একচেটিয়া বাস ভাড়া বৃদ্ধি যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রত্যাখান
আন্তর্জাতিক ক্রেতা-ভোক্তা আইন লঙ্ঘন করে যাত্রী প্রতিনিধি ছাড়া বিআরটিএ ও পরিবহন মালিক সমিতির ঘোষিত বাড়তি বাস ভাড়া প্রত্যাহার করে সঠিক ব্যয় বিশ্লেষণ করে নতুনভাবে বাস ভাড়া নির্ধারণের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
আজ রোববার সকালে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরীর বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, 'একচেটিয়াভাবে বাড়তি তেলের দাম প্রত্যাহারের দাবিতে যাত্রী কল্যাণ সমিতিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন যখন মাঠে আন্দোলনরত, ঠিক তখনই জ্বালানির মূল্য প্রত্যাহারের দাবি না তুলে বাস মালিকেরা সরকারের সঙ্গে মিলেমিশে বাস ভাড়া বাড়াতে ব্যস্ত।'
মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, 'গত নভেম্বরে জ্বালানি তেলের দাম লিটার প্রতি ১৫ টাকা বাড়ানোর সময় বাস ভাড়া ৩৫ শতাংশ হারে বাড়ানো হয়েছিল। এর ৯ মাসের মাথায় আবারো জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সঠিক ব্যয় বিশ্লেষণ ছাড়াই এক লাফে বাস ভাড়া আবারো ২২ শতাংশ হারে বাড়ানো হয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, 'প্রতিটি পুরনো লক্কড়-ঝক্কড় বাসকে শো-রুম থেকে নামানো নতুন বাসের দাম, ব্যাংক সুদ ও অন্যান্য নতুন বাসের সুযোগ-সুবিধার হিসাব ধরে ব্যয় বিশ্লেষণ করা হলেও সিটি সার্ভিসে ৯৮ শতাংশ বাস-মিনিবাস চলাচলের অযোগ্য। আন্তঃজেলা দূরপাল্লায় ৪৮ শতাংশ বাস ২০ বছরের বেশি সময় ধরে চলছে। এসব বাস অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।'
'পুরনো এসব বাসের যাত্রী সেবার মান তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'গতকালের বাস ভাড়া বৃদ্ধির সভায় এসব বাসকে চকচকে নতুন বাস হিসেবে ব্যয় বিশ্লেষণ করায় যাত্রীস্বার্থ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।'
তিনি নতুন ও পুরাতন বাসের আলাদা আলাদা ব্যয় বিশ্লেষণ ও আলাদা আলাদা ভাড়া নির্ধারণের দাবি জানান।
সমিতির মহাসচিবের মতে, 'সরকার বাস মালিকদের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ভাড়া নির্ধারণ করলেও কোনো বাসে সরকার নির্ধারিত ভাড়া কার্যকর নেই। সরকার নির্ধারিত ভাড়ার বেশ কয়েকগুণ বাড়তি ভাড়া বাসে বাসে আদায় হলেও সরকার কার্যত এসব বাসের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারে না।'
'সিটি সার্ভিসে সরকার কিলোমিটার প্রতি ভাড়া নির্ধারণ করলেও বাসে বাসে ওয়েবিলে যাত্রীর মাথা গুণে গুণে ভাড়া আদায় করা হয়। ঢাকা মহানগরীর কথিত সিটিং সার্ভিসে স্বল্প দূরত্বে যাতায়াত করলেও সর্বশেষ গন্তব্য পর্যন্ত ভাড়া পরিশোধ করতে হয়।'
'ঈদ ও পূজা-পার্বণে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্যে দিশেহারা হয়ে পড়েন যাত্রী সাধারণ। এমন পরিস্থিতি তুলে ধরে দেশের ১৬ কোটি যাত্রী সাধারণের দুর্ভোগের কথা বলতে যাত্রী কল্যাণ সমিতি বাস ভাড়া নির্ধারণের সভায় প্রতিনিধিত্ব করতে বার বার আবেদন নিবেদন করলেও সরকার বাস মালিকদের বিশেষ সুবিধা দিতে যাত্রী প্রতিনিধি ছাড়া বার বার বাস ভাড়া নির্ধারণ করে থাকে।'
দ্রুত বাড়তি বাস ভাড়া প্রত্যাহার ও সঠিক ব্যয় বিশ্লেষণ করে নতুন ভাড়া নির্ধারণের দাবি জানান তিনি।
Comments