেক্রেটারি তার বক্তব্যের শুরুতে সম্প্রতি মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে তিন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বিশ্ব শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
তিনি বাংলাদেশের উচ্চ কোভিড-১৯ টিকার হার এবং মহামারি মোকাবিলায় ও নিয়ন্ত্রণে সরকার কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপেরও প্রশংসা করেন। ওয়েন্ডি আর শেরম্যান জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন এবং কপ২৭-এর আগে 'গ্লোবাল মিথেন প্লেজ' এ যোগ দিতে বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান জানান।
বাংলাদেশের শ্রম খাতে অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে ডেপুটি সেক্রেটারি শেরম্যান দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়াতে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা জোরদারের ওপর জোর দেন। ইউক্রেন যুদ্ধ, খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তা এবং বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়গুলোও আলোচনায় স্থান পায়।
প্রতিমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি রাশেদ চৌধুরীকে বাংলাদেশে অবিলম্বে ফেরত পাঠানোর জন্য মার্কিন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন যে, বিষয়টি বাংলাদেশের জনগণ ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিমন্ত্রী আলম বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যত দ্রুত সম্ভব বহিঃসমর্পণ চুক্তি সম্পাদনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
পরে, মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিশেষ সহকারী এবং হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সিনিয়র ডিরেক্টর রিয়ার অ্যাডমিরাল ইলিন লবচার ওয়াশিংটন ডিসি-তে বাংলাদেশ দূতাবাসে শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এই বৈঠকে সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশ-মার্কিন সহযোগিতা, র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন, ইউক্রেন যুদ্ধ এবং বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরীরকে ফেরত পাঠানোসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
Comments