আচরণবিধি ভাঙার অভিযোগ তোলার ১০ মিনিটের মধ্যে নিজেই ভাঙলেন তৈমুর
তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব তৈমুর আলম খন্দকার ঢাকার কয়েকটি আসনে তার প্রার্থীদের সঙ্গে নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
প্রথম দফায় বেলা ১২টার দিকে ঢাকা-৫ আসনে তৃণমূলের প্রার্থী কে এম আবু হানিফ হৃদয়কে সঙ্গে নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন তিনি। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের অনেক নেতা বিভিন্ন স্থানে নির্বাচনী আচরণবিধি ভাঙছেন। শোডাউন-শোভাযাত্রা করছেন। এ বিষয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে অভিযোগ করবেন বলেও জানান।
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলে এই প্রার্থীকে নিয়ে তিনি কার্যালয় এলাকা ছেড়ে যান।
এর ১০ মিনিটের মাথায় আবার তিনি বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে (রিটার্নিং অফিসার) আসেন। সঙ্গে ছোট একটা মিছিল— সামনে ব্যানার, নেতা-কর্মীদের হাতে ফেস্টুন, যাতে লেখা 'ঢাকা-৮ আসনে তৃণমূল বিএনপির মনোনীত প্রার্থী এম এ ইউসুফকে সোনালী আঁশ মার্কায় ভোট দিয়ে দেশের সার্বিক উন্নয়ন করার সুযোগ দিন।'
মিছিলটি কার্যালয়ের প্রধান ফটক পর্যন্ত এসে শেষ হয়। পরে কয়েকজন নেতা-কর্মীকে সঙ্গে করে তৈমুর আলম আবার রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে যান।
নির্বাচনী আচরণবিধি ভাঙার বিষয়ে জানতে চাইলে তৈমুর আলম খন্দকার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ওই সময় আমরা মাত্র কয়েকজন ছিলাম, এটাকে মিছিল বলা যাবে না। এটা আচরণবিধি লঙ্ঘন না।'
নির্বাচনী আচরণবিধির ৮ (খ) ধারায় বলা হয়েছে, মনোনয়পত্র দাখিলের সময় কোনো প্রকার মিছিল কিংবা শোডাউন করা যাবে না।
এর আগে তৈমুর আলম খন্দকার সাংবাদিকদের বলেন, 'ঢাকার প্রতিটি আসনে আমরা মনোনয়ন দিয়েছি। আমি প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই, যেন তিনি তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আয়োজন করেন। কিন্তু আমরা সরকারি দলের প্রার্থীদের নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের প্রতিযোগিতা দেখতে পাচ্ছি। তারা আচরণবিধি লঙ্ঘন করে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে। অস্ত্র প্রদর্শনের ছবি প্রকাশিত হয়েছে সংবাদপত্রে। এগুলো আমি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠাব। আমরা আশা করব, তিনি যে কমিটমেন্ট করেছেন, তা তিনি রক্ষা করবেন।'
তিনি নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ না করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে কেন অভিযোগ করবেন, সে প্রশ্নের জবাবে তৈমুর আলম বলেন, 'কারণ প্রধানমন্ত্রী এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে এবারের নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। সাংবিধানিক বিধান অনুযায়ী আমরা মনে করি, যারা তার (প্রধানমন্ত্রী) বিরুদ্ধে শ্লোগান দেন, তাদের সুরক্ষা দেওয়ারও দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রীর।'
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকার আসন থেকে বর্তমান বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর বিরুদ্ধে নির্বাচনে অংশ নিতে যাওয়া তৈমুর আলম খন্দকার জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, 'আমরা কোনো ব্যক্তিকে শক্তিশালী মনে করি না। সর্বময় ক্ষমতার মালিক মহান আল্লাহ। এখানে মন্ত্রী কোনো বিষয় না, তিনি ও নারায়ণগঞ্জের জনগণ চাইলে অবশ্যই জিতব।'
সরকারের সঙ্গে আসন ভাগাভাগির বিষয়ে তিনি বলেন, 'এগুলো যারা বলছে, তাদের জিজ্ঞাসা করেন। অথবা কোনো প্রমাণপত্র থাকলে বলতে পারেন।'
Comments