‘বাংলাদেশ রাশিয়া থেকে সরাসরি তেল কিনতে পারবে না, এটা ঠিক নয়’

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: পিআইডি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে ৪ দিনের রাষ্ট্রীয় সফরের প্রথম দিনে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে মিয়ানমার ও জ্বালানি নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেছেন।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্ধৃত করে আজ সোমবার সাংবাদিকদের বলেছেন, 'বাংলাদেশে রপ্তানির জন্য উদ্বৃত্ত জ্বালানি তেল থাকলে এবং শর্ত ও দাম অনুকূলে থাকলে ঢাকা ভারত থেকে তেল কেনার বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে।'

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এ বিষয়ে একমত হয়েছেন বলে জানান তিনি।

পররাষ্ট্রসচিব জানান, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে বাংলাদেশ ও ভারতের একসঙ্গে কাজ করা উচিত বলে প্রধানমন্ত্রী ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একমত হয়েছেন।

তিনি বলেন, 'পেট্রোল, ডিজেল ও গ্যাসের দাম বাড়ায় অনেক দেশের জন্য সমস্যা তৈরি হয়েছে। যদি ভারতের উদ্বৃত্ত থাকে এবং তাদের শর্ত ও দামের সঙ্গে যদি আমাদের মিলে যায়, তবে আমরা বর্তমান সংকট কাটিয়ে উঠতে পারব।'

মাসুদ বিন মোমেন বলেন, 'ভারত থেকে রাশিয়ার তেল আমদানির বিষয়টি আগামীকাল আলোচনা করা হবে।'

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'বাংলাদেশ রাশিয়া থেকে সরাসরি তেল কিনতে পারবে না, এটা ঠিক নয়। আমরা এখন রাশিয়ান তেলের প্রযুক্তিগত বিষয়গুলো যাচাই করছি।'

'ভারত-বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে বৈঠকের পর কুশিয়ারা নদীর পানি বণ্টনসহ ৭টি সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি সই হওয়ার কথা রয়েছে', বলেন তিনি।

আজ ভারতের স্থানীয় সময় সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে নয়াদিল্লির পালাম বিমানবন্দরে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে তাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

ভারত সফরের প্রথম দিন আজ বিকেলে মৌর্য হোটেলে প্রধানমন্ত্রীর স্যুইটের সম্মেলন কক্ষে তার সঙ্গে দেখা করেছেন  দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।

পরে আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানি একই স্থানে শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এরপর সন্ধ্যায় ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোহাম্মদ ইমরান ও জাকিয়া হাসনাত ইমরান আয়োজিত এক রিসেপশন ডিনারে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী।

সফরের দ্বিতীয় দিনে ৬ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হায়দরাবাদ হাউসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক ও একান্ত আলোচনা করবেন।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে অভ্যর্থনা জানাবেন এবং তাকে আনুষ্ঠানিক গার্ড অব অনার প্রদান করা হবে।

দ্বিপাক্ষিক আলোচনার পর ২ প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং পরে একটি প্রেস বিবৃতি দেওয়া হবে। শেখ হাসিনা পরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক তার সম্মানে আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজনে যোগ দেবেন। একইদিন শেখ হাসিনা ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ও উপ-রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখারের সঙ্গে পৃথক সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এরপর তিনি রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।

পরের দিন ৭ সেপ্টেম্বর ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের উন্নয়ন মন্ত্রী জি কিষান রেড্ডি ও নোবেল বিজয়ী কৈলাশ সত্যার্থী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পৃথকভাবে সাক্ষাৎ করবেন।

একইদিন ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর দেখা করার কথা রয়েছে।

৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী নেতাদের সভায় এবং ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় শহীদ বা গুরুতর আহত ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর অফিসারদের বংশধরদের 'মুজিব বৃত্তি' প্রদানের অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী ৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় ফেরার আগে রাজস্থানের খাজা গরিব নওয়াজ দরগাহ শরীফ, আজমির (আজমির শরীফ দরগাহ) জিয়ারত করবেন।

Comments

The Daily Star  | English
The Indian media and Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

8h ago