ভোটের আগের রাতে পোলিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা পরিবর্তন ঘিরে বিতর্ক

বড়াইগ্রাম উপজেলায় কমপক্ষে চারজন পোলিং অফিসার পরিবর্তন করা হয়েছে। অন্যদিকে, গুরুদাসপুর উপজেলায় একজন পোলিং অফিসার ও একজন সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা পরিবর্তন করা হয়েছে।
মানচিত্রে নাটোর
মানচিত্রে নাটোর। স্টার ফাইল ফটো

নাটোরে ভোটের আগের রাতে পোলিং অফিসার ও সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা পরিবর্তন ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বড়াইগ্রাম উপজেলায় কমপক্ষে চারজন পোলিং অফিসার পরিবর্তন করা হয়েছে। অন্যদিকে, গুরুদাসপুর উপজেলায় একজন পোলিং অফিসার ও একজন সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা পরিবর্তন করা হয়েছে। সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

সোমবার রাত ৯টার দিকে বড়াইগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ১০-১৫ জন সেখানে ভিড় জমিয়েছেন। জানতে চাইলে তারা পোলিং কর্মকর্তা পরিবর্তনের কথা বলে আশঙ্কা জানান।

যোগাযোগ করা হলে বড়াইগ্রাম উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা কার্যালয়ের উপ-প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আব্দুল মতিন বলেন, 'বেশকিছু পোলিং অফিসার ফোন বন্ধ রেখেছেন। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। সে কারণে তাদের পরিবর্তন করে নতুন পোলিং অফিসার নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। কিছুক্ষণ আগেই চারজনের নাম পরিবর্তন করে সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কাছে পাঠানো হয়েছে।'

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বড়াইগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা লায়লা জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, 'কিছু নাম ওভারল্যাপিং হয়েছিল সেসব পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছে।'

কিন্তু মোট কত জনের নাম পরিবর্তন হয়েছে সেটি নিশ্চিত করতে পারেননি তিনি। তবে সংখ্যাটি চারের কম নয় বলে তিনি নিশ্চিত করেন।

এ বিষয়ে বড়াইগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান পদে আনারস মার্কা প্রতীকের প্রার্থী মো. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, 'ভোটের আগের রাতে পোলিং অফিসার পরিবর্তন কিছুটা সন্দেহের বিষয়। তবে আমরা বিশ্বাস রাখছি সুষ্ঠু এবং দুর্নীতিমুক্ত নির্বাচন হবে।'

এই উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ঘোড়া মার্কা প্রতীকের প্রার্থী মো. আব্দুল কুদ্দুস বলেন, 'কেন ভোটের আগের রাতে পোলিং অফিসার পরিবর্তন হলো সেটা নিয়ে এখনই কোনো মন্তব্য করতে চাই না৷ তবে আমার বিশ্বাস নির্বাচন সুষ্ঠু হবে।'

ভোটের আগের রাতে পোলিং অফিসার পরিবর্তনের বিষয়ে গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার সালমা আক্তার বলেন, 'একজন নারী পোলিং অফিসারের ৮ মাস বয়সী শিশু অসুস্থ এবং একজন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারের নাম দুবার তালিকায় ওঠায় আরেকজন নতুন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার নেওয়া হয়েছে। তবে সেটা মঙ্গলবার দিনের আলোতে সকলের সামনেই ঠিক হয়েছে।'

এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আরিফ হোসেন বলেন, 'সব নির্বাচনেই এভাবে জরুরি কিছু পোলিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার বা প্রিজাইডিং অফিসার পরিবর্তন করা হয়। এটা নতুন কিছু নয়। আর এতে তেমন কোনো সমস্যাও নাই। একজন পোলিং অফিসার গর্ভবতী ছিলেন তাই তাকে বাদ দেয়া হয়েছে।'

তবে কোন উপজেলায় কতজনকে পরিবর্তন করা হয়েছে এ বিষয়ে তিনি সঠিক তথ্য দিতে পারেননি।

জানতে চাইলে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) নাটোর জেলা কমিটির নির্বাহী সদস্য গোলাম রাব্বানী বলেন, 'ভোটের আগের রাতে এভাবে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা পরিবর্তন করা উচিত নয়। এতে ভোটের বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট হয়। এমন খবর শুনেই সাধারণ ভোটারদের মনে সবার আগে জালিয়াতি চেষ্টার চিত্র ভেসে উঠবে। কেউ যদি নির্বাচনের দায়িত্ব পালন না করে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনে ব্যবস্থা নিতে হবে। নাম পরিবর্তন কোনো সমাধান হতে পারে না।'

রিটার্নিং অফিসার বা সহকারী রিটার্নিং অফিসারদের এসব বিষয়ে আরও সতর্ক হওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।

Comments