‘আনসাররা আমাকে ধরে রাখে, ইউএনও স্যার আমাকে পেটান’

বগুড়া সদর উপজেলা পরিষদ। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়া সদর উপজেলা পরিষদের প্রকৌশল অধিদপ্তরের নৈশ প্রহরী আলমগীর হোসেনকে (৪৫) পেটানোর অভিযোগ উঠেছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সমর কুমার পালের বিরুদ্ধে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সের দ্বিতীয় তলায় এ ঘটনা ঘটে।

আলমগীর হোসেনের গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলায়।

আলমগীরের জামাতা মাসুদ রানা দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, আলমগীরকে নির্দয়ভাবে পেটানোর পর উপজেলা পরিষদ মাঠে অচেতন অবস্থায় ফেলে রাখা হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

ইউএনও সমর কুমার পাল। ছবি: সংগৃহীত

ভুক্তভোগী আলমগীর হোসেন হাসপাতালে সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, 'আমার স্ত্রী আমার সঙ্গে বগুড়ায় থাকতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আমি রাজি হইনি। তাই তিনি উপজেলা পরিষদের প্রকৌশলী ও ইউএনও স্যারের কাছে অভিযোগ করেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলা পরিষদে গেলে ইউএনও আনসারদের নির্দেশ দেন আমাকে তার কাছে নিয়ে যেতে।'

'তার নির্দেশে দুই আনসার আমার হাত ধরে দ্বিতীয় তলায় ইউএনও কার্যালয়ে নিয়ে যায়। সেখানে আরেকটি অন্ধকার ঘর ছিল। ওই ঘরে নিয়ে আমাকে বাঁশের লাঠি দিয়ে ইউএনও স্যার নির্দয়ভাবে পেটান।'

আলমগীর বলেন, 'আমি তাকে না পেটাতে অনুরোধ করলেও, অচেতন না হওয়া পর্যন্ত তিনি আমাকে পেটাতে থাকেন।'

যোগাযোগ করা হলে ইউএনও সমর কুমার পাল অভিযোগ অস্বীকার করে স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, 'মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। বুধবার রাতে উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সের সিঁড়ির নিচে বেঞ্চে আলমগীরের স্ত্রীকে শুয়ে থাকতে দেখি। আলমগীর তার স্ত্রীকে সেখানে রেখে চলে যায়। যখন জানতে পারি তার মেয়ের বাড়ি পাশের শাজাহানপুর উপজেলায়, তখন তার স্ত্রীকে সেখানে পাঠাই।'

'পরে বৃহস্পতিবার বিকেলে আলমগীর উপজেলা কমপ্লেক্সে ফিরলে আমি তাকে চলে যেতে বলি এবং তার স্ত্রীর সঙ্গে সমস্যা মিটিয়ে দেই। আমি তাকে মারধর করিনি,' বলেন ইউএনও।

এ বিষয়ে বগুড়ার জেলা প্রশাসক মো. জিয়াউল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঘটনা তদন্তে এক সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সালাউদ্দিন আহমেদ বিষয়টি তদন্ত করছেন। প্রতিবেদন পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবো।'

ইউএনও সমর কুমারের বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, জানতে চাইলে আলমগীরের জামাতা মাসুদ রানা বলেন, 'আমার শ্বশুর উপজেলা পরিষদের কর্মচারী হওয়ায়, এটা তার ওপর নির্ভর করছে।'

Comments

The Daily Star  | English

JnU students vow to stay on streets until demands met

Jagannath University (JnU) students tonight declared that they would not leave the streets until their three-point demand is fulfilled

6h ago