পাকিস্তানে সাড়া জাগানো-অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হয়েছে: সিইসি
পাকিস্তানে সাড়া জাগানো-অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হয়েছে নির্বাচন হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।
আজ মঙ্গলবার সকালে নির্বাচন ভবনে রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসির নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির দায়িত্ব গ্রহণ ও বিদায়ী কমিটির সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
স্থানীয় সরকার নির্বাচন পরীক্ষামূলকভাবে স্ট্যাগারিং পদ্ধতিতে করা হচ্ছে জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, 'একই জেলায় তিনটি পর্বে নির্বাচন করা; এটা হয়তো মৌলিক সংস্কার নয় কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক সংস্কার। বিদ্যমান আইন বজায় রেখেই কমিশন এটা উদ্ভাবন করেছে; একটা জেলার মধ্যে আমি যদি তিনটি পর্বে নির্বাচন করি, যেটাকে ভারতে স্ট্যাগার্ড বলে, জাতীয় নির্বাচনটা স্ট্যাগারিং করে হয়—তিন মাস ধরে হয়।
'এখানে যদি ওইভাবে নির্বাচনটা করা হয় তিনটি পর্বে, তাহলে কিন্তু দিনাজপুর থেকে চট্টগ্রামে পুলিশ আসার প্রয়োজন হবে না, একই দিনে। আমি আশা করি, এটা নির্বাচনটাকে অনেক সহজ করে দেবে। নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার প্রয়োজনীয়তা আছে, এটা অনস্বীকার্য। একই জেলার মধ্যে হওয়ার কারণে প্রশাসনের জন্য ডেপ্লয়মেন্ট ও মোবিলাইজেশন সহজ হয়ে যাবে, খরচ অনেক কমে যাবে,' যোগ করেন তিনি।
হাবিবুল আউয়াল আরও বলেন, 'আমি খরচটা বাদ দিলাম, খরচ নিয়ে আমি মাথা ঘামাই না। আমার কাছে যেটা প্রয়োজন, এনফোর্সমেন্ট। সার্বিক, ভোটাররা আসছেন, বিশৃঙ্খলা হচ্ছে কি না এবং কোনো রকম সহিংসতার সম্ভাবনা আছে কি না, যদি থেকে থাকে সেটাকে রোহিত করা। এটা অনেক সহজ হবে এবার এক উপজেলায় তিনটি দিন গ্যাপ দিয়ে নির্বাচন হবে।'
ভবিষ্যতে পুরো দেশে স্ট্যাগারিং পদ্ধতিতে নির্বাচন হতে পারে বলেও এ সময় জানান তিনি।
আরেক প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, 'আমি জেনেছি এবার নির্বাচনে কোনো দলীয় প্রতীক থাকবে না। এটার ভালো দিক আছে। এটা রাষ্ট্রীয় নির্বাচন নয়। এলাকাভিত্তিক নির্বাচন। এখানে মানুষ এলাকার লোককে নির্বাচিত করবেন, পুরো জাতির জন্য নয়। স্থানীয় সরকার তার নির্ধারিত এলাকা জনশাসন পরিচালনা করে থাকে। তার সীমিত ক্ষমতা থাকে। সেখানে বিভিন্ন দল, আমার মনে হয়, এখানে সুযোগটা থাকবে।'
তিনি আরও বলেন, 'আমি খুব বেশি বলতে চাই না, হয়তো পাকিস্তানের দৃষ্টান্তটা এসে যেতে পারে। সেখানেও একটা নির্বাচন, এটা বেশ সাড়া জাগানো নির্বাচন হয়েছে। আমি বিশ্লেষণে যাচ্ছি না। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হয়েছে কোনো রকম প্রতীক ছাড়া বা বিভিন্ন প্রতীক নিয়ে।'
সংসদ নির্বাচনে কম ভোটার উপস্থিতি উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমরা সব সময় বলেছি, নির্বাচনটা অংশগ্রহণমূলক হোক। জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে শেষ ভাষণেও বলেছিলাম, বিএনপির জন্য সময় এখনো ফুরিয়ে যায়নি। আমরা মুখে বলেছি, টেলিফোনে কথা বলেছি, ডিও লেটার দিয়ে আহ্বান জানিয়েছি, উনারা আহ্বানে সাড়া দেননি। আমরা খুবই খুশি হতাম; নির্দ্বিধায় বলেছি, যদি নির্বাচনটা আরও বেশি অংশগ্রহণমূলক হতো, তাহলে ভোটার উপস্থিতি নিঃসন্দেহে আরও বেশি হতো।
'বড় বড় রাজনৈতিক দল যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে নির্বাচন অশুদ্ধ হবে না। নির্বাচন অবৈধ হবে না কিন্তু নির্বাচনের যে সর্বজনীনতা সেটা খর্ব হতে পারে, গ্রহণযোগ্যতা খর্ব হতে পারে, নির্বাচনের যে ন্যায্যতা সেটাও খর্ব হতে পারে কিন্তু লিগ্যালিটি নিয়ে হয়তো প্রশ্ন হবে না। লিগ্যালিটির সঙ্গে লেজিটিমেটির যে সম্পর্ক আছে সেটাকে টোটালি উড়িয়ে দেওয়া যায় না। আমরা যদি এর মধ্যে সঠিক সমন্বয়টা ঘটাতে পারি, তাহলে সেটা আরও সুন্দর হয়ে ওঠে,' বলেন তিনি।
হাবিবুল আউয়াল বলেন, 'বিশিষ্টজনরা; যারা স্থানীয়ভাবে জনপ্রিয়—দল না; যেখানে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হবে, সেই স্থানে যারা জনগণকে সত্যিকারের ভালোবাসেন, জনগণের সঙ্গে পরিচিতি আছে, তারা জনগণকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচন করুক। তিনি যে দলেই হোক, তারা অংশগ্রহণ করুক এবং জনগণের কাছে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি তারা যেন পরিপূর্ণ করতে পারে নির্বাচিত হওয়ার পর।'
নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি প্রসঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, 'স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে আমার যে অভিজ্ঞতা, আমারটা ভুল হতে পারে—সেখানে আমি সব সময় লক্ষ করেছি, উপস্থিতি অনেক বেশি হয়। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে মানুষের সঙ্গে মানুষের বা ব্যক্তির সঙ্গে ব্যক্তির যে সম্পৃক্ততা, সেটা অনেক বেশি নিবিড় ও গভীর।
'যার কারণে যিনি প্রার্থী, তার সঙ্গে নৈকট্য অনেক বেশি থাকে। ফলে ভোটাররা অনেক বেশি আগ্রহী হয়ে থাকেন ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট প্রদানের জন্য। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যখন সব দল অংশগ্রহণ করে এবং প্রার্থীরা ব্যাপকভাবে নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করে থাকে, তখন উপস্থিতিটা আরও বেশি হয়,' বলেন তিনি।
Comments