২৬ মাস বেতন বন্ধ: নর্দান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তালা

ছবি: সংগৃহীত

রংপুরে বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে নর্দান প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মূল ফটকে তালা দিয়েছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাদের অভিযোগ, বিভিন্ন টালবাহানায় দীর্ঘ ২৬ মাস ধরে বেতন-ভাতা বন্ধ রেখেছে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকরা। এতে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।

আজ বুধবার দুপুর ১২টায় দিকে নগরীর বুড়িরহাট রোডে নর্দান প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে তালা দেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

এর আগে সমাবেশ থেকে হাসপাতাল পরিচালকদের অনিয়ম-দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার কারণে এই সেবাপ্রতিষ্ঠানটিতে এখন অচল অবস্থা বিরাজ করছে বলে অভিযোগ করেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

সমাবেশে তারা অভিযোগ করেন, ২০২০ সাল থেকে চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত হাসপাতালের সব নার্স, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট, কর্মকর্তা ও কর্মচারী কেউই কোনো বেতন-ভাতা পায়নি। বিভিন্ন সময়ে পরিচালকদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করার পর বকেয়া বেতন-ভাতা প্রদানের আশ্বাস দেন। কিন্তু বিভিন্ন টালবাহানা করে কালক্ষেপণ করতে থাকেন তারা। সবশেষ ঈদুল আযহার আগে গত ২৭ জুন বেতন প্রদানের অঙ্গীকার করার পরও পরিচালকরা আর যোগাযোগ করেনি। এখন তাদের অনেকেই মোবাইল ফোন বন্ধ রেখেছেন এবং কারো সঙ্গে যোগাযোগও করছেন না।

প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- নর্দান প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ, সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা আব্বাস আলী, তৈয়বুল ইসলাম, সিনিয়র নার্স আঞ্জুয়ারা বেগম, ওয়ার্ড মাস্টার ইনচার্জ হাবিবুর রহমান মিলন প্রমুখ।

কর্মচারী-কর্মকর্তারা বলেন, বর্তমানে আমাদের সব স্টাফদের বকেয়া বেতন ৫ কোটি টাকার উপরে দাঁড়িয়েছে। দীর্ঘ ২৬ মাস ধরে আমরা বেতন-ভাতা পাচ্ছি না। পরিচালকরাও এখন আর হাসপাতালে আসেন না। আমরা আর্থিক অনটনে দিনানিপাত করছি। কলেজ ও হাসপাতাল মিলে প্রায় পৌনে ৩০০ জন স্টাফ ছিল। দীর্ঘ দিন ধরে বেতন না দিয়ে পরিচালকরা বিনা কারণে অনেককে ছাঁটাই করেছে। অনেকেই আবার স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়েও দিয়েছেন। এখন প্রায় দেড়শ জন স্টাফ আছে।

এখন কলেজে শিক্ষার্থী নেই। সবাই মাইগ্রেশন করে অন্যত্র চলে গেছে। হাসপাতালের কার্যক্রমও বন্ধ রয়েছে। এভাবে যদি মাসের পর মাস আমরা বেতন না পাই, তাহলে আমরা স্ত্রী-সন্তান, সংসার চালাবো কি করে? সরকারকে বলছি আমাদেরকে বাঁচান, আমাদের দিকে একটু নজর দিন।

অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নর্দান প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান বেগম রোকেয়া লাভলী বলেন, 'আমি কী জমিজমা বিক্রি করে কর্মচারীদের বেতন দেব? হাসপাতাল বন্ধ আছে, এখন শিক্ষার্থী ভর্তিও বন্ধ। কোথায় থেকে তাদের টাকা দেবো। কর্মচারীরা বেশি বাড়াবাড়ি করছে। তাদের অনেকেই আমরা এক বছর আগে ছাঁটাই করেছি। কিন্তু তারা এখন পর্যন্ত নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে আমাদেরকে জিম্মি করার চেষ্টা করছে। আমি তো কর্মচারীদের বিরুদ্ধে মামলা করে দেবো। এটা কি মগের মুল্লুক। আপনারা আমাদের বিরুদ্ধে যা ইচ্ছে লিখতে থাকেন। এখন কিছু বলব না।'

হাসপাতালের পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান বলেন, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনের ঝামেলা নিয়ে আমার কিছু জানা নেই। আমি তো নিজেও ৫-৬ মাসের বেতন পাবো। এখন এটা হাসপাতালের মালিকপক্ষ দেখবেন।

Comments

The Daily Star  | English

How a 'Dervish Baba' conjured crores from a retired nurse

Want to earn easy money? Just find someone who thinks their partner is cheating on them, then claim to be a “Genie King” or “Dervish Baba,” and offer solutions to “relationship problems” for a fee

4h ago