ঢাকা-যশোর যোগাযোগ

পদ্মা ও মধুমতী সেতু চালু হলেও শিগগির আসছে না সুফল

কালনা সেতু। ছবি: স্টার

পদ্মা ও মধুমতী সেতু চালু হলেও ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে যশোরের বেনাপোল পর্যন্ত ১২৯ কিলোমিটার সড়কে যে পরিমাণ যান চলাচল করবে, তার চাপ নেওয়ার মতো পর্যাপ্ত সক্ষমতা সড়কটির নেই। ফলে সড়কপথে যোগাযোগব্যবস্থার সর্বোচ্চ সুফল এখনই পাওয়া যাবে না।

২ লেনের ভাঙ্গা-বেনাপোল সড়ককে ৪ লেনের মহাসড়কে রূপান্তরিত করার জন্য একটি পরিকল্পনা অনেক আগেই তৈরি করা হয়েছিল। তবে অর্থায়নসহ কিছু অনিশ্চয়তার কারণে এ প্রকল্পে অগ্রগতি সামান্য বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর ২টি পৃথক উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) তৈরি করেছে। একটি জমি অধিগ্রহণ ও ইউটিলিটি লাইন স্থানান্তরের জন্য এবং অপরটি ভৌত কাজের জন্য। এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫ হাজার ২৮৬ কোটি টাকা (ডলারপ্রতি ৮৯ টাকা হিসাবে)।

তবে প্রকল্পগুলো কবে অনুমোদন পাবে এবং কবে কাজ শুরু হবে, তা এখনো অনিশ্চিত। কারণ প্রকল্পটির চূড়ান্ত অনুমোদন পেতে একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে।

সংশ্লিষ্ট নথির তথ্য অনুযায়ী, এ বছর প্রকল্পের অনুমোদন পেলেও ভূমি অধিগ্রহণে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত সময় লাগবে এবং মূল প্রকল্পের কাজ ২০২৭ সাল পর্যন্ত চলবে।

চলমান এ পরিস্থিতিতে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের জন্য সড়ক যোগাযোগ ও আন্তঃসীমান্ত সংযোগ মসৃণ করা এখনই সম্ভব হবে না।

পরিবহন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, 'যথাযথ পরিকল্পনা নিয়ে কিছু করার অভ্যাস আমাদের নেই। সেই সামর্থ্যও আমাদের নেই। বিষয়টি এখানে আবারও প্রকাশ পেল।'

এ সড়ক কেন গুরুত্বপূর্ণ

গত জুনে পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে সরাসরি সংযোগ সৃষ্টি হয়। দীর্ঘতম এ সেতুর কারণে রাজধানীর সঙ্গে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে যাত্রার সময় উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এ সেতুটি এশিয়ান হাইওয়ে-১ প্রকল্পের অন্যতম মূল উপাংশ, যা এশিয়ার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াবে এবং এই অঞ্চলে বাংলাদেশের অবস্থান আরও উন্নত করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এএইচ-১ তামাবিল-সিলেট-ঢাকা-নড়াইল-যশোর হয়ে মেঘালয়কে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে সংযুক্ত করবে। এ সংযোগ স্থাপনে দুটি পয়েন্ট অনুপস্থিত ছিল। যার মধ্যে একটি হচ্ছে পদ্মা সেতু এবং অপরটি কালনা সেতু, যা নড়াইলে মধুমতী সেতু নামে পরিচিত।

আগামী সোমবার মধুমতী সেতু উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।

ঢাকা থেকে সিলেট এবং সিলেট থেকে তামাবিল পর্যন্ত ২ লেনের মহাসড়ককে ৪ লেনে রূপান্তরিত করতে সরকার ইতোমধ্যে ২টি প্রকল্প হাতে নিয়েছে।

ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক সম্প্রসারণ এ বছর এবং সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের সম্প্রসারণ শুরু হবে আগামী বছরের শুরুতে। অন্যদিকে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত সড়কটি ইতোমধ্যে এক্সপ্রেসওয়েতে রূপান্তর করা হয়েছে।

তবে ভাঙ্গা থেকে যশোর হয়ে বেনাপোল যাওয়ার রাস্তাটি ২ লেনের মহাসড়ক। পথিমধ্যে নড়াইলের মধুমতী নদীর কালনা পয়েন্টে ফেরি টার্মিনাল রয়েছে।

তাই বেনাপোল, যশোর, ঝিনাইদহসহ সাতক্ষীরাগামী অনেক যানবাহন ফেরি রুট এড়িয়ে ভাঙ্গা-ফরিদপুর-মাগুরা সড়ক ধরে এবং কিছু যানবাহন ফেরি ব্যবহার করে।

কালনা পয়েন্টে মধুমতী সেতু চালু হলে ভাঙ্গা ও বেনাপোলের মধ্যে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপন হবে। এর ফলে সীমান্ত বাণিজ্যসহ যান চলাচলের ক্ষেত্রে একটি বড় পরিবর্তন আসবে।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, বেশিরভাগ যানবাহনই ভাঙ্গা-নড়াইল-যশোর-বেনাপোল সড়ক ব্যবহার করবে।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, ঢাকা থেকে গাবতলী-পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া-মাগুরা হয়ে যশোরের দূরত্ব ২১৮ কিলোমিটার। আর যাত্রাবাড়ী-পদ্মা সেতু-মধুমতী সেতু হয়ে গেলে এর দূরত্ব হবে ১৬০ কিলোমিটার।

সংক্ষেপিত: ইংরেজিতে পুরো প্রতিবেদনটি পড়তে ক্লিক করুন Bhanga-Benapole highway: Smoother link not so soon

Comments

The Daily Star  | English

Admin getting even heavier at the top

After the interim government took over, the number of officials in the upper echelon of the civil administration has become over three times the posts.

7h ago