ডিকশির বিলে পদ্মের হাতছানি

ডিকশির বিল
ডিকশির বিল। ছবি: আহমেদ হুমায়ুন কবির তপু/স্টার

পাবনার চাটমোহর উপজেলার ডিকশির বিল জেলার অন্যতম প্রধান বিল অঞ্চল। প্রতি বর্ষায় বিল কানায় কানায় পানিতে পরিপূর্ণ থাকে। পানি নেমে যাওয়ার পর তা হয়ে ওঠে ফসলের বিস্তৃর্ণ মাঠ।

এ বছর এখনো যথেষ্ট পানি না আসায় বিস্তৃত এ বিল কানায় কানায় পানিতে পরিপূর্ণ হতে পারেনি। ১৫ গ্রাম ঘিরে সুবিস্তৃত বিলে প্রকৃতির আপন খেয়ালে বেড়ে ওঠছে পদ্ম-শাপলা-শালুক।

ডিকশির বিল
ছবি: আহমেদ হুমায়ুন কবির তপু/স্টার

ফুটন্ত পদ্ম, বাড়ন্ত শাপলা আর শালুকের সমারোহে এক নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের মেলা বসেছে ডিকশির বিলে। প্রকৃতির এ অপার সৌন্দর্য উপভোগ করতে দূরদূরান্ত থেকে প্রতিদিন আসছেন সৌন্দর্য পিপাসুরা। বিলকে ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা।

স্থানীয়রা দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন, প্রতি বছর বর্ষার এ সময় বিলে ১৫ ফুট থেকে ২৫ ফুট পানি থাকে। বিল পাড়ের মানুষ রাস্তা থেকেই নৌকায় উঠেন।

এ বছরের চিত্র ভিন্ন। বিলের মাঝখানে পানি থাকলেও তা অন্যান্য বছরের মতো নয়।

ডিকশির বিল
ছবি: আহমেদ হুমায়ুন কবির তপু/স্টার

ডিকশির বিল পাড়ের বাসিন্দা ও চাটমোহরে ফইলজানা ইউনিয়নের সোহাগপুর গ্রামের মাঝি মোহাম্মদ উদ্দিন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ বছর বিলের বিভিন্ন স্থানে ৬-১০ ফুট উচ্চতায় পানি আছে এবং পানি এখনো বাড়ছে।'

তিনি জানান, পানি যতটুকুই থাকুক না কেন, বিল জুড়ে শোভা পাচ্ছে পদ্ম-শাপলা-শালুক। স্থানীয়রা এ বিলটিকে 'পদ্ম বিল' বলে ডাকছেন।

মোহাম্মদ উদ্দিন বলেন, 'প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেক মানুষ প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে পদ্ম বিলে আসছেন। নৌকায় বিল ঘুরে দেখছেন।'

ডিকশির বিল
ছবি: আহমেদ হুমায়ুন কবির তপু/স্টার

বিলের পাড়ে আসার রাস্তার অবস্থা ভালো না হওয়ায় অনেকেই ইচ্ছা থাকলেও তা পারছেন বলেও জানান তিনি।

পাবনা থেকে বিলে ঘুরতে আসা কলেজশিক্ষক রফিকুল ইসলাম সুইট ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বন্ধুদের কাছে গল্প শুনে পদ্ম বিল দেখতে এলাম। চোখ জুড়িয়ে গেছে।'

'শহর থেকে মাত্র ৩০-৩৫ কিলোমিটার দূরে এমন প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে পরিবারের সবাইকে নিয়ে আসতে পারলে আরও ভালো লাগত। দুর্গম গ্রাম হওয়ায় এবং যাতায়াতের সুব্যবস্থা না থাকায় পরিবারের সবাইকে নিয়ে আসা সম্ভব হয়নি,' যোগ করেন তিনি।

যাতায়াতের রাস্তা উন্নত হলে এবং ভ্রমণের সুব্যবস্থা থাকলে বিলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে এখানে পরিবার-পরিজন নিয়ে আরও অনেকেই আসতেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ডিকশির বিল
ছবি: আহমেদ হুমায়ুন কবির তপু/স্টার

ফইলজানা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'চাটমোহর উপজেলার ফইলজানা ও পার্শ্বডাঙ্গা ইউনিয়নের ১৫ গ্রাম জুড়ে ডিকশির বিলটি পাবনার অন্যতম প্রধান বিলাঞ্চল।'

তিনি আরও বলেন, 'বিল পাড়ের মানুষ শুকনো মৌসুমে ফসলের আবাদ আর বর্ষায় মাছ ধরে জীবন বাঁচান। সৌন্দর্য উপভোগ করতে বিলে নৌকা ভ্রমণ বেশ আনন্দের বিষয়।'

বছরে ৩-৪ মাস ডিকশির বিলে পানি থাকে উল্লেখ করে তিনি জানান, সে সময় বিলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে কাজে লাগিয়ে সেখানে পর্যটনের ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব।

এ বিষয়ে তিনি সরকারের সহায়তা কামনা করেন।

Comments

The Daily Star  | English

University student unions: Student bodies split over polls timing

With Dhaka and Jahangirnagar universities gearing up for student union elections, the student bodies are now sharply divided over when the polls should be held.

8h ago